ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৭৬

অতপর ওসমানির সেই ছাদেক কারাগারে!

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২৪  

সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ঘুষকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশনের (বিএনএ)) সিওমেক শাখার সাধারণ সম্পাদক নার্স ইসরাইল আলী সাদেক। নিজ ক্ষমতাবল ও শক্তির ব্যবহার করে মামলার অগ্রিম জামিন নিয়ে এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন সিলেটের চিকিৎসা জগতের এ অপরাধ সম্রাট। তবে আজ (৩ মার্চ) আদালতে এসে আত্মসমর্থন করে জামিন আবেদন করলে তা নাকচ করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। 

 

রোববার (৩ মার্চ) দুপুরে সাদেক আটক হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন।

 

আরও পড়ুন: ওসমানীর সেই সাদেক কোথায়?

 

জানা যায়, গত ৯ জানুয়ারি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘুষ লেনদেনের সময় নগদ টাকাসহ দুই নার্সকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। সুকৌশলে পালিয়ে যায় সাদেক ও তার কয়েকজন সহযোগী। এ  ঘটনায় ওই রাতেই হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ বাদী হয়ে প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ইসরাইল আলী সাদেককে প্রধান আসামী করে সিনিয়র স্টাফ নার্স আমিনুল ইসলাম ও সুমন চন্দ্র দেবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এছাড়া তার অপকর্মের সহযোগী নার্স আসমা, মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানসহ অন্যদের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। 

 

আরও পড়ুন: ওসমানীতে ঘুষকাণ্ড : সাদেকসহ জড়িতদের শাস্তি চায় সিলেটবাসী

 

এমনকি এ মামলায় ইসরাইল আলী ছাদেক গত ২৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন। আজ রোববার তিনি নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

আরও পড়ুন: সাদেক লাপাত্তা, রিমান্ড শেষে কারাগারে আমিনুল-সুমন


মামলার সময় এজাহারে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ উল্লেখ করেন,  সাদেকের নির্দেশনায় দীর্ঘদিন ধরে চাকরি দেয়া, বদলি করানোর কথা বলে এবং নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড জড়িত সাদেক চক্র। এমনকি  ব্রাদার সাদেক অনিয়ম, দুর্নীতি, দালালি, অর্থ আত্মসাত করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ চলমান রয়েছে। এরআগে ২০১৯ সালে নিষিদ্ধ মাদক প্যাথেডিনসহ র‌্যাবের হাতে আটক হন ইসরাইল আলী সাদেক। সে সময়ও তাকে বহিস্কার করা হয়নি। মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে। 

 

আরও পড়ুন: 

রোগমুক্তির ওসমানীতে সবচেয়ে বড় রোগের নাম সাদেক!

এবার ফাঁসছেন ওসমানী হাসপাতালের সেই কথিত `সম্রাট` সাদেক!

সাদেক সিন্ডিকেটে বন্দী ওসমানী হাসপাতাল, রোগীরা অসহায়

ওসমানীর সাদেকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ! 


এদিকে আলোচিত সাদেকের দুই সহযোগী আমিনুল ও সুমনকে ১৪ জানুয়ারি তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সাদেকের নিশানা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। এ ছাড়া ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে শেকড় গেঁড়ে বসা দুর্নীতির আদি-অন্ত জানতে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। 

 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেটের কোতোয়ালি থানার এসআই রাশেদ ফজল জানান- আসামিদের আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড চাইলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। পরেরদিন দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন-১ আদালতের বিচারক মো. সুমন ভূঁইয়া ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। 

 

এ ঘটনার পরে একের পর এক বেরিয়ে আসছে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্রাদার সাদেক চক্রের নানা অপকর্ম। তার দাপটের কাছে অসহায় ছিল খোদ হাসপাতালের প্রশাসনও। নানাভাবে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে সাদেক নিজেকে প্রভাবশালী দেখিয়ে সবখানেই বিচরণ করেন। রয়েছে তার শক্তিশালী বাহিনীও। হাসপাতালের ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তা পর্যন্ত ছিল তার চক্রের ব্যাপ্তি। ফলে সাদেক ও বাহিনীর বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। 

 

ঘুষের ৬ লাখ টাকাসহ সাদেকের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তারের পর হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া জানিয়েছিলেন- সাদেক ও তার লোকজনের অপকর্মের খবর তাদের কাছে আসতো। কিন্তু প্রমাণের অভাবে কিছু করা যায়নি। এখন যেহেতু প্রমাণ মিলেছে তাদের বিরুদ্ধে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এদিকে গোয়েন্দা অভিযানকালে ওসমানীতে ব্রাদার সাদেকের সিন্ডিকেটে শুধু নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীরাই নয়, ওখানে ডিউটিতে থাকা বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা নানাভাবে জড়িত। ঘটনার পর থেকে তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালান। এছাড়া, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রলীগের নেতারাও একই চক্রের সঙ্গে জড়িত। পরে ছাত্রলীগ নেতার কাছ থেকে মুচলেকাও আদায় করা হয় বলে জানা যায়। 

 

হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তথ্যমতে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে লিজ নেয়া ফার্মেসি ছিল সাদেকের। ওই ফার্মেসিতে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছে রোগীর স্বজনরা। বেশি দামে ওষধ বিক্রি, রোগীদের স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ থাকলেও হাসপাতালের প্রশাসন ছিলেন নির্বিকার। হাসপাতালের পার্কিং এলাকায় সাদেকের লোকজন চাঁদাবাজি করে। হাসপাতাল প্রশাসন বারবার ব্যক্তি মালিকানাধীন এম্বুলেন্সকে বাইরে বের করার চেষ্টা করলেও সাদেকের কারণে পারেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যতবারই উদ্যোগ নিয়েছে ততবারই হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ঘেরাও সহ নানা ঘটনা ঘটানো হয়েছে। হাসপাতালের ট্রলি সিন্ডিকেট, দালাল সিন্ডিকেটও নিয়ন্ত্রণ করে সাদেক ও তার সহযোগীরা। সাদেকের লোক হলে দালালরা অবাধে ওয়ার্ড পর্যন্ত যেতে পারে। বাইরে ফার্মেসির কেউ এক্ষেত্রে সুযোগ পান না। হাসপাতালের আউট সোর্সিংয়ে লোক নিয়োগের নামে বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে সাদেক। টাকা দিয়ে নিয়োগ পাওয়ার পরও প্রতি মাসে বেতন থেকে একটি টাকা সাদেককে দিতে হতো তাদের। 


তবে তদন্তে থাকা কোতোয়ালি পুলিশ জানিয়েছে; সাদেককে ধরতে তারা সক্রিয় রয়েছে। তাকে খুব দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।


দীর্ঘদিন পর অপরাধ সম্রাট সাদেক পালিয়ে বেড়ালেও আজ (৩ মার্চ) আদালতে এসে আত্মসমর্থন করে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত।  


 

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার