মহররম ও আশুরার শিক্ষা
সিলেট সমাচার
প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২২
নিশ্চয়ই আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারটি। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সঙ্গে তোমরা যুদ্ধ করো সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকিদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সূরা তাওবাহ : আয়াত ৩৬)
ওই আয়াতে আল্লাহতায়ালা বার মাসের মধ্যে চার মাসকে সম্মানিত বলেছেন। তার মধ্যে মহররম অন্যতম। বিশেষ করে এ মাসের ১০ তারিখ ইসলামি শরিয়তে একটি গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ দিনটি ইসলামি ইতিহাসে ‘আশুরা’ নামে পরিচিত। ‘আশুরা’ শব্দটি আরবি। এর অর্থ, দশম। শব্দটি হিজরি বর্ষের ১০ তারিখকে বোঝায়। দিনটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার অন্যতম কারণ হলো, এ দিনটি ইতিহাসের এক মহান ঘটনার সাক্ষী। আল্লাহতায়ালা এ দিনে হজরত মুসা আলাইহিস সালাম এবং তার অনুসারীদের ফেরাউন ও তার সৈন্যদের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছেন এবং ফেরাউনকে তার সৈন্যসহ নদীতে ডুবিয়ে ধ্বংস করেছেন। (বুখারি-১৮৭৮)
এ দিনটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার ব্যাপারে এটিই বিশুদ্ধ বর্ণনা। এ ছাড়া এ দিনের ব্যাপারে আরও কিছু ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায়। যেমন-১০ মহররম পৃথিবীর সৃষ্টি, এ দিনে কেয়ামত সংঘটিত হবে, হজরত আদম ও হাওয়া (আ.)-এর সৃষ্টি ও তাদের বেহেশতে প্রবেশ, জান্নাত থেকে বের হয়ে আদম-হাওয়া আরাফাতের ময়দানে একত্রিত হওয়া, হজরত ইবরাহিমের (আ.) আগুন থেকে মুক্তি, হজরত নুহকে (আ.) মহাপ্লাবন থেকে নিষ্কৃতি ও তার পাপিষ্ঠ জাতিকে ধ্বংস, এ দিনেই অত্যাচারী শাসক নমরুদের ধ্বংস, হজরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি, হজরত ঈসাকে (আ.) আসমানে উঠিয়ে নেওয়া, ইউসুফের (আ.) কারাগার থেকে মুক্তি এবং আইউবের (আ.) দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসা ইত্যাদি।
১০ মহররম ইসলামের ইতিহাসে আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কারবালার ঘটনাটি অন্যতম। রাসূল (সা.)-এর ইন্তেকালের প্রায় ৫০ বছর পর ৬১ হিজরির মহররম মাসের ১০ তারিখ কারবালার প্রান্তরে তারই প্রাণপ্রিয় নাতি হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শাহাদতবরণ করেন। উমাইয়া খিলাফতের দ্বিতীয় খলিফা ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়ার পাঠানো সেনাবাহিনীর হাতে হজরত হুসাইনের (রা.) শাহাদতবরণ করার সময় থেকে ওইদিনটি তার শাহাদতবার্ষিকী হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
খোলাফায়ে রাশেদিনের তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান বিন আফফান (রা.)-এর নির্মম হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.) ও সিরিয়ার প্রাদেশিক শাসনকর্তা হজরত মুয়াবিয়ার (রা.)-এর মধ্যে যে সিফফিনের যুদ্ধ হয়, এরই পরিপ্রেক্ষিতে খারেজিদের পাঠানো গুপ্তঘাতক আবদুর রহমান বিন মুলজিমের হাতে হজরত আলীর শাহাদতবরণের পর হজরত মুয়াবিয়া খলিফা পদে আসীন হন। হজরত মুয়াবিয়া খলিফা হওয়ার কিছু দিন পর হজরত আলীর বড় ছেলে হজরত হাসানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি ভঙ্গ করে হজরত হুসাইনের পরিবর্তে নিজপুত্র ইয়াজিদকে পরবর্তী খলিফা হিসাবে ঘোষণা করেন মুয়াবিয়া। ৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে ইয়াজিদ খলিফা পদে আসীন হলে হজরত হুসাইন তাকে খলিফা হিসাবে মেনে নিতে অস্বীকার করেন। তিনি হজরত মুয়াবিয়ার উত্তরাধিকার মনোনয়নকে প্রত্যাখ্যান করেন। ইতোমধ্যে ইরাকের কুফার অধিবাসীরাও ইয়াজিদকে খলিফা হিসাবে মেনে নিতে অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণের জন্য হজরত হুসাইনের কাছে চিঠি পাঠান।
