ফেঞ্চুগঞ্জে ‘বিশেষ উপহার’ পেলেন পুলিশ সুপার

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো জঙ্গি সন্ত্রাস মাদকবিরোধী এবং বিট পুলিশিং সভা। বুধবার এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে তাকে ‘বিশেষ উপহার’ দেন থানার ওসি।

এএসপি রাশেদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, ফেঞ্চুগঞ্জের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠান চলাকালে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ঘোষণা দেন, পুলিশ সুপারের জন্য ফেঞ্চুগঞ্জ থানার পক্ষ থেকে উপহার হচ্ছে থানা এলাকার দুই মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীকে সুপথে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এই ঘোষণায় কৌতুহলী হয়ে উঠে অনুষ্ঠান অঙ্গন। এ সময় সাদা পাঞ্জাবী-পায়জামা পরে মঞ্চে উঠেন ফেঞ্চুগঞ্জে এক সময়ের আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী আব্দুল সালাম ও মনন মিয়া। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন ও এএসপি রাশেদুল হক তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এ সময় আনন্দিত জনতার করতালিতে মুখর হয়ে উঠে অনুষ্ঠান অঙ্গন।

সুপথে ফিরে আসা আব্দুল সালাম ও মনন মিয়া তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন মাদকের সাথে ছিলাম। আমরা অনুভব করেছি এ পথ সঠিক নয়। ঐ সময় আমাদের কোন পরিবার ছিল না। মা বাবা ভাই বোন কেউই আমাদের দেখতে পারতো না, ঘৃণা করতো। সমাজে ঘৃণা ছাড়া আমাদের কিছু ছিল না। আজ আমরা সুপথে এসেছি, নামাজ রোজা করছি, পরিবারে সংযুক্ত হয়েছি।’

নতুন জীবনে ফিরতে পেরে তারা ফেঞ্চুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় ওসি আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ঘোষণা দেন তিনি তার নিজ খরচে আব্দুল সালামকে বিদেশে পাঠাবেন। এ ঘোষণাকে সবাই হাততালি দিয়ে স্বাগত জানান। আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সুপথে আসা আব্দুল সালাম ও মনন মিয়া।

অন্যান্যদের সুপথে আনা ও এদের সুপথে রাখার সকল চেষ্টা চালাবার কথা বলে প্রধান অতিথি সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘এটা আসলেই চমৎকার একটি কাজ। মাদকের থাবা থেকে বেরিয়ে আসার স্থায়ী সমাধান।’