যেসব খাবারে কমবে হালকা সর্দি-কাশি

আবহাওয়া পরিবর্তন কেবল প্রকৃতিতেই নয়, আমাদের দেহেও নানান প্রভাব ফেলে। প্রকৃতি মেতে উঠেছে রোদ-বৃষ্টি খেলাতে। এই সময়টাতে অনেকেরই সর্দি-কাশির সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। তাই এই সময় অধিক সতর্ক থাকতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, শরীর আর্দ্র রাখা ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের পাশাপাশি শারীরিক পরিশ্রমও করতে হবে।

ভারতীয় পুষ্টিবিদ ও সনদপ্রাপ্ত ডায়াবেটিস প্রশিক্ষক ডা. অর্চনা বাতরার মতে, ‘কিছু খাবার ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ও প্রদাহ নাশক উপাদান সমৃদ্ধ যা আমাদেরকে ঋতুভিত্তিক ব্যাধি থেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।’

চলুন এবার জেনে নেয়া যাক এমন কিছু খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত-

দই: ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন ও উপকারী প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার দই। এসব পুষ্টি উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও সাধারণ ঠাণ্ডা কাশির ঝুঁকি কমায়। এটা রোগীর অসুস্থতার সময়ে প্রয়োজনীয় ক্যালরি সরবারহ করে। তবে জমাট সর্দির সমস্যা থাকলে দই খাওয়া এড়ানো উচিত।

সবুজ শাক-সবজি: সুস্থ থাকতে সবুজ শাক-সবজি খাওয়ার বিকল্প নেই। সবুজ খাবার বিপাকে সহায়তা করে ও অপ্রয়োজনীয় ক্যালরি পোড়াতে সহায়তা করে। ভিটামিন এ, কে, সি, আঁশ ও খনিজ উপাদান সাধারণ সর্দি দ্রুত উপশমে সহায়তা করে।

মুরগির স্যুপ: প্রয়োজনীয় খনিজ, ভিটামিন, প্রোটিন ও ক্যালরি সমৃদ্ধি এই খাবার অসুস্থ শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান যোগাতে সহায়তা করে। ইলেক্ট্রোলাইট উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় জ্বর নিরাময়েও ভূমিকা রাখে। মুরগির মাংসে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড ঠাণ্ডা কাশির সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে সহায়তা করে।

আদা: প্রাকৃতিক প্রদাহরোধী, ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল’ ও ক্যান্সার-রোধী উপাদানে সমৃদ্ধ আদা। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ঠাণ্ডাজনিত বমিভাব কমায়। এক্ষেত্রে চায়ের সঙ্গে কাঁচা আদা খেতে পারেন। ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সিদ্ধ করা আদা জল ঠাণ্ডা করেও পান করতে পারেন।

মধু: বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই মধু ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে ব্যাক্টেরিয়া-রোধী উপাদান রয়েছে। মধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও দেহকে আর্দ্র রাখতে ভূমিকা রাখে। এর ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল’ উপাদান ঠাণ্ডা-কাশি ও গলাব্যথা উপশমে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করলে উপকার মিলবে। চয়ের সঙ্গেও পান করা যাবে।

রসুন: মধুর মতো রসুনও প্রাচীন ভেষজ। এতে রয়েছে ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঙ্গাস রোধী উপাদান। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সহায়তা করে। নিয়মিত রসুন খেলে ঠাণ্ডা কাশির ঝুঁকি কমে। খুব বেশি ঠাণ্ডা লাগলে প্রতিদিন সকালে কাঁচা রসুন খেলে উপকার পাওয়া যাবে। রসুনের স্যুপ বা ঝোল তৈরি করেও খাওয়া যায়। এতে গলাব্যথা কমবে ও শরীর উষ্ণ থাকবে।