কুফাবাসীর কথায় আস্থা রেখে ইয়াজিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণে সম্মত হন হজরত হুসাইন। তিনি এ লক্ষ্যে কুফার প্রকৃত অবস্থা অবগত হওয়ার জন্য তার চাচাতো ভাই মুসলিম বিন আকিলকে কুফায় পাঠান। মুসলিম কুফায় পৌঁছানোর আগেই কুফাবাসী ও হজরত হুসাইনের অস্ত্র ধারণের বিষয়টি ইয়াজিদ জেনে যান। ফলে তিনি কুফার শাসনকর্তাকে বহিষ্কার করে আবদুল্লাহ বিন জিয়াদকে শাসক নিযুক্ত করেন। জিয়াদ দায়িত্ব গ্রহণ করেই কুফাবাসীকে অর্থের বিনিময়ে, বিকল্পে ভয় দেখিয়ে ইয়াজিদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশে বাধ্য করেন। ফলে হজরত হুসাইন যখন কুফাবাসীদের সাহায্য করার জন্য ইরাক সীমান্তে হাজির হলেন, তখন তিনি ইয়াজিদ প্রেরিত সৈন্য ছাড়া কোনো কুফাবাসীর অস্তিত্ব খুঁজে পেলেন না।
এ অবস্থায় তিনি প্রতিশ্রুত সাহায্যপ্রাপ্তির আশায় ফোরাত নদীর তীরে কারবালায় শিবির স্থাপন করে অপেক্ষা করতে লাগলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কুফাবাসীদের খুঁজে না পেয়ে তিনি ইয়াজিদের বাহিনীর কাছে তিনটি প্রস্তাব করেন- ক. তাকে মদিনায় ফেরত যেতে দেওয়া হোক, খ. তুর্কি সীমান্তের দুর্গে প্রেরণ করা হোক, যেন তিনি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে পারেন অথবা গ. তাকে নিরাপদে ইয়াজিদের সাক্ষাৎলাভের সুযোগ করে দেওয়া হোক। কিন্তু ইয়াজিদ বাহিনী তার কোনো অনুরোধই রাখল না। ফলে কারবালার প্রান্তরে মাত্র ৩০ জন অশ্বারোহী, ৪০ জন পদাতিক এবং ১৭ জন নারী-শিশু নিয়ে তিনি ইয়াজিদ বাহিনীর মোকাবিলায় অস্ত্র হাতে তুলে নিলেন। যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে ৭২ জন সহযোদ্ধাসহ তিনি শাহাদতবরণ করেন। ইয়াজিদ বাহিনী শুধু শিশুদের ফোরাত নদীর পানি পান না করতে দেওয়ার মতো নিষ্ঠুরতা দেখায়নি; তারা হজরত হুসাইনের (রা.) দেহ থেকে মাথা ছিন্ন করে কুফায় দুর্গে নিয়ে যায়। এ ছাড়া উবায়দুল্লাহ ওই ছিন্ন মস্তকে বেত্রাঘাত করে উল্লাস প্রকাশ করেন।
ওই নিষ্ঠুরতা দেখে একজন কুফাবাসী ‘হায়!’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন। সেদিন থেকে কিছু লোক ‘হায় হুসেন’ বলে আশুরার দিন মাতম করেন। যদিও আশুরার মূল শিক্ষা হচ্ছে ধৈর্য ও ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হওয়া। হজরত হুসাইনের (রা.) আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে বিরত থাকা, সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠিত করায় আত্মনিয়োগ করা।
আশুরার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমন করে ইয়াহুদিদের মহররম মাসের ১০ তারিখে রোজা রাখতে দেখে বললেন- এটা কীসের রোজা? তারা জানাল, এটি একটি উত্তম দিন; এ দিনে আল্লাহতায়ালা ফেরাউনের হাত থেকে মুসা আলাইহিস সালাম ও তার অনুসারীদের মুক্ত করেছিলেন। এ কথা শুনে তিনি বললেন, ‘হজরত মুসা আলাইহিস সালামের ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে আমিই বেশি হকদার। অতঃপর তিনি নিজে রোজা রাখলেন এবং সাহাবাদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।’ (বুখারি-১৮৭৮)
অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবি কারিম (সা.) বলেন, আমি আশুরা দিবসে রোজা সম্পর্কে আল্লাহর কাছে আশা করি যে, এর মাধ্যমে তিনি পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (তিরমিজি-৭৫০)
এ মাসে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ ও সালাম পেশ, নফল নামাজ আদায়, কুরআন মজিদ তিলাওয়াত, নফল রোজা পালন, দান-সদকাহ ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য বিশেষভাবে চেষ্টা করার পাশাপাশি আর্তমানবতার সেবা, নিপীড়িত মানুষের হাতকে শক্তিশালী করা ও ইসলামের সাম্য ও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। মহররম আমাদের শিক্ষা দেয়-সব অন্যায়, পাপাচার, অনাচার ও সহিংসতাকে বিসর্জন দিয়ে সাম্য, শান্তি, মানবাধিকার ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার।
মুফতি সুহাইল আহমদ : আলেম ও ধর্মীয় গবেষক
- থাইল্যান্ডের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে: শেখ হাসিনা
