ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৪৪

ফিরে আসব ভাবতে পারিনি

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০১৯  

১৯৭১ সাল। এএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান। যে সময় তার পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার কথা কিন্তু দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে প্রস্তুতি নিতে হয় যুদ্ধে যাওয়ার।

যুদ্ধে গেলে ফিরে আসবে এটা ভাবতেই পারেননি তিনি। কেননা যুদ্ধে যে কোনো মুহূর্তে মৃত্যু হবে এটাই সত্য ছিল। দেশের জন্য যুদ্ধ করব, বিজয়ী হব, সে আশায় যুদ্ধে যান তিনি। অবশেষে জয়ী হয়ে ফিরেছেন তিনি। শত্রুমুক্ত করেছেন এ দেশকে। সেই বীরত্বগাথা এভাবেই শোনালেন মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান।
 
মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, ১৯৭১ সালের ৪ র্মাচ সুনামগঞ্জ সদর থানায় পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করি আমিসহ ১৫-১৬জন। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে যে ভাষণ দেন এরপর থেকেই যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি নেই যে আর বসে থাকা যাবে না। ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি দল এসে পুরাতন সার্কিট হাউজে অবস্থান নেয়। তখন আমরা সবাই পাকিস্থানিদের ঘেরাও করে মিছিল করি। এরপর সেখানেই প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়। এ সময় যারা যুদ্ধ করেন তাদের আমরা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আনসারদের খাবার সরবরাহ করি। ২৮ মার্চ এসে যুদ্ধে যোগ দেয় সবাই বর্ডার থেকে। আনসার কমান্ডার আবুল হোসেন মিছিলে শহীদ হয় গনেশ। 

তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ ৪০ দিন মুক্ত ছিল। ২৯ মার্চ আহত দুজন রেখে পাকিস্তানিরা পালিয়ে যায়। পুলিশ না থাকায় সংগ্রাম কমিটি বিভিন্ন গ্রুপ করে দেয় আমাদের শহর ও বিভিন্ন এলাকায় স্থানে স্থানে। শহর ও পাশের এলাকায় যেখানেই সমস্যা হত তখনই আমরা সেখানে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতাম। পাকিস্তানিরা ১০ মে আবার বড় একটি বাহিনী নিয়ে আবারও সুনামগঞ্জে আসলে আমরা তাদের সঙ্গে না পেরে ভারতের বালাট চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যাওয়ার আগে ১১ মার্চ নদী ওপারে খাদ্য গুদামে কিছু অস্ত্র-গোলাবারুদ,ওয়ালেস ছিল তা নিয়ে পাকিস্তানিদের সঙ্গে কিছু গোলাগুলি করে সীমান্ত এলাকা বালাট চলে যাই।  

আবু সুফিয়ান বলেন, প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ছিল আমাদের পরে ভারতের বালাটে ২০ তারিখে প্রশিক্ষণের জন্য আমাদের নিতে আসে গাড়ি। পরে ২১ তারিখে প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের ডুয়াই এলাকায় একুয়াণ্ড ট্রেনিং সেন্টার যাই আর আমরাই সুনামগঞ্জ মহকুমা থেকে ২২ জন প্রথম ব্যাচ ছিল। ২৮ দিন যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেই। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ, কানাইঘাট, দোয়রা বাজার কয়েকটি গ্রুপ ছিল। ২৪শে অক্টোবর রাতে মুক্তিযুদ্ধে চলে যাই পারিবারিকভাবে যুদ্ধ যাওয়ার কথা আমার মা জানত। মা বলত এখানে থাকলে পাকিস্তানিরা মেরে ফেলবে। এর চেয়ে যুদ্ধে শহীদ হলে আমি বলতে পারব আমার ছেলে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছে আমি মনে শান্তি পাব। যুদ্ধে যাওয়ার বিষয়ে আর কেউ জানে না। যুদ্ধে যাওয়ার আগে মা আমাকে এবং বন্ধু মালেহ হোসেন পীরকে দুধ-ভাত খাওয়াইয়ে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি দেন। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা গৌরারং ইউপির জগাইর গাওঁ গ্রামে বাড়ি। চার ভাই-বোনের মধ্যে আবু সুফিয়ান সবার বড়। 

তিনি আরো বলেন, আমি দুটি সাবসেক্টরে যুদ্ধ করি একটি নারায়াত তলা হেড কোয়াটার অন্যটি চেলা ক্যাম্প। ২৪ অক্টোবর বালাটের নারায়াত তলা পাকিস্তানিদের সঙ্গে যুদ্ধে গুরুতর আহত হই। পাকিস্তানিদের ক্যাম্প ছিল শহরের বেরীরগাঁও লালগম। ২৪অক্টোবরের পূর্বে পাকিস্তানিদের ডিফেন্স ভেঙ্গে দিই। আর আমাদের ডিফেন্স ছিল বাগমারা। আমাদের কোম্পানি কমান্ডার ছিল এনামুল হক বীর প্রতিক ও টু আইসি ছিল সিরাজুল ইসলাম বীর প্রতিক। ২৫ অক্টোরব  সকাল থেকে যুদ্ধ শুরু করে পাকিস্তানিরা। আমি তখন একটি গ্রুপের কমান্ডার হিসেবে ছিলাম। সেখানে পাকিস্তানিদের পরপর দুটি মর্টার শেল পড়ে সঙ্গে সঙ্গে আমিসহ ৯জন গুরুতর আহত হই। তারপর সঙ্গে সঙ্গে ভলানটিয়ার ও সহযুদ্ধারা আমাদের সবাইকে উদ্ধার করে কোম্পানি হেড কোয়াটারে জয় বাংলা বাজারে (বর্তমানে শহীদ সমাধী) প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে নিয়ে যায়। সেখানে গেলে মর্টার শেলের স্পিন্টার গা থেকে অপরাশেন করে বাহির করা হয়। মর্টার শেলের স্পিন্টার গায়ে লাগায় অবস্থা খারাপ হলে আমাদের ভারতে বালাট উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
 
সর্বশেষ যুদ্ধ করি (১৪-১৫ ডিসেম্বর হবে) ছাতকের গবিন্ধগঞ্জে বুরকি গ্রামে। এখানে গিয়ে পাকিস্তানিরা একটি শক্তিশালী ডিফেন্স নেয়। সেখানে শক্তিশারী ডিফেন্স নেয়ার কারণ হল সিলেট শহরকে রক্ষা করতে। 

তিনি বলেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলাম। সেই উদ্দেশ্য আজও পূরণ হয়নি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশটাকে পাকিস্তানিদের হাত থেকে মুক্তি করতে। কিন্তু সামাজিক ন্যায় বিচার ও অর্থনৈতিক মুক্তি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাইনি আজও। 

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার