ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৪৩

সুদের ব্যবসা-কর ফাঁকি-জালিয়াতি ড. ইউনূসের আশ্চর্য প্রদীপ! 

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ২২ মে ২০২৩  

ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্বখ্যাত নোবেল বিজয়ীর তকমাধারী অর্থনীতিবিদ। মুনাফাখোর, সুদখোর মহাজন সম্প্রদায়ের জন্য অনুসরণীয়, অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে দরিদ্র, হতদ্ররিদ্র মানুষদের রক্ত চুষে দেশে বিদেশে বিস্তার করেছেন নিজের সাম্রাজ্য, বনে গেছেন হাজার কোটি টাকার মালিক। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমকে এদেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও নামক সুদের ব্যবসা বলেই জানেন এবং চিনেন। তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক গড়েছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই ড. মুহাম্মদ ইউনূসই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সুদের ব্যবসাকে প্রাতিষ্ঠানিক শৈল্পিক রূপ দিয়েছিলেন।    

কেউ একজন বলেছিলেন, এনজিও জিনিসটা এমন যে, রাস্তায় একটি অনাহারী কুকুর পড়ে থাকলে সেটাকেও তুলে নিয়ে যায় তারা। সেটাকে খাদ্য দেয়, চিকিৎসা দেয়- এক সময় মোটাতাজা করে অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়ে পয়সা উসুল করে এই এনজিও সংস্থাগুলো। ড. মুহাম্মদ ইউনূসও তাই করেছিলেন। দরিদ্র, হতদরিদ্র মানুষদের উচ্চসুদে এককালীন ঋণের টাকার লোভ দেখিয়ে সংঘবদ্ধ করে- পরে বিদেশিদের কাছে বিক্রি করেছিলেন। এই দরিদ্র, হতদরিদ্র অসহায় মানুষদের দেখিয়ে তিনি বিদেশ থেকে অনুদান হিসেবে পেয়েছিলেন কোটি কোটি টাকা।

কথা ছিল দরিদ্র, হতদ্ররিদ্র মানুষদের সাবলম্বী করে তুলবেন, সহযোগিতা করবেন। অথচ তা না করে তিনি সেই টাকা উচ্চ হারে সুদে দরিদ্র, হতদরিদ্র মানুষদের দিয়ে তাদের রক্ত চুষে নিয়েছিলেন। গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার ৩৪ থেকে ৫৪ শতাংশের মধ্যে- যা বাংলাদেশের কোনো সরকারি বেসরকারি ব্যাংক স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারে না। গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা কথায় কথায় বলে থাকেন, সুদের টাকার সাথে ঘোড়ায় দৌড়ে পারে না। সত্যিই তাই হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সুদের টাকার দৌড় ঘোড়ার দৌড়কেও হার মানিয়েছে। 

অবশ্য পরে বিদেশিদের কাছ থেকে অনুদান এনে- তা দিয়ে সুদের ব্যবসায় খাটানোর বিষয়টি বুঝতে পারেন বিদেশিরা। তখন তারাও হাত তুলে নিয়েছিলেন, অনুদান দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের উচ্চ হারের সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় অসহায় দরিদ্র, হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনেকেই নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গেছেন অথবা গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে গার্মেন্টেসে কাজ করেছেন কিংবা রিক্সা চালিয়ে তাদের দিন অতিবাহিত করছেন - এমন ঘটনাও অনেক রয়েছে। 
   
নোবল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পেশাগত জীবনে অর্থনীতিবিদ হলেও নোবেল নিয়েছেন শান্তিতে। অর্থনীতিবিদ কিভাবে শান্তিতে নোভেল পেলেন সেটাও ভাবার বিষয়। নোভেল বিজয়ী হিসেবে বিদেশে বক্তৃতা করে তিনি পান কোটি কোটি টাকা। হয়েছেনও হাজার কোটি টাকার মালিক। কিন্তু প্রশ্ন ওঠেছে, দেশ এবং জাতির জন্য তিনি কি করেছেন? জেবরা গ্রামে গবেষণার জন্য পারিবারিক সুদের ব্যবসাকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। শুরু করেছিলেন ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম। এক সময়ে এই দরিদ্র, হতদরিদ্র মানুষদের সাবলম্বী করে তোলার কথা বলে দারস্থ হয়েছিলেন বাংলাদেশ সরকারের কাছেও। সে সময়ে স্বৈরাচারী হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সরকার না বুঝেই তার সুদের ব্যবসাকে বৈধতা দিয়েছিলেন। 

একজন মানুষ বিনা যোগ্যতায়,বিনা পুঁজিতে, বিনা পরিশ্রমে শুধুমাত্র সুদের ব্যবসা, কর ফাঁকি এবং জাল-জালিয়াতি করে কিভাবে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যান- তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ এই ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈধভাবে কেউ হাজার কোটি টাকার মালিক হতেই পারেন। এমন অনেকেই হয়েছেন। কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিভাবে হাজার কোটি টাকার মালিক হলেন,সেটি অত্যন্ত ভৌতিক একটি ব্যাপার! যেভাবে রাতরাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন ড. মুহাম্ম ইউনূস, সে বিষয়টি একটি আলাদিনের অশ্চর্য প্রদীপ হাতে পাওয়ার মতোই বিস্ময়কর ব্যাপার! কিভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস?- সেই বিষয়টিই এই অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে।              
শুধু সুদের ব্যবসাই নয়, এই সুদের ব্যবসার পাশাপাশি সরকারকে আয়কর ফাঁকি, সরকারের টাকা আত্মসাৎ এবং জাল-জালিয়াতি করেই হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন নোবেল বিজয়ীর তকমাধারী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

রাষ্ট্রের ক্ষতি করে, রাষ্ট্রের টাকা আত্মসাৎ করে, রাষ্ট্রের হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়ে নিজের পরিচয়ে বিশ্ববিখ্যাত তকমা লাগিয়েছেন এই নোবেল বিজয়ী ব্যক্তি। তারই সূত্র ধরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলাও দায়ের করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এক হাজার কোটি টাকারও ওপরে কর ফাঁকির মামলা হয়েছে। এই মামলাগুলোর মূল বিষয় হচ্ছে সরকারের কর বা রাজস্ব ফাঁকি। একজন ব্যক্তি আয়কর ফাঁকি এবং জাল-জালিয়াতির মাধ্যমেই অনেক ধনী হয়েছেন, আর তিনি হচ্ছেন এই নোবেল বিজয়ীর তকমাধারী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আসলে তিনি বুঝে গিয়েছিলেন, টাকা থাকলে গ্রুপিং, লবিং করে নোবেলও বোধহয় অর্জন করা যায়!

সরকারের আয়কর বাবদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা দাবি করেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণ ও গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের কাছে। এই প্রতিষ্ঠান দুটির চেয়ারম্যান নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রামীণ কল্যাণ ও গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট—এই দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ২০১২–১৩ থেকে ২০১৬–১৭ কর বছর পর্যন্ত আয়কর বাবদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাওনা প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এই দাবির বিপরীতে গ্রামীণ কল্যাণ ২০১৭ সালে দুটি এবং গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের পক্ষে ২০২০ সালে একটি রিট আবেদনও করা হয়। কথায় বলে চোরের মা’র বড় গলা। সরকারের কর ফাঁকি দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো আবার কর ফাঁকির পক্ষে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতে রিট পিটিশন মামলাও করে! 