- দুই দিনের সফরে নির্বাচনী এলাকায় আসছেন এমপি ইমরান
- চুনারুঘাটে বোরোর বাম্পার ফলন, ধান কা টা-মাড়াইয়ের উৎসব শুরু
- ধান কাটতে গিয়ে সাপের কামড়ে প্রাণ গেল জগন্নাথপুরের এক কৃষকের
- আবারও ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি
- শপথ নিয়েছেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
- বিশ্বমিডিয়ায় বাংলাদেশের তাপদাহ
- জিআই সনদ পেল দেশের ১৪ পণ্য
- ‘বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন ভিত্তিহীন’
- বিসিএস পরীক্ষা: শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বাস সেবা দিলো শাবিপ্রবি
- রোববার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও খোলা থাকবে
- কমলগঞ্জে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযানে জরিমানা আদায়
- শান্তিগঞ্জে ধান উৎপাদনে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা
- কোম্পানীগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত
- বিশ্বনাথে নারী কাউন্সিলরের মামলায় ৭ জনের জামিন
- মাধবপুরে রাস্তা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৪, থানায় মামলা
- তীব্র রোদে পুড়ে গেলেও বৈশাখে বৃষ্টি চায় না হাওড়ের কৃষকেরা
- তানজানিয়ায় বন্যা-ভূমিধসে নিহত ১৫৫
- সিলেটে উত্তরপূর্ব পত্রিকার কম্পিউটার অপারেটর অমিতের মরদেহ উদ্ধার
- বাংলাদেশ ও নিজেদের উন্নয়ন তুলনায় লজ্জিত পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী
- গবেষণায় আগ্রহী কর্মকর্তাদেরকে গবেষণা প্রস্তাব জমার অনুরোধ
- সিলেটে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চিনিসহ আটক ৪
- বাড়তে পারে সিলেটের তাপমাত্রা
- উপজেলা নির্বাচন : সব ডিসি-এসপির সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ
- হিট স্ট্রোকের লক্ষণ জেনে নিন
- ‘উপজেলা ভোটে ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হতে পারে’
- ইন্টারনেট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো যাবে ছবি-ফাইল
- চলমান যুদ্ধগুলো অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী
- ওসমানীনগরে বিদ্যুৎপৃষ্টে স্যানেটারী মিস্ত্রির মৃত্যু
- জীবনবৃত্তান্ত আহ্বানের সময় চাঁদা নিতে মানা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের
- ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নি
- ভুটানে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট বানিয়ে দেবে বাংলাদেশ
- স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সেবা দিন, কর্মকর্তাদের ভূমিমন্ত্রী
- আইসিসির নারী সেরা দশে প্রথম বাংলাদেশি নাহিদা আক্তার
- প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা আজ
- কালোজিরা খাওয়ার ৫ উপকারিতা
- ভুটানে যাচ্ছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
- আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত
- মানুষের কষ্ট বৃদ্ধিতে বিএনপির নতুন সংস্করণ ভারত বিরোধিতা: নাছিম
- বসন্ত গায়ে মেখে রঙিন হয়ে উঠেছে শিমুল
- স্বাধীনতার ৫৩ বছরের মধ্যে ২৯টা বছর এই জাতির দুর্ভাগ্যের বছর
- বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ঘরে, শেষ প্রদীপও নিভে গেল দরিদ্র ফয়জুরের
- বড়লেখায় বিজিবির ইফতার ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
- বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সৌদি আরবের ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ
- ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়াকে টপকে যেতাম’
- সিলেটের শাহপরাণে পুলিশের জালে দুই কারবারি, মাদকদ্রব্য জব্দ
- মাধবপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
- বাবার হাতে লাগানো গাছ ছুঁয়ে দেখলেন ভুটানের রাজা
- পীরের বাজারে কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ সংঘর্ষে আহত ৬
- কানাডায় উচ্চশিক্ষা: সিলেটিদের যা জানা জরুরি