কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে যা করলেন গৃহবধূ

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পেরে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া শেষে গায়ে কেরোসিন ঢেলে এক গৃহবধূ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে নড়িয়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ঢালী পাড়া এলাকায়। শান্তা বেগম নামে ওই গৃহবধূর শরীরের ৫০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।

গৃহবধূর মা নাসু বেগম ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত চার বছর পূর্বে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া পৌর সভার ৩নং ওয়ার্ডের ঢালী পাড়া এলাকার জালু মাদবরের ছেলে ইব্রাহিম মাদবরের সঙ্গে একই উপজেলার ফতেজঙ্গপুর ইউনিয়নের দুলাল সৈয়ালের কন্যা শান্তা বেগমের বিয়ে হয়। সম্প্রতি স্বামী ইব্রাহিম মাদবর কয়েকটি এনজিও থেকে লোন নেয়।

বুধবার সকালে একটি এনজিওর লোকজন তাদের কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য ইব্রাহিম মাদবরের বাড়িতে যায়। এ সময় ইব্রাহিম মাদবর বাড়িতে ছিল না। তারা কিস্তির টাকা না পেয়ে স্ত্রী শান্তা বেগমেকে মানসিক চাপ প্রয়োগ করে। কিছুক্ষণ পড়ে স্বামী ইব্রাহিম মাদবর বাড়িতে আসলে দু জনের মধ্যে কিস্তির টাকা নিয়ে ঝগড়া ঝাটি হয়।

এক পর্যায়ে স্ত্রী অপমান সহতে না পেরে  তার নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৫০ শতাংশের বেশি পুড়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করেছে।

আহত শান্তা বেগমের বাবা দুলাল সৈয়াল বলেন, বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে কিস্তি নেয় আমার মেয়ের জামাই। কিস্তির টাকা নিয়ে আমার মেয়ে শান্তা বেগম ও মেয়ের জামাই ইব্রাহিম মাদবরের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হত। দুপুরে কিস্তির টাকার জন্য লোকজন বাড়িতে এসে বকাবকি করে যায়। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। অপমান সইতে না পেরে আমার মেয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাতে তার শরীরের অনেক অংশ পুড়ে গেছে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমাদের হাসপাতালে নড়িয়া থেকে শান্তা বেগম নামে একজন আগুনে পোড়া রোগী আসে। আমরা তার অবস্থা আশংকা জনক দেখে ঢাকায় পাঠিয়ে দেই।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি অবনী শংকর কর বলেন, এ ব্যাপারে আমরা এখনো কিছু শুনিনি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।