১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে জোবরা গ্রামে ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংক শুরু করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে ১৯৮৩ সালে এটি একটি বৈধ এবং স্বতন্ত্র ব্যাংক হিসেবে যাত্রা শুরু করে। তার মানে হচ্ছে, সরকার গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করলো একটি আইনের মাধ্যমে এবং সেখানে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলো ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। ১৯৮৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সরকার গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ নামে একটি অধ্যাদেশ (অধ্যাদেশ নম্বর- ৪৬) জারি করে। সে সময়ে রাষ্ট্র ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলো স্বৈরাচারী সরকার হিসেবে পরিচিত জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। অর্থাৎ গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ জারি করে স্বৈরাচারী হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ড. মুহম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক নামক সুদের ব্যবসাকে বৈধ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। সে সময়ে গ্রামীণ ব্যাংক শুরু হয় মাত্র তিন কোটি টাকা মূলধন দিয়ে। এর মধ্যে বেশিরভাগ টাকা অর্থাৎ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ছিল সরকারের এবং ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ছিল ঋণ গ্রহীতাদের। তার মানে হচ্ছে, গ্রামীণ ব্যাংকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত কোনো টাকা ছিল না। অথচ গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস গড়ে তুলেছেন ইউনূস সেন্টারের নিয়ন্ত্রণাধীন ৪৪টি প্রতিষ্ঠান এবং গ্রামীণ ব্যাংক তথা সরকারের  টাকা আত্মসাৎ করে তিনি এখন হাজার কোটি টাকার মালিক!  

অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে তিনটি। এই ব্যাংক একাউন্ট তিনটি হলো যথাক্রমে:- ১. সাউথ ইস্ট ব্যাংক, (অ্যাকাউন্ট নাম্বার-০২১২১০০০২০০৬১), ২. স্ট্যান্ডার্ট চার্টার্ড ব্যাংক, (অ্যাকাউন্ট নাম্বার- ১৮১২১২৭৪৭০১) এবং ৩. রুপালি ব্যাংক, (অ্যাকাউন্ট নাম্বার-০৪৮৯০১০০০৮০৯৬)। এই তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মধ্যে ২০০০ সালে খোলা সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্টটি (অ্যাকাউন্ট নাম্বার-০২১২১০০০২০০৬১) তার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হিসেবেই প্রতীয়মান হয়েছে। এই অ্যাকাউন্টে ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ১শ’ ১৮ কোটি ২৭ লক্ষ ৭৬ হাজার ৩শ’ ৬৮ টাকা রেমিটেন্স এসেছে। এই রেমিটেন্সের বেশিরভাগ ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ ৯৬ হাজার ৬শ’ ৫২ টাকা এসেছে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। সেই সময়েই একটি রাজনৈতিক দল গঠনেরও প্রয়াস করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।   

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ট্যাক্স ফাইল বিশ্লেষণে ওঠে এসেছে, ২০০৩ সালের পরে নোবেল বিজয়ীর তকমাধারী ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ট্যাক্স ফাইলে ২০০৫-০৬  কর বছরে তিনি সর্বমোট ৯৭ কোটি ৪ লাখ ৬১ হাজার ১৯১ টাকা রেমিটেন্স প্রাপ্তির কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ওই সময়ে তার ব্যক্তিগত সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে রেমিটেন্স প্রাপ্তির পরিমাণ ১১৫ কোটি ৯৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৪ টাকা। অর্থাৎ ওই সময়ে তিনি ১৮ কোটি ৯৪ লাখ ৩৪ হাজার ৮শ’ ৩৫ টাকার রেমিটেন্স প্রাপ্তির তথ্য সরকারকে কর ফাঁকি দেওয়ার লক্ষ্যে তার ব্যক্তিগত ট্যাক্স ফাইলে (কর ফাইলে) গোপন করেছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের ডেবিট অ্যানালাইসিসে ওঠে এসেছে, অপ্রদর্শিত অর্থ সমূহের মূল অংশ তিনি সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অন্য দু’টি অ্যাকাউন্ট, সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ১৫ নম্বর ব্রাঞ্চের ট্র্যাভেল ইন্টারন্যাশনাল লিঃ নামের (অ্যাকাউন্ট নম্বর- ৭৩৩০০০০০৩৩৩৯) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১১ কোটি ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭শ’ ৬৭ টাকা এবং ০০৩৫ নম্বর ব্রাঞ্চের (অ্যাকাউন্ট নম্বর-৯০৩০৩১৬০৯১০) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা স্থানান্তর করেছেন।

সরকারকে কর ফাঁকি দেওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর বছরে তিনি তার ব্যক্তিগত ট্যাক্স ফাইলে নিজস্ব সাউথ ইস্ট ব্যাংকে প্রাপ্ত বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্সের তথ্য গোপন করেছেন। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে তিনি রেমিটেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন ১৫ কেটি ১১ লাখ ৩১ হাজার ৪৭ টাকা। কিন্তু তিনি তার ট্যাক্স ফাইলে প্রদর্শন করেছেন ৯ কোটি ১৪ লাখ ৫৮ হাজার ৪শ’ ৮৯ টাকা। ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট এবং ট্যাক্স বা কর ফাইলের সাথে এখানে পার্থক্য রয়েছে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৭২ হাজার ৫শ’ ৫৯ টাকা। ২০০৮-০৯ কর বছরে তিনি রেমিটেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন ১১ কোটি ৮৩ লাখ ১৪ হাজার ৪শ’ ১০ টাকা। অথচ তিনি তার ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ করেছেন ১০ কোটি ৪০ লাখ ২৪ হাজার ৮শ’ ৩২ টাকা। এখানে তিনি ১ কোটি ৪২ লাখ ৮৯ হাজার ৫শ’ ৭৮ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। ২০০৯-১০ কর বছরে তিনি রেমিটেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন ২০ কোটি ৯৫ লাখ ৫১ হাজার ১শ’ ৯৫ টাকা। তিনি তার ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ করেছেন ১৮ কোটি ৯৯ লাখ ২৮ হাজার ৭শ’ ৩১ টাকা। এখানে তিনি ১ কোটি ৯৬ লাখ ২২ হাজার ৪শ’ ৬৫ টাকার তথ্য গোপন করেছেন।

২০১০-১১ কর বছরে তিনি রেমিটেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন ৮ কোটি ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ২শ’ ৪ টাকা। অথচ তার ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ করেছেন ৬ কোটি ৬০ লাখ ৪৪ হাজার ৯২ টাকা। এখানে তিনি ১ কোটি ৫৮ লাখ ২১ হাজার ১শ’ ১২ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। ২০১১-১২ কর বছরে তিনি রেমিটেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন ৫ কোটি ৯১ লাখ ৫ হাজার ৫শ’ ৮৬ টাকা। আর ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ করেছেন ৪ কোটি ৬৫ লাখ ৩৬ হাজার ৫শ’ ৭২ টাকা। এখানে তিনি ১ কোটি ২৫ লাখ ৬৯ হাজার ১৪ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। ২০১২-১৩ কর বছরে তিনি রেমিটেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন ৮ কোটি ৩৭ লাখ ২ হাজার ৭৭ টাকা। তিনি তার ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ করেছেন ৬ কোটি ৫০ লাখ ৬৬ হাজার ৬শ’ ৬৫ টাকা। এখানে তিনি ১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৫ হাজার ৪শ’ ১২ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। ২০১৩-১৪ কর বছরে তিনি রেমিটেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন ১০ কোটি ৫৫ লাখ ৪২ হাজার ৩শ’ ৩৬ টাকা। তিনি তার ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ করেছেন ৭ কোটি ৯৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫শ’ ৪৪ টাকা। এখানে তিনি ২ কোটি ৫৬ লাখ ৮২ হাজার ৭শ’ ৯৩ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। ২০১৪-১৫ কর বছরে তিনি রেমিটেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন ৭ কোটি ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ২শ’ ৭ টাকা। অথচ ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ করেছেন ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬১ হাজার ৫শ’ ৯৮ টাকা। এখানেও তিনি ১ কোটি ৯৭ লাখ ৯৫ হাজার ৬শ’ ৯ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। 

২০০০ সালের পর থেকে এমন প্রতিটি কর বছরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশ থেকে রেমিটেন্স প্রাপ্ত হয়ে কোটি কোটি টাকার তথ্য গোপন করে সরকারের কর ফাঁকি দিয়েছেন। ২০০৫-০৬ কর বছর থেকে শুরু করে ২০২২-২৩ কর বছর পর্যন্ত সরকারকে কর ফাঁকি দেওয়ার লক্ষ্যে তিনি ১৮ কোটি ৯৪ লাখ ৩৪ হাজার ৮শ’ ৩৫ টাকা রেমিটেন্সের তথ্য গোপন করেছেন। এই কর ফাঁকির টাকা দিয়েই হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন নোবেল বিজয়ীর তকমাধারী ড. মুহাম্মদ ইউনূস!

এখানেই শেষ নয়,গল্প এখন যাচ্ছে তার অর্থ আত্মসাতের জাল-জালিয়াতির দিকে। তার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দেখলেই বোঝা যায়, তার কাছে কোথা কোথা থেকে কি কি পরিমাণ টাকা এসেছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, ড. ইউনূস বিদেশে বিভিন্ন সেমিনার বা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে যে টাকাগুলো পেতেন, তা দিয়ে তিনি গঠন করেছিলেন ইউনূস ট্রাস্ট। ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার জন্য তিনি এই টাকাগুলো সব ট্রাস্টে ট্রান্সফার করেন। এই ট্যাক্স ফাঁকির কারণেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়, মামলা হওয়ার পর থেকেই তিনি এই ট্রাস্টে আর টাকা রাখেন না। এভাবেই জাল-জালিয়াতি করে,সরকারের কর ফাঁকি দিয়ে এবং সরকারে অর্থ আত্মসাৎ করে তিনি হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কর ফাঁকি দেওয়ার জন্যই তিনি এসব জাল-জালিয়াতি করেছেন। তিনি তার ব্যাংক হিসাবে রেমিটেন্স আসার অঙ্কে কর ফাঁকির বিপুল পরিমাণ অর্থ জাল-জালিয়াতি করেছেন। তিনি ১১৫ কোটি টাকার মতো রেমিটেন্স আনলেও ট্যাক্স ফাইলে তিনি ১৮ কোটি টাকার উপরে না দেখিয়েও এক ধরনের জাল-জালিয়াতি করেছেন। প্রশ্ন ওঠেছে, একজন নোবেল বিজয়ী ব্যক্তি এ ধরনের জাল-জালিয়াতি করেন?   

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো বিশ্লেষণে ওঠে এসেছে, তার সব ব্যাংক আ্যকাউন্টে বিভিন্ন সময়ে বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা রেমিটেন্স এসেছে। নির্বাচন মৌসুমগুলোতে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে এই রেমিটেন্সের টাকার প্রবাহ সবচেয়ে বেশি। কিন্তু প্রশ্ন ওঠেছে, ড.মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্টগুলোতে নির্বাচনী মৌসুমে বিদেশ থেকে যে অর্থ এসেছে, তা কোন কোন খাতে ব্যয় হয়েছে এবং কেনইবা এসব অর্থ এসেছে?

অনুসন্ধানে মিলেছে কিছু প্রশ্নের উত্তর। নির্বাচনী মৌসুমে যখন বিদেশ থেকে অধিক পরিমাণে অর্থ এসেছে, সেসব অর্থ তিনি সরকার বিরোধী চক্রের বিভিন্ন নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যয় করেছেন এবং কিছু অর্থ গচ্ছিত রেখে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এই ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিদেশি যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে এসব অর্থ রেমিটেন্স হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে, সে প্রতিষ্ঠাগুলো হচ্ছে, যথাক্রমে:- ১. দ্য লন্ডন স্পিকার ব্যুরো লি:- লন্ডন- ইউকে, ২. দ্য লন্ডন স্পিকার ব্যুরো- ওমান, ৩.এনপিও আর্থ আইডেন্টি প্রজেক্ট-জাপান, ৩. থিঙ্কিং হেডস গ্রুপ- স্পেন, ৪. থিঙ্কিং হেডস আমেরিকাস এলএলসি- ইউএসএ, ৫.আমেরিকান প্রোগ্রাম ব্যুরো আইএনসি- ইউএসএ, ৬. দ্য ওয়াকার অ্যাজেন্সি- ইউএসএ, ৭. রোনাল্ড জোন্স অব জ্যানিস জোনস ডিবিএ- সোলানা বিচ-সিএ, ৮. এসএমই এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ এলএলসি- ইউএসএ, ৯. ওয়াটামি ফাউন্ডেশন- জাপান এবং ১. চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাংক, চীন।

শুধু সুদের ব্যবসার টাকা এবং বিদেশ থেকে অনুদানের অর্থ নিয়েই থেমে থাকেননি ড. মুহম্মদ ইউনূস। তিনি দেখলেন, গ্রামীণ ব্যাংক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, অর্থাৎ গ্রামীণ ব্যাংক রাষ্ট্রের। তিনি শুধুমাত্র এখানে একজন চাকুরিজীবী, এমডি বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাহলে কি করণীয়? সুদের ব্যবসার যে মডেল আবিষ্কার করে তিনি বৈধতা নিয়ে হাজার কোটি টাকা বানালেন, সে টাকাতো সব তার নয়! সবইতো রাষ্ট্রের। তাই তিনি তখন নিজের অর্থলোভ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতির মাত্রা বাড়িয়ে দিলেন। গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের ফান্ড থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড (এসএএফ) এবং সোশ্যাল ভেনচার ক্যাপিটাল ফান্ড (এসভিসিএফ) নামে দুটি ফান্ড গঠন করলেন। এই দুই ফান্ডের টাকা দিয়ে তিনি একের পর এক কোম্পানি তৈরি করতে শুরু করলেন। তার নিজ মালিকানায় প্রতিষ্ঠাগুলোর চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি এমন ৪৪টি কোম্পানির মালিক হয়েছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের ফান্ড হতে গঠিত এসএএফ এবং এসভিসিএফ ফান্ড দুটি হতে গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ কল্যাণ এবং গ্রামীণ টেলিকমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থায়ন করেন এবং এসব অর্থায়নে ব্যাপক দুর্নীতি করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এসব প্রতিষ্ঠান নিজ মালিকানায় করে সরকার তথা গ্রামীণ ব্যাংকের সাথে জাল-জালিয়াতি এবং অর্থ আত্মসাৎ করতে শুরু করলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

১৯৯৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর গ্রামীণ ব্যাংকের ৩৪ তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাতাগোষ্ঠীর প্রাপ্ত অনুদান এবং ঋণের অর্থ দিয়ে গঠিত সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড (এসএএফ) গঠন করা হয়। এই সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ডের (এসএএফ) অর্থ দিয়ে ১৯৯৬ সালের ২৫ এপ্রিল গ্রামীণ ব্যাংকের ৪২তম বোর্ড সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ও কর্মীদের কল্যাণে ‘কোম্পানি আইন-১৯৯৪’-এর আওতায় গ্রামীণ কল্যাণ নামক একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়। গ্রামীণ কল্যাণ নামক কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠার পর গ্রামীণ ব্যাংকের সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড হতে কোম্পাটিতে মোট ৬৯ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়। পরে এই সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ডের (এসএএফ) অর্থ দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি তৈরি করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড (এসএএফ) থেকে ১৩ টি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি তৈরি এবং এসব প্রতিষ্ঠানে অর্থায়ন করা হয়। সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ডের (এসএএফ) অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এসব প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, যথাক্রমে:- ১. গ্রামীণ টেলিকম লিঃ, ২. গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশন লিঃ, ৩. গ্রামীণ শিক্ষা, ৪. গ্রামীণ নিটওয়্যার লিঃ, ৫. গ্রামীণ ব্যবসা বিকাশ, ৬. গ্রামীণ আইটি পার্ক, ৭. গ্রামীণ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, ৮. গ্রামীণ সলিউশন লিঃ, ৯. গ্রামীণ ডানোন ফুডস লিঃ, ১০. গ্রামীণ হেলথকেয়ার সার্ভিসেস লিঃ, ১১. গ্রামীণ স্টার এডুকেশন লিঃ, ১২. গ্রামীণ ফেব্রিক্স এন্ড ফ্যাশন লিঃ এবং ১৩. গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন।

গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থায়নে সোশ্যাল ভেনচার ক্যাপিটাল ফান্ড (এসভিসিএফ) থেকে মোট ১৫ টি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি তৈরি এবং এসব প্রতিষ্ঠানে অর্থায়ন করা হয়। গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থায়নে সোশ্যাল ভেনচার ক্যাপিটাল ফান্ড (এসভিসিএফ) থেকে প্রতিষ্ঠিত এসব প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, যথাক্রমে:- ১. গ্রামীণ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিঃ, ২. গ্রামীণ সল্যুশন লিঃ, ৩. গ্রামীণ উদ্যোগ, ৪. গ্রামীণ বাইটেক লিঃ, ৫. গ্রামীণ সাইবারনেট লিঃ, ৬. গ্রামীণ নিটওয়্যার লিঃ, ৭. গ্রামীণ আইটি পার্ক, ৮. টিউলিপ ডেইরি এন্ড প্রোডাক্ট লিঃ, ৯. গ্লোব কিডস ডিজিটাল লিঃ, ১০. গ্রামীণ সাইবারনেট লিঃ, ১১. গ্রামীণ স্টার এডুকেশন লিঃ, ১২. রফিক আটোভ্যান ম্যানুফ্যাকচার লিঃ, ১৩.গ্রামীণ ইনফরমেশন হাইওয়ে লিঃ, ১৪. গ্রামীণ ব্যবসা সেবা লিঃ এবং ১৫. গ্রামীণ সামগ্রী।

 গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প আমল এবং সূচনালগ্ন থেকে দাতাগোষ্ঠীর প্রাপ্ত অনুদানের অর্থ দিয়ে সোশ্যাল ভেনচার ক্যাপিটাল ফান্ড (এসভিসিএফ) গঠন করা হয়। ১৯৯২ সালের ৭ অক্টোবর গ্রামীণ ব্যাংকের ৩১তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯৯৪ সালে গ্রামীণ ফান্ড নামক একটি লিমিটেড কোম্পানি গঠন করে এসভিসিএফ ফান্ডের ৪৯.১০ কোটি টাকা (৪৯ কোটি ১০ লাখ টাকা) গ্রামীণ ফান্ড নামক লিমিডেট কোম্পানিতে স্থানান্তর করা হয়। মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল অনুযায়ী, গ্রামীণ কল্যাণের ৯ সদস্যের পরিচালনা পরিষদের ২জন সদস্য গ্রামীণ ব্যাংক হতে মনোনয়ন দেয়ার বিধান ছিল। এছাড়াও উল্লেখ ছিল যে, গ্রামীণ কল্যাণের মনোনীত চেয়ারম্যান হবেন গ্রামীণ ব্যাংক হতে মনোনীত প্রতিনিধি। কিন্তু ২০০০ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ কল্যাণের পরিচালনা পরিষদে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিনিধি থাকলেও ২০২১ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
 কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের প্রত্যেকটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, গ্রামীণ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি এই কোম্পানিগুলোর এমডি বা চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন। কিন্তু তা না করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সবগুলো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব তিনি নিজেই নিয়ে নিলেন। কিন্তু সবগুলো প্রতিষ্ঠানের মালিক বনে গেলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায়। সরকারের সবগুলো প্রতিষ্ঠানই আত্মসাৎ করলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুধু তাই নয়, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে নজিরবিহীন অনিয়ম, দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান হলো গ্রামীণ টেলিকম এবং এই গ্রামীণ টেলিকমটাই হলো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সোনার ডিম পাড়া মুরগি।

 সেই গ্রামীণ টেলিকমের দুর্নীতি নিয়ে এখনও মামলা চলছে। নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের ফান্ড থেকে তার সহযোগী অন্য প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তরের অভিযোগের কারণে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের লভ্যাংশ নিয়ে মামলার প্রেক্ষিতে গ্রামীণ টেলিকমের এই দুর্নীতির তথ্য বেড়িয়ে আসে। অর্থাৎ সরকারের টাকা আত্মসাৎ করার পর প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ঠকিয়ে তাদের অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কিন্তু কেঁচো খুড়তে বেড়িয়ে এলো সাপ। গ্রামীণ টেলিকমের দুর্নীতির খবর পেয়ে গেলো দুদক। শুরু হলো দুদকের অনুসন্ধান, মামলা। উল্লেখ্য যে, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির মুনাফার অংশ ৫ শতাংশ শ্রমিকের অংশগ্রহণ তহবিল গঠনসহ লভ্যাংশ ২০০৬ সাল থেকে তা শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন করার কথা ছিল। কিন্তু সেই লভ্যাংশ শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন না করায় শ্রম আদালত ও হাইকোর্টে মামলা করেন তারা। লভ্যাংশের অর্থ প্রদানের দাবি নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মোট ১১০টি মামলা হয়। এই ১১০টি মামলার মধ্যে ১০৪টি শ্রম আদালতে ও ৬টি উচ্চ আদালতে করা হয়।

 অতিমাত্রায় অর্থলোভী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের টাকা আত্মসাতের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো গ্রামীণ নিটওয়্যার লিমিটেড এবং গ্রামীণ ফ্রেব্রিকস এন্ড ফ্যাশন। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের জন্য কাঁচামাল কেনা হলেও এসব কাঁচামাল ব্যবহার করে কোনো পণ্য উৎপাদন হয় না। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে কাঁচামাল কেনার অর্থ ব্যয় দেখিয়ে এই অর্থও আত্মসাৎ করছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটা থেকেই বোঝা যায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস মূলত একজন অর্থলোভী ব্যক্তি।

 ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি নামেও তার একটি অপ্রদর্শিত এজেন্সি রয়েছে। এই ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি একটি সিকিউরড ওভার ড্রাফট (এসওডি) অ্যাকউন্টে পরিচালিত হয়। ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি প্রতিষ্ঠানটি একটি ভৌতিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে কোথা থেকে টাকা আসছে, টাকা কোথায় যাচ্ছে, টাকা কেন আসছে, কেন যাচ্ছে- এ সম্পর্কে কেউ কোনো তথ্য দিতে পারে না। এই আ্যকাউন্টটির একমাত্র তথ্যদাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই থেকেই বোঝা যায়, মূলত এই প্রতিষ্ঠানটি এবং এই প্রতিষ্ঠানটির অর্থ ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার হটানোর অংশ হিসেবেই পেয়ে থাকেন এবং ব্যয় করে থাকেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এই প্রতিষ্ঠানটির অর্থ ড. মুহাম্মদ ইউনূস সন্ত্রাসী ও জঙ্গি বাহিনী থেকে পাচ্ছেন এবং তা সন্ত্রাসী ও জঙ্গি তৎপরতার জন্য সে অর্থ ব্যয় করছেন।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার