নিজের প্রতিষ্ঠানে ৩ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে চাকরি দিলেন অনন্ত

আবারও কথা দিয়ে কথা রাখলেন চিত্রনায়ক, পরিচালক ও প্রযোজক অনন্ত জলিল। নিজের প্রতিষ্ঠানে তিন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে চাকরি দিলেন তিনি।

প্রতিবন্ধীরা কোনো অনুগ্রহ নয়, কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। সমাজে এমন বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করতেই এ মহৎ কাজটি করলেন এই চিত্রনায়ক।

এছাড়াও অন্যান্য বিত্তবানদেরও এমন সামাজিক কাজে জড়িত হতে অনুরোধ করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে ‘যুক্তির আলোয় দেখি’ শিরোনামে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে পাঁচ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে তার প্রতিষ্ঠানে

কর্মসংস্থানের লক্ষে চাকরি প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন অনন্ত জলিল।

ওই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করেছিল 'ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি'।

এটিএন বাংলায় প্রচারিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিতার্কিকদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজ হিতৈষী অনন্ত জলিল।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ততার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মঞ্চে এমন তুখোড় বক্তব্য দেখে বিমোহিত হন।

ওই সময় তিনি বলেন, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে জ্ঞান, বুদ্ধি ও তীক্ষ্ণতা রয়েছে তা অনেক দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন মানুষের মধ্যেও নেই।

সে সময় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আয়োজক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের অনুরোধে সাড়া দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অনন্ত জলিল পাঁচ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে তার প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের লক্ষে চাকরি প্রদানের ঘোষণা দেন।

এবার সেই কথা রাখলেন এ নায়ক। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানে তিনজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে চাকরি দিয়েছেন।

এ ঘোষণার বাস্তবায়ন হতে কয়েকটি মাস লেগে যাওয়ার কারণ হিসাবে প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজের ক্ষেত্র তৈরিতে সময় লেগেছে বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে অনন্ত জলিল বলেন,‘ওই সময় আমি কথা দিয়েছিলাম পাঁচজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে আমার প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেব। সেই লক্ষ্যে আমি তাদের কাজের জন্য কিছু ক্ষেত্র তৈরি করেছি।

কিরণ সাহেব আমাকে আপাতত তিনজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দিয়েছেন। তাদের নিয়োগ দিচ্ছি। পরে যদি আরও ক্ষেত্র তৈরি করা সম্ভব হয় তাহলে হয়তো আরও কয়েকজন সুযোগ পাবে।

তিনি এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে বলেন, আমি যেহেতু পোশাক শিল্প নিয়ে কাজ করি, ব্যবসা করি, তাই এখানে যে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধী নিয়ে কাজ করা অনেক কষ্টকর। কিন্তু তারাও তো মানুষ।

কোনো অনুগ্রহ নয়, তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ দেয়া বিত্তবানদের অবশ্যই দায়িত্ব। আমি আমার সাধ্যমতো সেই দায়িত্বের তাগিদ থেকে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।

অন্যরাও যদি এভাবে এগিয়ে আসে, তাহলে প্রতিবন্ধীরাও কোনো অনুগ্রহ নয়, কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।’

তিন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া প্রসঙ্গে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ২৪ নভেম্বর (শনিবার) এফডিসিতে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সেখানে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে জানিয়েছেন এ নায়ক।

এদিকে নতুন ছবি ‘দিন : দ্য ডে’ শুটিং শুরু করারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনন্ত জলিল। চলতি বছরের ডিসেম্বরে ছবিটির শুটিং শুরু করার কথা থাকলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সেটা পিছিয়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ও ইরানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য এ ছবিটি পরিচালনা করবেন ইরানের পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম।

ইসলামে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই এবং বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়, বিশেষ করে সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিনসহ যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশগুলোর মুসলমানরা জঙ্গিদের কারণে কতটা অসহায় ও মানবেতর জীবনযাপন করছে সেটাই তুলে ধরা হবে এ ছবিতে।

ছবির শুটিং করা হবে বাংলাদেশ ইরান, সিরিয়া ও লেবাননের বিভিন্ন লোকেশনে। ছবিতে অভিনয় করবেন অনন্ত জলিল, বর্ষা ও নবাগত সুমন ফারুক।

পাশাপাশি ইরান ও লেবাননের কয়েকজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পীকেও দেখা যাবে বলে জানা গেছে।