সিলেটে বন্যায় দায়ী নারীদের উচ্চশিক্ষা ও বেহায়াপনা চলাফেরা!
সিলেট সমাচার
প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
৩৬০ আউলিয়ার পূন্যভূমি সিলেট। ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে সিলেট এখনো অনেকটাই রক্ষণশীল সমাজে পরিণত হয়ে আছে। তার প্রমাণ মিলে নারীদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে অভিভাবকদের আড়স্থতা, অনীহা ও সুযোগ সৃষ্টির অভাব। এর কারণ নারীদেরকে তারা ঘরের বাইরে বের হতে দিতে চাই না। অবরোধবাসিনীর মতো ঘরে আবদ্ধ রাখতে চাই এ অঞ্চলের মানুষ। তবে এ চিত্রের বাইরে এবার সিলেটে পরপর ভয়াবহ বন্যার কারণ হিসেবে দায়ী করছেন সিলেটে নারী শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে-মেয়েদের অবাধ চলাফেরাকে, বিশেষ করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের প্রেক্ষিতে ছেলে-মেয়েদের অবাধ মেলামেশা ও বেহায়াপনা চলাফেরাকেই দোষছেন স্থানীরা।
স্থানীয়দের দাবী, বিগত ১০০ বছরেও এমন ভয়াবহ বন্যা সিলেটবাসী দেখে নি। বর্তমানে সিলেটে নারীদের অবাধ চলাফেরা বেড়ে গেছে। যা ইতিপূর্বে ছিলো না। বিশেষ করে সিলেটের পূণ্যভূমিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে মেয়েদেরেএ অবাধ চলাফেরা বেড়ে গেছে। ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য ৩৬০ আউলিয়ার এ অঞ্চল একটা পূন্যভূমি। অথচ এ পূন্যভুমিতে নারীদের এমন চলাফেরা আল্লাহ সহ্য করছে না বলেই এ ভয়াবহ বন্যার দেখা মিলেছে বলে দাবি এসব স্থানীয়দের।
তাদের আরও দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পাশাপাশি ছেলেমেয়েরা অবাধে চলাফেরা করছে। ইসলাম বহির্ভূত কাজে সম্পৃক্ত হয়ে পূণ্যভূমি সিলেটকে কলুষিত করছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় না থাকলে এমনটা হতো না। এমনকি এখানে সিলেটের অভ্যন্তরের থেকে অন্য জেলা থেকে বেশি পরিমাণ মেয়ে পড়াশেনা করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৭ সালের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ জাতীয় সংসদের পাশ হবার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বেশ বেগ পেতে হয়েছিলো প্রশাসনকে। তার প্রধান অন্তরায় ছিলো এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েরা অবাধে চলাফেরা করবে। বেহায়াপনা করে বেড়াবে। নারীরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে। যা ধর্মীয় দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ কারণেই স্থানীয়রা এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় বাঁধা প্রদান করে। এমনকি এসব বাঁধা পার করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে সময় লেগেছিলো ৪ বছর। তবে তৎকালীন কিছু প্রগতিশীল সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাবীদ ও গুণীজনের সহায়তায় ১৯৯১ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
তবে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রথম কয়েকবছরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের উপস্থিতি ছিলো একেবারেই নগন্য। সিলেটের স্থানীয় অভিভাবকেরা তাদের মেয়েদেরকে অনুৎসাহিত করতো এ বিশ্ববিদ্যালয় হতে শিক্ষা গ্রহণ থেকে। এমনকি সুযোগ পেলেও বৈবাহিক চাপ, পারিবারিক চাপ, সামাজিক অশান্তিসহ নানা বিষয় দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত ডিগ্রি শেষ করতে পারতো না।
এমন চরিতার্থ থেকে সিলেটের স্থানীয়রা এখনো এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষা গ্রহণের বিষয়টি অবহেলার চোখে দেখে আসছে। এর প্রেক্ষিতে পরপর বিগত দুই বছরে সিলেটে ভয়াবহ বন্যার কারণ হিসেবে এ সিলেটে নারী শিক্ষার অগ্রসরতা, নারীদের ঘরের বাইরে বের হয়ে বেহায়াপনা চলাফেরাকে বিগত দুই বছর থেকে দায়ী করে আসছেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এক মৌলভী দাবি করেন, অবিবাহিত ছেলে-মেয়েরা অবাধে চলাফেরা করলে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। তাছাড় যখন এর মাত্রা বেড়ে যায় তখন সেখানে আল্লাহ তার গজব দেন। আমি মনে করি, সিলেট একটা পূন্যভূমি। এখানে ৩৬০ আল্লাহর ওলি-আউলিয়া ঘুমিয়ে আছে। আর সিলেটে নারীদের এ বেহায়াপনা চলাফেরা আল্লাহ মেনে নিতে না পেরে বন্যারূপে এ গজব আমাদের উপর দিয়েছেন। আমরা চেয়েছিলাম এখানে (সিলেটে) নারী শিক্ষার অগ্রসরতার প্রয়োজন নেই। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন নেই। কিন্তু কে শোনে কার কথা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দিন এ বিষয়টি বোঝার জন্য, এ দোয়া করি।
স্থানীয় সিএনজি চালক শরিফুল ইসলাম চাঁদ বলেন, নারীদের যতটুকু দরকার ততটুকু শিক্ষা নিবে। এজন্য মকতব, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা আছে। তবে এতো উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজন নেই। তারা বাসা বাড়িত থাকবে। দিনশেষে তাদেরকে অন্যের সংসারে যেতে হবে, পরিবার সামলাবে, সংসার সামলাবে এইেো তাদের কাজ, এতো উচ্চশিক্ষা দিয়ে কি হবে!
তবে এর বিপরীতমুখী কথা বলছেন সমাজের প্রগতিশীল সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাবীদ ও গুণীজনেরা। সিলেটের স্থানীয় সংস্কৃতি কর্মী হাবিব রহমান বলেন, বন্যা হয়েছে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক কারণে। অতিবৃষ্টির কারণে অধিকমাত্রায় একসাথে পানি প্রবেশের কারণে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। যারা বলছে যে নারীদের অবাধ চলাফেরায় বন্যায় হয়েছে তারা ধর্মান্ধ্যতায় নিমজ্জিত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নারীরা সমাজের বোঝা নয়। তাদেরকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখার এখন আর সযোগ নেই। তাদের প্রাপ্ত অধিকার তাদেরকে দিতে হবে। এসময় সিলেটের সকল অভিভাবকদেরকে সামাজিক গোড়ামি ও ধর্মান্ধ্যতা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানান এ সংস্কৃতি কর্মী।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম রকি বলেন, বন্যার কারণ হিসেবে নারীদেরকে দায়ী করা বিষয়টা হাস্যকর। পুরুষের সাথে কাধ মিলিয়ে নারীরাও সকল কাজে অংশগ্রহণ করবে, এইটা সকল ধর্মতে বলা হয়েছে।
“আর দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। এ বিপুল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করে নিরক্ষর অবহেলিত অদক্ষ রেখে দেশের উন্নয়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই সংবিধান নারী-পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করেছে। নারীর অগ্রগতি শিক্ষা অর্জন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষাকে অগ্রধিকার দিয়ে নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। অথচ সিলেটের স্থানীয়দের এমন কুরূচিপূণ্য ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনের সংস্কার কবে হবে? বলে প্রশ্ন রাখেন এ সচেতন শিক্ষার্থী।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, সিলেট বিভাগের ৭৮ শতাংশ নারীই পারিবারিক কাজের বাইরে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কোনো কাজে অংশ নেন না। স্বল্প পরিসর কুটির শিল্পের কাজ, স্বল্প পরিসরে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ করে চাকরীতে কর্মরত আছেন। এমনকি বিবিএস এর তথ্য মতে, সিলেটের যেসব নারীরা উচ্চ শিক্ষা নিয়েছেনও তাদের অধিকাংশই সিলেটের প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত আছেন। সিলেটের বাইরে কর্মস্থল হলে তেমন যায় না বা যেতে দেওয়া হয় না।
কিছুদিন আগে সিলেটে নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন হয়েছে। সেখানে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘সিলেটের নারীরা পিছিয়ে ছিলো। সামাজিক রীতির বাইরে আসতো না। তবে বর্তমানে সিলেটের নারী জাগরণে আমি অভিভূত। সিলেটে তারা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন ভবিষ্যতে পুরুষ ও নারী আলাদা করে দেখার সুযোগ থাকবে না। আমরা আশাবাদী, এই ভেদাভেদ অচিরেই দূর হবে।
- শেরেবাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- দেশে এই প্রথম চোয়াল প্রতিস্থাপন, বিশ্বে নজিরবিহীন
- এখন ওমরাহ করতে পারবেন বিশ্বের যে কোনো ভিসাধারী
- তাপমাত্রা কমাতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ উদ্যোগের কথা জানালেন হিট অফিসার
- গরমে বারবার গোসল করা ভালো নাকি ক্ষতিকর?
- প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় আনতে প্রচেষ্টা চলছে: সমাজকল্যাণ মন্ত্রী
- নতুন ১১ জেলাসহ ৫৫ জেলা যুক্ত হচ্ছে রেল নেটওয়ার্কে
- ৭৬ বছরের রেকর্ড ভাঙল দেশের চলমান তাপপ্রবাহ
- সুবিপ্রবিতে ১ম ভর্তি পরীক্ষা, হাওরপাড়ে খুশির ঢল
- হবিগঞ্জে ৩ চা কারখানা বন্ধ, বিপাকে শ্রমিকরা
- সিলেটে ভারত-বাংলাদেশ টি২০ সিরিজ শুরু কাল, প্রস্তুতি সম্পন্ন
- সিলেটে আর্মড পুলিশের মসজিদের উদ্বোধন
- প্রবল বৃষ্টিপাতে মে মাসে সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার শঙ্কা
- চোরাই পথে সিলেটে আনা তিন পিকআপ ভর্তি ১৮ গরু উদ্ধার
- বর্ণিল আয়োজনে সিলেট স্টেশন ক্লাবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান
- নির্বাচনে প্রার্থীতায় সিলেটের বিএনপির ৯ নেতৃবৃন্দ বহিষ্কার
- ডিবি পুলিশের অভিযানে সিলেটে ৭ জুয়াড়ি আটক
- সিলেটে নামলো স্বস্তির বৃষ্টি
- ‘পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে বিএনপির শিক্ষা নেওয়া উচিত’
- ভিসা সহজ করতে যুক্তরাজ্যকে প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান
- থাইল্যান্ডের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে: শেখ হাসিনা
- দুই দিনের সফরে নির্বাচনী এলাকায় আসছেন এমপি ইমরান
- চুনারুঘাটে বোরোর বাম্পার ফলন, ধান কা টা-মাড়াইয়ের উৎসব শুরু
- ধান কাটতে গিয়ে সাপের কামড়ে প্রাণ গেল জগন্নাথপুরের এক কৃষকের
- আবারও ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি
- শপথ নিয়েছেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
- বিশ্বমিডিয়ায় বাংলাদেশের তাপদাহ
- জিআই সনদ পেল দেশের ১৪ পণ্য
- ‘বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন ভিত্তিহীন’
- বিসিএস পরীক্ষা: শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বাস সেবা দিলো শাবিপ্রবি
- ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নি
- প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা আজ
- কালোজিরা খাওয়ার ৫ উপকারিতা
- ভুটানে যাচ্ছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
- আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত
- মানুষের কষ্ট বৃদ্ধিতে বিএনপির নতুন সংস্করণ ভারত বিরোধিতা: নাছিম
- বসন্ত গায়ে মেখে রঙিন হয়ে উঠেছে শিমুল
- সিলেটের শাহপরাণে পুলিশের জালে দুই কারবারি, মাদকদ্রব্য জব্দ
- মাধবপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
- পীরের বাজারে কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ সংঘর্ষে আহত ৬
- কানাডায় উচ্চশিক্ষা: সিলেটিদের যা জানা জরুরি
- খেলাধুলাও বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে উচ্চ করেছে : শফিক চৌধুরী
- সিলেট নগরীতে চোরাই মোটরসাইকেলসহ যুবক আটক
- এপ্রিলের গরমে সিলেটের জনজীবনে অস্বস্তি
- চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সম্পাদক ডিপজল
- ৩ দিনের হিট অ্যালার্টের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর
- এমপি হাবিব’র উদ্যোগ : প্রত্যেক ইউনিয়নে হচ্ছে মিনি স্টেডিয়াম
- পাগলা মসজিদের ৯ দানবাক্সে ২৭ বস্তা টাকা
- সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি না করানোর নির্দেশ
- একটি মহল দেশের উন্নয়ন চোখে দেখে না : এমএ মান্নান