চশমাপরা হনুমানের টিকে থাকার যুদ্ধ
সিলেট সমাচার
প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০
বাংলাদেশে ৩ প্রজাতির হনুমানের মধ্যে অন্যতম সুন্দর হনুমান হচ্ছে চশমাপরা হনুমান। এদের চোখের চারপাশে গোলাকার বৃত্তের মতো সাদা রং থাকে বলে এদের ‘চশমাপরা’ হনুমান বলে। তবে শরীরের বেশিরভাগ অংশই কালো রঙের।
ঘন চিরসবুজ বনের বাসিন্দা নিরামিষভোজী চশমাপরা হনুমান পাতা, ফুল ও ফল পোকামাকড় খায়। এরা দল নিয়ে চলাফেরা করে, সে দলে অনেকগুলো মেয়ে থাকে এবং দলের নেতৃত্বে থাকে এক শক্তিশালী পুরুষ। পুরুষটিই প্রজনন বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে। এ প্রাণি সাধারণত শব্দ করে কম। বিপদের সম্মুখীন হলে ভয়ংকর শব্দ করে থাকে, যেটাকে অ্যালার্ম কল বলা হয়ে থাকে।
চশমাপরা হনুমান বর্তমানে মহা বিপন্ন তালিকাভুক্ত প্রাণি। ২০১৫ সালের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইইউসিএন এ প্রাণিকে পৃথিবীব্যাপী বিপন্ন এবং বাংলাদেশে মহাবিপন্ন হিসেবে উল্লেখ করে। তবে আশার কথা হচ্ছে, মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া, আদমপুর, পাথারিয়া ও সাগরনালবনসহ হবিগঞ্জের দুইটি বনে প্রায় ৪০০ চশমাপরা হনুমান প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে এখনো টিকে আছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একদল গবেষকের দুই বছরের গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. হাবিবুন নাহারের তত্ত্বাবধানে যুক্তরাজ্যের রাফর্ড ফাউন্ডেশনের আর্থিক অনুদানে একদল গবেষক মৌলভীবাজারের লাউয়াছাড়া, আদমপুর, পাথারিয়া এবং হবিগঞ্জের সাতছড়ি ও রেমা-কালেঙ্গা বনে দুই বছরব্যাপী (২০১৮- ২০১৯) বিপন্ন এই প্রাণির সংখ্যা জরিপ করেছেন। জরিপে মহাবিপন্ন এই প্রাণিকে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যের প্রথম ধাপ হিসেবে তাদের বর্তমান অবস্থা এবং কমে যাওয়ার কারণ নিয়ে গবেষণা চালানো হয়।
গবেষক দলের প্রধান তানভীর আহমেদ জানান, এ গবেষণায় সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের পাঁচটি বনে ৩৬টি ভিন্ন ভিন্ন দলে মোট ৩৭৬টি চশমাপরা হনুমান সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সাগরনাল বনেও চশমাপরা হনুমান পাওয়া গেছে। যদিও অনুদানের সীমাবদ্ধতার কারণে ওই বনে হনুমানের সংখ্যা জরিপ করা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে ধারণা করা হচ্ছে, এই বনে তিন থেকে চারটি দলে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫টি চশমাপরা হনুমান থাকতে পারে। সুতরাং কেবল সিলেট বিভাগেই প্রায় ৪০০ চশমাপরা হনুমানের বসবাস।
তিনি আরও জানান, গবেষণা চলাকালে সবচেয়ে বেশি চশমাপরা হনুমানের দেখা মেলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছাড়া জাতীয় উদ্যানে। সেখানে ১০টি দলে মোট ১২৬টি চশমাপরা হনুমানের দেখা মিলেছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য ও মৌলভীবাজারের বড়লেখার উপজেলার পাথারিয়া সংরক্ষিত বন। এ গবেষণা থেকে বুঝা যাচ্ছে বর্তমানে বাংলাদেশে চশমাপরা হনুমানের সংখ্যা আগের ধারণার থেকে ভাল আছে। যদিও বিভিন্ন কারণে এ সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে।
গবেষক দলের সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের ওয়ালস ইউনিভার্সিটির গবেষক এসপি গিটিন্স ও বাংলাদেশ বনবিভাগের বন্যপ্রাণিবিদ এ ডব্লিউ আকন্দের গবেষণা অনুযায়ী ১৯৮২ সালে বাংলাদেশে চশমাপরা হনুমানের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৩০০টি। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফরিদ আহসান তার এমফিল গবেষণায় বাংলাদেশে এ হনুমানের সংখ্যা উল্লেখ করেছিলেন ১০৫০টি। কিন্তু ২০০৩ সালে ভারতের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে চশমাপরা হনুমানের সংখ্যা ১০০টিরও কম যার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক হনুমানের সংখ্যা ৫০টিরও কম।
এর মানে দাঁড়ায়, তার আগের তিন প্রজন্মে (প্রতি প্রজন্ম ১০-১২ বছর) চশমাপরা হনুমানের সংখ্যা পৃথিবীব্যাপী ৫০ শতাংশ কমলেও বাংলাদেশে ৮০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। যদিও ১৯৮২ এবং ১৯৮৪ সালের হিসাবের সঙ্গে বর্তমানের হিসাব মেলালে ২০০৩ সালে উল্লেখিত বাংলাদেশে চশমাপরা হনুমানের সংখ্যাকে ‘উল্লেখযোগ্যভাবে কম মনে করছেন গবেষকরা।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) কর্তৃক ২০১৫ সালে প্রকাশিত লাল তালিকা বইয়ে বাংলাদেশে চশমাপরা হনুমানের বর্তমান সংখ্যা উল্লেখ না করলেও বলা হয়, এই প্রজাতির সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং মহাবিপন্ন প্রাণি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অন্যদিকে ২০০৮ সাল থেকেই চশমাপরা হনুমান পৃথিবীব্যাপী বিপন্ন প্রাণি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে আইইউসিএন।
অন্যদিকে দেশে চশমাপরা হনুমানের সংখ্যা নির্ণয়ে আগে কখনোই মাঠ পর্যায়ে বিজ্ঞানভিত্তিক জরিপ চালানো হয়নি, তাই সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে বাংলাদেশের কোনো বনে বর্তমানে কি পরিমাণ চশমাপরা হনুমান টিকে আছে সে তথ্য সঠিকভাবে নিরূপণের জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। সিলেটে বিভাগে (মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ) এর অবস্থা ভাল থাকায় এখানেই প্রথম জরিপ চালানো হয়। তবে এসব বনেও আগের মত চশমাপরা হনুমান দেখা যায় না। নানা কারণেই এরা বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. হাবিবুন নাহার বলেন, চশমাপরা হনুমানের মাথা ও শরীরের দৈর্ঘ্য সাধারণত ৫৩ সেমি এবং লেজের দৈর্ঘ্য ৭৬ সেমি। চশমাপরা হনুমান কমে যাওয়ার প্রধান কারণ বনভূমি উজাড় হওয়া। যার ফলে প্রাণিদের বাসস্থান এবং খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও বনের ভেতর রাস্তা তৈরি করে এবং গাছ কেটে বনকে বিভিন্ন ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে- বনের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন নেওয়া। এর ফলে সব ধরনের প্রাণির ক্ষতি হচ্ছে। ২০১৬ সালে লাউয়াছড়া ও সাতছড়িতে ৪টি চশমাপরা হনুমান মারা গেছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। এখনই এদের রক্ষায় গুরুত্ব না দিলে একসময় এরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
চশমাপরা হনুমান কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে গবেষক তানভীর আহমেদ জানান, বিষয়টি মানবকেন্দ্রিক ও বেশ জটিল। বনভূমির পরিমাণ তো কমেছেই, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও প্রাকৃতিক ফলজ বন কেটে কাঠের গাছ লাগানো হয়েছে। যার ফলে ওই এলাকার প্রাণিদের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে এবং তারা বনের বাইরে খাদ্যের খোঁজে লোকালয়ে চলে আসছে। অবৈধভাবে সংরক্ষিত বন থেকে নিয়মিত বাঁশ ও জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করা হয়। সেই সঙ্গে মৌলভীবাজারের আদমপুর, পাথারিয়া এবং সাগরনাল বনে অবৈধ শিকার ও বাণিজ্যের কারণে এ হনুমানের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে।
চশমাপরা হনুমান প্রকৃতির জন্য খুবই উপকারী জানিয়ে তিনি বলেন, এদের খাদ্যের ৪৭ শতাংশ বিভিন্ন গাছের পাতা এবং ১৪ শতাংশ ফল ও বীজ। খাদ্য গ্রহণ শেষে ফলের বীজ বনের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিতে এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যা মূলত বনকে নতুন জীবন দান করে। তাই এ হনুমান বিপন্ন হলে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বনায়নের জন্য মারাত্মক হুমকি হবে।
এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) আবদুল ওয়াদুদ জানান, বনের ভেতরের রাস্তাঘাট নিয়ে আমরা এরই মধ্যে সড়ক ও জনপথসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছি। সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। এত সতর্কার মধ্যেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে চোরাকারবারিরা যে সক্রিয় নেই তা বলা যাবেনা, তবে আমরা আমাদের স্বল্প জনবল নিয়েও আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
- গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: উদ্ধার কাজে দুই প্লাটুন বিজিবি
- ১৭ বছর পর যাত্রীভর্তি ফ্লাইট নিয়ে নারিতা যাচ্ছে বাংলাদেশ বিমান
- ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে চোখ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী
- সিলেটের মাঠে হ্যাটট্রিক হারে সিরিজ হাতছাড়া বাংলাদেশের
- অভিবাসীদের জন্য ভালো সুযোগ দিচ্ছে ইউরোপের যে দেশে
- বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাচন : ৩ পদে মনোনয়ন দিলেন ২২ প্রার্থী
- শাবি উপাচার্যের তথ্য ব্যবহার করে অর্থ চেয়ে সক্রিয় প্রতারকচক্র
- সিলেটে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
- এসআইইউ পরিদর্শনে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল
- জুড়ীতে হচ্ছে পুর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর, সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন
- পরকীয়ার জের, সুনামগঞ্জে বেড়াতে নিয়ে ছুরিকাঘাতে স্ত্রীকে খুন
- ইসরায়েলের সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্য বন্ধ
- নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হলেন লিয়াকত শাহ ফরিদী
- পরিচয় মিলেছে মাধবপুরের দুর্ঘটনায় নিহত ৫ জনের
- শাবিপ্রবিতে শিকড়ের দুই দিনব্যাপী পুনর্মিলনী শুরু
- ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির লাশ ঢাকায়
- দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে এবার আসছে ‘কৃষ ফোর’
- বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস আজ
- ১২ কেজি এলপিজির দাম কমে ১৩৯৩ টাকা
- সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা বৃষ্টি বাড়ার আভাস
- সিলেটসহ সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় রোববার থেকে খোলা
- থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা: প্রধানমন্ত্রী
- সিলেটে ২৭৫ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ, আটক ২
- ওসমানীনগরে স্কুল ছাত্রীকে যৌন হয়রানী, অভিযুক্ত গ্রেফতার
- সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব : প্রধান বিচারপতি
- শ্রমিকের পাশে সিলেট সম্মিলিত নাট্য পরিষদ
- চা বাগানের প্রবেশমুখ থেকে মাদক সহ আটক ২
- নবীগঞ্জে শিলাবৃষ্টিতে ২২০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতি
- শ্রীমঙ্গলে মহান মে দিবসে চা শ্রমিক সমাবেশ ও আলোচনা সভা
- মিল্টন সমাদ্দার আটক, পৃথক তিন মামলা
- সিলেটের শাহপরাণে পুলিশের জালে দুই কারবারি, মাদকদ্রব্য জব্দ
- মাধবপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
- পীরের বাজারে কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ সংঘর্ষে আহত ৬
- কানাডায় উচ্চশিক্ষা: সিলেটিদের যা জানা জরুরি
- খেলাধুলাও বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে উচ্চ করেছে : শফিক চৌধুরী
- সিলেট নগরীতে চোরাই মোটরসাইকেলসহ যুবক আটক
- এপ্রিলের গরমে সিলেটের জনজীবনে অস্বস্তি
- চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সম্পাদক ডিপজল
- ৩ দিনের হিট অ্যালার্টের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর
- এমপি হাবিব’র উদ্যোগ : প্রত্যেক ইউনিয়নে হচ্ছে মিনি স্টেডিয়াম
- পাগলা মসজিদের ৯ দানবাক্সে ২৭ বস্তা টাকা
- একটি মহল দেশের উন্নয়ন চোখে দেখে না : এমএ মান্নান
- সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি না করানোর নির্দেশ
- জাউয়া বাজারে ১৪৪ ধারা জারি
- সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা বৃষ্টি বাড়ার আভাস
- বিশ্বনাথে মেয়র ও কাউন্সিলরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১০
- সিলেটে ভারতের কাছে বাংলাদেশের নারীদের হার
- ৮০% পাকলেই হাওরের ধান কেটে ফেলার পরামর্শ কৃষি অধিদপ্তরের
- কৃষি খাতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান সিসিক মেয়রের
- পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে জিম্বাবুয়ে দল