লাগামহীন সিএনজিতে সিলেটে দুর্বিষহ যানজট

সিলেটে নগরজুড়ে কয়েক দিন ধরে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। দিন ও রাতে নগরের বিভিন্ন এলাকার সড়কে যান চলাচল স্থবির হয়ে থাকতে দেখা গেছে। দিনে তীব্র গরমের মধ্যে যানজটে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীসহ নগরবাসীর। সড়কে যত্রতত্র পার্কিং, অতিরিক্ত সংখ্যক সিএনজির আগমন, জেলার সিএনজি নগরে চলাচল করার মতো নানা কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

নগরের ভুক্তভোগীরা বলছেন,গত বেশ কিছুদিন থেকে সিলেটে মারাত্মক যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে নগরে রাত ১১টা পর্যন্ত যানজট হচ্ছে। যানজটের মধ্যেও দুর্ঘটনা ঘটছে। নগরের ভেতরে দিনের বেলা মালবাহী ট্রাক ঢুকে পড়ছে। এতে যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করছে।

সোমবার বেলা দুইটার দিকে নগরের জেল রোড এলাকায় রিকশায় বসা ছিলেন নগরের টিলাগড় এলাকার বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। একপর্যায়ে রিকশা থেকে নেমে তিনি হাঁটা শুরু করেন। জাহাঙ্গীর বলেন, ঈদের আগে আজ ব্যাংকে লেনদেনের শেষ দিন। বাসা থেকে বের হয়ে জেল রোড মোড়ে আসতে তাঁর প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। যদিও রিকশা দিয়ে আসতে এ পথে ১০ মিনিটে জিন্দাবাজার পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু তীব্র যানজটে ৪৫ মিনিট আটকে থাকেন। শেষ পর্যন্ত হেঁটেই জিন্দাবাজারের দিকে রওনা হয়েছেন।

আজ নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জেল রোড থেকে পূর্ব জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার থেকে চৌহাট্টা মোড়, মিরবক্সটুলা থেকে চৌহাট্টা মোড়, আম্বরখানা থেকে চৌহাট্টা মোড়, রিকাবীবাজার থেকে লামাবাজার, বন্দরবাজার এলাকা, কালীঘাট ও মহাজনপট্টি এলাকা, বন্দরবাজার থেকে তালতলা, কাজিরবাজার, আম্বরখানা থেকে মিয়া ফাজিলচিস্ত, নাইওরপুল এলাকা, মিরাবাজার থেকে রায়নগর, শিবগঞ্জ এলাকা, সোবহানীঘাট থেকে মেন্দিবাগ ও হুমায়ুন রশীদ চত্বরে বেলা ১১টার পর থেকে থেমে থেমে তীব্র যানজট ছিল।

নগরের তালতলা সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বন্দরবাজারের দিকে যাচ্ছিলেন সুমাইয়া বেগম ও তাঁর দুই ছেলে। ফেরদৌসী বলেন, সুবিদাবাজার থেকে বন্দরবাজার যাওয়ার জন্য তাঁরা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠেছিলেন। তালতলা এলাকায় পৌঁছে যানজটে পড়তে হয়েছে। এর আগে রিকাবীবাজার থেকে লামাবাজার সড়কে আরও প্রায় ২০ মিনিট যানজটে পড়ে থাকতে হয়। কয়েক দিন আগেও শহরে এমন যানজট ছিল না।

সন্ধ্যা সাতটায় সিলেট নগরের জেল রোড-জিন্দাবাজার সড়কে দেখা যায়, নগরের জেল রোড থেকে পূর্ব জিন্দাবাজার এলাকা পর্যন্ত যানবাহনের তীব্র চাপ। সড়কে দীর্ঘ যানজট লেগে আছে। মূলক বারুতখানা মোড়ে হাওয়া পাড়া থেকে বারুতখানা সড়কে গলির সড়কে যানবাহন চলাচল করায় মূল সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া জিন্দাবাজার-জেল রোড সড়কের সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি যানবাহন যত্রতত্রভাবে পার্কিং করা।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য থেকে জানা যায় শহরে ট্র্যাফিক অব্যবস্থাপনা, অতিরিক্ত সিএনজি এবং ফুটপাথ জুড়ে হকারদের ব্যবসা জানযট বাড়াতে ভূমিকা রাখে। অতি সম্প্রতি মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের উদ্যোগে নগরী দুই দশক পর হকার মুক্ত হতে চলেছে। কিন্তু নিবন্ধনহীন সিএনজি ও ট্র্যাফিক অব্যবস্থাপনা আগের মতোই আছে।  যে কারণে নাগরিকেরা আশাবাদী হতে পারছেন না যানজট নিরসনের ব্যাপারে।  তাই সঙ্কট নিরসনে নগর কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগীরা।