• রোববার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ৯ ১৪৩০

  • || ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
পুলিশের প্রচেষ্টায় মা-বাবার কাছে ফিরলেন সুমি দক্ষিণ আফ্রিকায় গুলিতে বিশ্বনাথের কিশোর নিহত সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রধান আসামি বাবুর হাইকোর্টে জামিন জকিগঞ্জে পিকআপ-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়া শিশু উদ্ধার, পিতাসহ গ্রেফতার ৪
৫২

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় আনারসের বাম্পার ফলন

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ৮ জুন ২০২৩  

ভারত সীমানার কাঁটাতার ঘেঁষে গড়ে ওঠা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের গ্রাম আশাউড়া। এই গ্রাম আনারসের গ্রাম হিসেবেই পরিচিত। গ্রামের ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে ছোট-বড় টিলায় সারি করে লাগানো আনারস গাছ। বাংলাদেশের ভেতরে থাকা অন্তত একশত টিলায় এ বছর চাষ হয়েছে আনারস। চাহিদা থাকায় ও অধিক উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশে টিলা সংখ্যা কম হওয়ায় আনারস চাষে ব্যবহার করা হচ্ছে ভারত সীমানায় থাকা টিলাগুলোও। ভারতের কাছ থেকে জায়গা লিজ নিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে আনারস চাষ করছেন বাংলাদেশের চাষিরা। গ্রামের সড়কের পাশে কিংবা বাসা বাড়ির আঙিনায় আর কিছু না পেলেও আনারস গাছে দেখা মিলে সহজেই।

অধিক মিষ্টি ও রসালো হওয়ায় আশাউরার আনারসের খ্যাতি পুরো সুনামগঞ্জ জুড়ে। প্রত্যেক বছর জেলার মানুষ অপেক্ষায় থাকেন কবে আশাউরার আনারস বাজারে আসবে। তাই এই আনারস বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পরিপক্ক আনারস সংগ্রহ করছেন তারা। এরপর বাগান থেকে সরাসরি চলে আসে জেলার বাজারে। সারাজেলার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও যাচ্ছে আনারস। স্থানীয় বাসিন্দা আজমত আলী বলেন, আমাদের এলাকার আবহাওয়া ও মাটি আনারসের জন্য উপযোগী। তাই আমাদের এলাকা আনারসের জন্য বিখ্যাত। সবাই আনারসের গ্রাম হিসেবে এক নামে চিনে।

আনারস বাগানের শ্রমিক অমিত রায় বলেন, এখন আনারস তোলার সময়। সারাবছর পরিচর্চা শেষে এখন আনারস কাটতে ব্যস্ত আমরা। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আনারস গাছ থেকে কেটে আনি। তবে আনারসের গ্রাম হিসেবে পরিচিত হলেও আনারস বাজারজাত করার জন্য প্রয়োজনীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। প্রত্যেকটি বাগান সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন। জেলা শহরে আসার মূল সড়কের অবস্থাও নাজুক। সড়ক যোগাযোগ ভালো হলে আনারস চাষের প্রতি কৃষকরা আরও উৎসাহিত হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

কৃষক নিতাই দাস বলেন, গতবছরের মতো এ বছরও আমাদের ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে দামও ভালো আছে। আমি এ বছর প্রায় ১০ লক্ষ টাকার আনারস বিক্রি করতে পারবো। তবে আমাদের যে প্রধান সমস্যা তা হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। যদি প্রয়োজনীয় সড়ক নির্মাণ করা হতো তাহলে সহজে জেলা শহরে মাল পাঠাতে পারতাম। জেলা থেকে বিভিন্ন উপজেলায় যেত। আমাদের এলাকার কৃষক আনারস চাষে আরও উৎসাহ পেত।

রঙ্গারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাই হজ্বে গেছেন, দায়িত্ব পালনকারী প্যানেল চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী সড়কের ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, এ বছর সদর উপজেলার প্রায় ৫শ’ কেয়ার জায়গায় আনারসের আবাদ হয়েছে। যেখান থেকে কৃষক ৬ কোটি টাকার আনারস বিক্রি করতে পারবেন। বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে এসে যার মূল্য হবে অন্তত ১০ কোটি টাকা। 

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো রাকিবুল আলম বলেন, জেলার মধ্যে আশাউরা গ্রামে সবচেয়ে বেশি আনারস চাষ হয়। বাংলাদেশের জায়গার পাশাপাশি ভারতের জায়গা লিজ নিয়েও আনারস উৎপাদন করা হচ্ছে। এ বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় ও বাজারে ভালো দাম থাকায় কৃষক খুশী। এই আনারস রসালো ও সুস্বাদু হওয়ায় এর খ্যাতি বেশি। পুরো জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাতেও যাচ্ছে আনারস।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার