ছাত্রদের বিনে পয়সায় খেলা দেখতে মানা!

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের বাইরে হঠাৎ মিছিল, স্লোগান। মিছিল-স্লোগান দিতে থাকলে পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীরা অনেকটা জোর করেই শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয় স্টেডিয়াম এলাকা থেকে। কিন্তু কেন এই মিছিল?

‘জেগেছে ভাই, জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’—জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের বাইরে হঠাৎ মিছিল, স্লোগান। ঘটনা কী? মিছিলটা ছাত্রদের।

তবে এটি কোনো রাজনৈতিক মিছিল নয়। বিনা টিকিটে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট দেখার দাবি জানিয়ে স্টেডিয়ামের বাইরে আওয়াজ তুলেছে সাগরিকা ও পাহাড়তলীর কয়েকটি স্কুলের শ দু-এক ছাত্র।

খেলা দেখার দাবি নিয়ে মিছিল করলেও শেষ পর্যন্ত খুদে দর্শকদের আশা পূরণ হয়নি। স্টেডিয়ামের প্রতিটি গেট ঘুরে বিষণ্ন মনে ফিরতে হয়েছে বাসায়। লাঞ্চের খানিক আগে স্কুলের পোশাক পরে স্কুলছাত্ররা জড়ো হয় স্টেডিয়ামের বিভিন্ন গেটে। 

সাধারণত লাঞ্চের পর স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য দুয়ার উন্মুক্ত করে দেয় বিসিবি। বিনে পয়সায় গ্যালারিতে ঢুকে খেলা দেখে খুদে দর্শকেরা। কিন্তু আজ ব্যতিক্রম। ‘এই গেটে হবে না, যেতে হবে ওই গেটে’—এভাবে তিন গেট ঘুরে তারা আসে জহুর আহমেদের প্রধান গেটে।

পুলিশ ও বিসিবির নিরাপত্তা কর্মীদের অনেক অনুনয়, বিনয় করেও মন গলাতে পারেনি ছাত্ররা। মিছিল-স্লোগান দিতে থাকলে পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীরা অনেকটা জোর করেই শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয় স্টেডিয়াম এলাকা থেকে। মিছিলে ইন্ধন জোগানোর দায়ে স্কুলের পোশাক না থাকা দুজনকে আটকও করে পুলিশ। স্টেডিয়ামের পুলিশ বক্সের ছাউনিতে কিছুক্ষণ রেখে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের।

এমনিতে টেস্টে দর্শকখরা। খাঁ খাঁ করা গ্যালারি বিসিবি স্কুলের ছাত্রদের বিনা টিকিটে খেলা দেখার সুযোগ করে দেয় এ কারণেই। কিন্তু আজ কেন ছাত্রদের খেলা দেখতে দিচ্ছে না বিসিবি? বিসিবির নিরাপত্তাকর্মীদের জানালেন, সিলেট টেস্টে দুবার দর্শক ঢুকে গিয়েছিল মাঠে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ছাত্রদের দুই পক্ষের মারামারি পর্যন্ত হয়েছে। এতে তাঁদের বেশ চাপে পড়তে হয়েছে।

ছাত্ররা সুশৃঙ্খলভাবে খেলা দেখে না, এই অভিযোগে বিনা টিকিটে তাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বিসিবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হোসেন ইমাম বলেন, 'জিম্বাবুয়ে সিরিজে সিলেট ও মিরপুরে ছাত্রদের খেলা দেখতে দেওয়ায় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তিক্ত অভিজ্ঞতা ও সতর্কতাবশত আমরা চট্টগ্রাম টিকিটবিহীন কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না।'

খুদে দর্শকদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলল, 'কয়েকজন বিশৃঙ্খল শিক্ষার্থীদের জন্য সবাইকে কেন বঞ্চিত হতে হবে?' ভুল প্রশ্ন করেনি তারা; মাথা ব্যথা হয়েছে, তাই বলে মাথা কেটে ফেলা কোনো সমাধান নয়। গ্যালারি শূন্য রাখা নয়, গ্যালারির শৃঙ্খলা ঠিক রাখাই নিরাপত্তাকর্মীদের কাজ।