ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১০৩

শিক্ষা অবকাঠামোয় বদলে গেছে সিলেট

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩  

সিলেটে খোলা আকাশের নিচে কিংবা ভাঙা বেড়া বা ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের দৃশ্য এখন বলা চলে অতীত। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই রয়েছে দৃষ্টিনন্দন একাডেমিক ভবন। গত এক যুগেরও বেশি সময়ে এ জেলায় শিক্ষাক্ষেত্রে এসেছে আমূল পরিবর্তন। এ সময়ে শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে হাজার কোটি টাকার বেশি।

এ সময়ে কী শহর, আর গ্রাম - জেলার সর্বত্র গড়ে ওঠেছে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দৃষ্টিনন্দন ভবন, আধুনিক ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনসহ বিভিন্ন ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে যেন বিপ্লব ঘটেছে! এক কথায় বদলে গেছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেহারা। ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের কারণে প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীরাও আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে চলছে তাল মিলিয়ে। 

বর্তমান সরকারের আমলে শুধু স্কুল-কলেজ নয়, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার অবকাঠামো উন্নয়নও হয়েছে। অধিকাংশ মাদরাসায় নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেটে দুটি দৃষ্টিনন্দন টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ (টিএসসি) স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়াও দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আরও বেশকিছু ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ চলমানও।

এ ব্যাপারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর জানায়, ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। কিছু চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পের বাইরে ভবন সংস্কার, ওয়াশ ব্লক নির্মাণ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য র‌্যাম্প ও সহায়ক ওয়াশ রুম, মূল ফটক ও দেয়াল নির্মাণের কাজ করা হয়েছে।

এছাড়া ভবনগুলোতে আধুনিক ক্লাসরুম, পয়ঃনিষ্কাশন ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা, ব্ল্যাক ও সাদা বোর্ড ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনীয় ও বজ্রনিরোধ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয়েছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিম জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে সিলেটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যুগোপযোগী ও মানসম্মত শিক্ষার প্রসারে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ ও আইসিটি সুবিধাসহ ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, টেন্ডার বিকেন্দ্রীকরণ করায় এখন জেলা থেকে বিভিন্ন কাজের টেন্ডার দেয়া হয়। ফলে আগের মতো টেন্ডার নিয়ে মারামারি, কাড়াকাড়ি হয় না। স্থানীয় এমপি, মন্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা হয়।

নজরুল হাকিম আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবনগুলো নান্দনিক রূপে গড়ে তোলা হচ্ছে। ওয়াশ ব্লক নির্মাণ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য র‌্যাম্প ও সহায়ক ওয়াশরুম, আধুনিক ক্লাসরুম, পয়ঃনিষ্কাশন ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা, ব্ল্যাক ও সাদা বোর্ড ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, নতুন ভবন নির্মাণের পর দায়িত্ব হস্তান্তরের এক বছরের মধ্যে সংস্কার বা মেরামতযোগ্য হলে তাও করে দেয়া হয়। তবে প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে কোনো কিছু নষ্ট হলে সেটা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ সংস্কার করবে।

১০ প্রকল্পে বদলে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চেহারা
শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে জেলা সদরে স্নাতকোত্তর কলেজগুলোর উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেটের এমসি কলেজে ১০তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হয়েছে এর নির্মাণ কাজ।

কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে সিলেটে সবচেয়ে বড় অর্জন দুটি নতুন টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ (টিএসসি) স্থাপন। সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় এ দুটি স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ১৭ কোটি টাকা করে দুটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৪ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ১০০টি উপজেলায় একটি করে টিএসসি নির্মাণ কাজ চলছে। ৫৪০ দিন মেয়াদের এ দুই প্রকল্পের কাজ এর মধ্যে ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

সরকারি কলেজগুলোতে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় সিলেটের জকিগঞ্জ সরকারি কলেজে প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ছয়তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে এ ভবনের কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়।
 
বরিশাল, সিলেট ও খুলনা মেট্রোপলিটন এলাকায় সাতটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় সিলেটে দক্ষিণ সুরমা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নামে দুটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে এ দুই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ছয় তলা বিশিষ্ট সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন কাম প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের জুন মাসে। নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৬ সালের জুন মাসে। পরবর্তীতে ওই ভবন ছয় তলা পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হয়। দুই দফায় নির্মাণ ও সংস্কার কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় আট কোটি টাকা। একই প্রকল্পের আওতায় প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে সাত তলা ভিত বিশিষ্ট দক্ষিণ সুরমা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাত তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে একই সময়ে।

মাদরাসার অবকাঠামো উন্নয়নে এ যাবৎকালে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে। ৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেটের ৩১টি মাদ্রাসায় একটি করে ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। চারতলা বিশিষ্ট প্রতিটি ভবনের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। ৩৬৫ দিন মেয়াদের এ প্রকল্পের কাজ ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে।  চলতি বছরের শেষের দিকে কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ।

আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বড় প্রকল্প হলো প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একযোগে জেলার ৬৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি করে নতুন ভবন নির্মাণ। ৬৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিলেট সদর উপজেলার ছটি এবং বাকি ১২ উপজেলায় ৫৮টি। সিলেট সদর উপজেলার ছটি ভবন নির্মাণে প্রায় চার কোটি টাকা করে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি। বাকি ৫৮টি ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৭৪ কোটি। প্রতিটি ভবনের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা করে। ৫৪০ দিন মেয়াদের এ প্রকল্পের কাজ ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।

এছাড়াও সিলেটের আরও ৬৩টি বিদ্যালয়ে উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ চলছে। বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলার ৬৩টি বিদ্যালয়ের ৬৩টি ভবনের কাজ চলছে। দুই তলা ভবনের চারতলা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করতে প্রতিটি ভবনের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা করে। এ প্রকল্পের কাজ ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।


এদিকে, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার এমসি একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজকে মডেল স্কুলে রূপান্তরিত করতে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে একটি চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১১ সালের মে মাসে এ ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। পরের বছর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই কাজ শেষ করা হয়।

সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (সেসিপ) আওতায় সিলেটের ২৯টি বিদ্যালয়ে চারতলা ভিত বিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছিল প্রায় ২৯ কোটি টাকা। প্রতিটি ভবনের ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা করে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ওই বছরের মে মাসে শেষ হয়েছে।

এছাড়াও বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে ২০১০ সালে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও অগ্রগামী বালিকা বিদ্যালয়ে চারতলা বিশিষ্ট দুটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ভবনের ব্যয় ধরা হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার