ফের বাড়ছে ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময়

আবারও বাড়ছে ৪৩তম বিসিএসের অনলাইন আবেদনের সময়সীমা। করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ২৪ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি হওয়ায় আবেদনের সময় বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত নিতে চলতি সপ্তাহের শেষে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পূর্ণ কমিশনের সভা বসবে বলে জানা গেছে।

রবিবার (২৮ মার্চ) পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘৪৩তম আবেদনের সময় বাড়ছে এটা নিশ্চিত। তবে কতদিন বাড়বে তা পূর্ণ কমিশনের বৈঠকে ঠিক করা হবে। করোনা পরিস্থিতি, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে সময় বাড়ানো হবে এবং তা ৩১ মার্চের আগেই কমিশন সভা করে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।’

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩১ মার্চ ৪৩তম বিসিএসের দ্বিতীয় ধাপের আবেদনের সময় শেষ হবে। রোববার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ আবেদন পড়েছে। অন্যান্য সাধারণ বিসিএসগুলোতে ৪ লাখ বা তার কম-বেশি আবেদন পড়ে। সে হিসাবে ৪৩তম বিসিএসে আবেদনের সংখ্যা সন্তোসজনক। এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারির পর থেকে ২৪ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে যারা স্নাতক শেষ বর্ষ বা শেষ সেমিস্টার পরীক্ষার্থী ছিল ২৪ মে যদি বিশ্ববিদ্যলয় খুলে তবে এ সময়টুকু তাদের দেয়ার চিন্তা করছে পিএসসি। সে হিসাবে ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ মে পর্যন্ত প্রায় তিনমাস পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এ সময়টুকু বিবেচনা নিয়ে আবেদনের সময় বাড়ানো হতে পারে।

কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার পরিস্থিতি যদি ঊর্ধ্বমুখী থাকে তবে ২৪ মে সরাসরি হল ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাস ও শুধু পরীক্ষাগুলো আগের মতো চালু রাখতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু হবে ২৪ মে। তার আগে ১৭ মে আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে কোনো পরীক্ষা হবে না। তখন যেসব বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা ও হল খোলার ঘোষণা দিয়েছিল, সে সিদ্ধান্তও বাতিল হয়ে যায়। এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী প্রয়োজনে চলমান বিসিএস পরীক্ষা পেছানো হবে বলে সে সময় জানিয়েছিলেন।

এর আগে সেশনজটে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময় বাড়াতে সরকারি কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) চিঠি দিয়েছিল। সে চিঠি আমলে নিয়ে আবেদনের সময় ৩১ জানুয়ারি থেকে দুই মাস বাড়িয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়।

করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নিতে পারেনি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময়সীমা বাড়াতে অনুরোধ করে। তাদের যুক্তি ছিল, করোনার কারণে প্রায় এক বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনার্স পর্যায়ের অনেক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বা নেয়া সম্ভব হয়নি। এসব পরীক্ষা শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা যাতে অ্যাপেয়ার্ড হিসেবে বিসিএসে আবেদন করতে পারেন সে সুযোগ চায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময় বাড়ানোর কথা বলে। এর প্রেক্ষিতে পিএসসি দুই মাস সময় বাড়ায়।

গত বছরের ৩০ নভেম্বর ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসনে ৩০০ জন, পুলিশে ১০০ জন, পররাষ্ট্রে ২৫ জন, শিক্ষায় ৮৪৩ জন, অডিটে ৩৫ জন, তথ্যে ২২ জন, ট্যাক্সে ১৯ জন, কাস্টমসে ১৪ জন ও সমবায়ে ১৯ জনকে নেয়া হবে।

প্রিলিমিনারি পরীক্ষার নম্বর বণ্টন

প্রার্থীকে ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ২০০টি প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য প্রার্থী ১ নম্বর পাবেন। তবে ভুল উত্তর দিলে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য প্রাপ্ত মোট নম্বর থেকে দশমিক ৫০ (শূন্য দশমিক পাঁচ শূন্য) নম্বর কাটা যাবে। প্রিলিমিনারির বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস পিএসসির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।