জৈন্তাপুরে দুর্ঘটনায় নিহত চার ছাত্রলীগ নেতা চিরনিদ্রায় শায়িত

জৈন্তাপুরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চার ছাত্রলীগ নেতা। শনিবার বেলা ২টায় জৈন্তাপুর রাজবাড়ি মাঠে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে মুসলিম ধর্মের ৩ জনের জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফনকাজ সম্পন্ন করা হয়। আর হিন্দু ধর্মের ১ জনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাদের পারিবারিক শ্মশানে।   

এদিকে সকালে নিহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে ছুটে চলে যান সিলেট-৪ আসনের একাধিকবারের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। 

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট-৪ আসনের একাধিকবারের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি, সুনামগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এডভোকেট রনজিত সরকার, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মাহফুজুর রহমান, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলীসহ অসংখ্য মুসল্লি।

ইমরান আহমদ এমপি তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, শুনেছি গতকাল রাতে তাদের চিকিৎসা নিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা হাসপাতালে অপ্রীতিকর ঘটনা গঠেছে। তদন্তপূর্বক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায় থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এর আগে, শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪নং বাংলাবাজার রাংপানি এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেলে ৪ ছাত্রলীগ নেতার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। 

আরও পড়ুন ঃ জৈন্তাপুরে দুর্ঘটনায় সড়কে গেল ৪ ছাত্রলীগ নেতার প্রাণ

দুর্ঘটনায় নিহত চারজন হলেন- উপজেলার নিজপাট লামাপাড়া গ্রামের জহুরুল মিয়ার ছেলে জুবায়ের আহসান (২৬), নিজপাট তোয়াসীহাটি গ্রামের রনদিপ পালের ছেলে নিহাল পাল (২৫), নিজপাট পানিহারাহাটি গ্রামের আরজু মিয়ার ছেলে মেহেদী হোসেন তমাল (২৪) ও নিজপাট জাঙ্গালহাটি গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে সুমন আহমদ (২৩)। তারা সকলেই জৈন্তাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ। 

তিনি জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার সময় তারা জৈন্তাপুর থেকে একটি প্রাইভেটকার নিয়ে তামাবিলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪নং বাংলাবাজার রাংপানি লক্ষীপুর এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারটি মহাসড়কের পাশে খাদে পানিতে পড়ে যায়।

জৈন্তাপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দলের সহযোগিতায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদেরকে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তার দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুইজনকে আশংঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তারা মারা যান। পরে রাতেই ৪ টি মরদেহ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল থেকে তাদের নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। 

দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলী গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। 

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাজেদুল ইসলাম, কানাইঘাট সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার অলক কান্তি, জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম পিপিএম, জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম।

এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে আসেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি কিশোয়ার জাহান সৌরভ, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ। এছাড়া শতশত ছাত্রলীগ কর্মী হাসপাতালে জড় হন। এসময় হাসপাতালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে নিহত ছাত্রলীগ নেতাদের দেখতে ছুটে যান সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এসময় তিনি নিহত পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেন।