সিলেট নগরীতে ‘মানবতার দেয়াল’ 

নগরীর দেয়ালে দেয়ালে হয় দেয়াল লিখন, না হয় দেয়ালগুলো থাকে পোস্টারে ঠাসা। কিন্তু নগরীর মিরের ময়দান মোড়ের এ দেয়ালটি ছড়াচ্ছে এক অন্যরকম আবেদন। সমাজের অবহেলিত মানুষের জন্য মানবিকতার বার্তা নিয়ে এসেছে দেয়ালটি।

সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্গত ১ নম্বর ওয়ার্ডের মিরের ময়দানের এ দেয়ালে টানানো রয়েছে কয়েকটি হ্যাঙ্গার। যেখানে রাখা আছে বেশ কিছু কাপড়চোপড়, আছে শীতবস্ত্রও। সমাজের বিত্তবানরা এখানে কাপড়গুলো রেখে গেছেন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও দরিদ্রদের সেবার জন্য। এখান থেকে দরিদ্ররাও নিজেদের প্রয়োজনমত বস্ত্র নিচ্ছেন নিজেদের ব্যবহারের জন্য। এজন্য তাদের কোন অর্থও দিতে হচ্ছে না।

আর্তমানবতার সেবায় সিলেটে কাজ করে যাওয়া সামাজিক সংগঠন ‘ইয়ুথ স্টাফ সিলেট’ এর উদ্যোগে ‘আমাদের মানবতার দেয়াল’ এর যাত্রা শুরু হল মঙ্গলবার। ১ নম্বর ওয়ার্ডে মিরের ময়দান পয়েন্টে শুরু হওয়া এ মানবিক উদ্যোগটি ইয়ুথ স্টাফের মাধ্যমেই পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে দেয়া হবে সিলেটে নগরীর সবক’টি ওয়ার্ডের দেয়ালে দেয়ালে। 

মঙ্গলবার মিরের ময়দান পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়। সদ্য উদ্বোধন হওয়া ‘আমাদের মানবতার দেয়ালটিতে’ লেখা রয়েছে ‘বিত্তবানরা আপনার অপ্রয়োজনীয় বস্ত্র এখানে রেখে যান, হতদরিদ্ররা আপনার প্রয়োজনীয় বস্ত্র এখান থেকে নিয়ে যান।’

নজরকাড়া উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে ইয়ুথ স্টাফ সিলেট। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, নারী উদ্যোক্তা ফারমিস আক্তার, শিক্ষানুরাগী সামছুর রহমান, ইয়ুথ স্টাফ সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. তানভীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন অপু, উপদেষ্টা সমাজসেবক আবুল হাসনাত সোহাগ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিলেট জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়া, ইয়ুথ স্টাফ সিলেটের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল মোত্তাকিন এলাহী চৌধুরী, চিত্রশিল্পী সাজু আহমেদসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষজন। সকলেই এই প্রশংসনীয় উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

প্রশংসা করে বক্তারা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এমন মানবিক উদ্যোগ ব্যতিক্রম ও নজরকাড়া। আর খুব সহজেই মানবতার দেয়ালটি দরিদ্র মানুষের বস্ত্রের প্রয়োজন মেটাতে ভূমিকা রাখবে। তবে দরিদ্রদের প্রতি অনুরোধ দেয়ালের হ্যাঙ্গার থেকে কেউ যেনো নিজের প্রয়োজন ছাড়া কাপড় না নেন। কেননা এর মাধ্যমে অন্যজন কাপড়প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে।’

এদিকে ‘আমাদের মানবতার দেয়াল’ উদ্বোধনের হওয়ার পর সেখানে সমাজের বিত্তবানদের বিভিন্ন রকমের কাপড় ঝুলিয়ে দিয়ে যেতে দেখা গেছে। আর দরিদ্ররা সেখান থেকে নিজেদের প্রয়োজনমতো কাপড় নিয়ে যাচ্ছেন। কারোরই কোন তদারকির প্রয়োজন পড়ছেনা। কোন সিরিয়ালের প্রয়োজন পড়ছে না।