ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
২০৭

৩৭৯ বছর ধরে জামাত হচ্ছে যেখানে

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০১৯  

রাজধানীর সাত মসজিদ রোডের মাঝামাঝি জায়গায় রাস্তার পূর্ব দিকে উঁচু ভূমির ওপর প্রাচীন স্থাপনাটি দেখা যায়। জিগাতলা থেকে মোহাম্মদপুরের দিকে যেতে বড় রাস্তার পাশেই এটির অবস্থান। খানিকটা এগিয়ে গেলে দক্ষিণ পাশে শাখা বিছিয়ে ছায়াময় করে রেখেছে বহু বছরের পুরোনো নিমগাছ, তেঁতুলগাছ। উত্তর দিকের প্রাচীর বরাবর কয়েকটি মেহগনিগাছ। নারকেলগাছ পশ্চিমের দেয়ালের পাশে। ভেতরের মাঠ সবুজ ঘাসে ঢাকা। এখানেই ৩৭৯ বছর ধরে ঈদের নামাজ আদায় করছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। এখন এটি ধানমন্ডির শাহি ঈদগাহ নামে পরিচিত।

রোববার দুপুরে এখানে দেখা গেল শামিয়ানা টাঙানোর কাজ চলছে। ঈদের দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, তাই আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেখানে কর্মরত একজন জানালেন, সোমবার সকাল আটটায় সেখানে ঈদের জামাত শুরু হবে।


সেই মোগল আমল থেকে শুরু করে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে এখানে ঈদের নামাজ আদায়ের কথা জানা যায়। সেই সময়ে ঢাকার নওয়াব বাড়ি আহসান মঞ্জিল থেকে তোপধ্বনি করে চাঁদ ওঠার খবর জানানোর রেওয়াজ ছিল। ঈদের দিন নানা রঙের পতাকা হাতে নিয়ে ঈদ মিছিল সহকারে ধানমন্ডি ঈদগাহে নামাজ পড়তে যাওয়া হতো। এরপর কালের পরিক্রমায় অনেক পরিবর্তন এসেছে ঢাকার, হারিয়ে গেছে অনেক কিছুই। তবে ধানমন্ডির শাহি ঈদগাহ বিলুপ্তির কবল থেকে টিকে গেছে। এখানে প্রতিবছর দুই ঈদে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। এলাকার অন্যতম বড় ঈদ জামাত এখানেই হয়।


মাঠের পশ্চিম প্রাচীরের মাঝ বরাবর প্রধান মিহরাব। আরও দুটি ছোট আকারের মিহরাব আছে এর দুই পাশে। প্রধান মিহরাবটি অষ্টকোনাকৃতির। ভেতরের দিকে খানিকটা ঢালু খিলান আকৃতির। মেহরাবগুলো দেয়ালের আয়তাকার ফ্রেমের ভেতরে অবস্থিত। প্রধান মেহরাবের দুই দিকে আছে বহু খাঁজবিশিষ্ট নকশা করা প্যানেল। এর উত্তর পাশেই তিন ধাপবিশিষ্ট মিম্বার। কেন্দ্রীয় মিহরাবের ওপর একটি শিলালিপি আছে। এ শিলালিপি অনুযায়ী জানা যায়, ঈদগাহটি নির্মাণ করেছিলেন মীর আবুল কাশিম, ১৬৪০ সালে। সম্রাট শাহজাহানের ছেলে শাহ সুজা ছিলেন তখন বাংলার সুবাদার। তাঁর দেওয়ান মীর আবুল কাশিম।

ঢাকার ইতিহাসবিষয়ক বিভিন্ন গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, মোগল আমলে সুবাদার, নায়েবে নাজিম, অমাত্য (মন্ত্রী) ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এই ঈদগাহেই নামাজ আদায় করতেন। মূল শহর থেকে বেশ দূরে ছিল ঈদগাহটি। মূল শহর অর্থাৎ পুরান ঢাকায় ছোট ছোট বেশ কয়েকটি সুলতানি ঈদগাহ থাকলেও বড় আকারের কোনো ঈদগাহ ছিল না। তাই মীর আবুল কাশিম ঈদগাহের জন্য জায়গা খুঁজতে থাকেন। অবশেষে তিনি এ এলাকা বেছে নেন। কাজেই মূল নগর থেকে কিছুটা দূরে খোলা জায়গায় এবং সাত মসজিদের কাছে হওয়ায় ধানমন্ডি এলাকায় ঈদগাহটি নির্মিত হয়। গবেষক লেখক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন উল্লেখ করেছেন, ‘এর পাশ দিয়ে তখন বয়ে যেত পাণ্ডু নদীর একটি শাখা। এই শাখা জাফরাবাদে সাত গম্বুজ মসজিদের কাছে মিলিত হতো বুড়িগঙ্গার সঙ্গে।’ মোগল শাসক ও তাঁদের অমাত্যরা বেশ জাঁকজমকের সঙ্গেই বুড়িগঙ্গা পারের ঢাকা শহর থেকে প্রায় এক ক্রোশ দূরের এই ঈদগাহে আসতেন নামাজ আদায়ের জন্য।


১৯৮১ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণ করছে। চারদিকে ১৫ ফুট উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ঈদগাহের পশ্চিম দিকের প্রাচীরটিই শুধু মোগল আমলের। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ১৯৮৮ সালে সংস্কারের সময় অন্য তিন দিকের প্রাচীর নির্মাণ করেছে। প্লাস্টার করা এই প্রাচীরের শীর্ষ প্রান্ত পারস্যরীতির ‘মোরলোন’ নকশাখচিত। বন্যা বা বৃষ্টি জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষার জন্য চার ফুট ভূমি উঁচু করে ঈদগাহটি নির্মাণ করা হয়েছিল। লম্বা ১৪৫ এবং চওড়া ১৩৭ ফুট। চার কোণে রয়েছে অষ্টভুজাকৃতির বুরুজ। ঈদগাহের মোট জমির পরিমাণ সাড়ে তিন বিঘা।


সংরক্ষণের কারণে ধানমন্ডির শাহি ঈদগাহ টিকে গেছে বিলুপ্তির কবল থেকে। তবে মাঝে বেশ কয়েক বছর অযত্ন অবহেলায় ছিল ঈদগাহটি। সম্প্রতি এটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এ শাহি ঈদগাহের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সাড়ে ১৯ লাখ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২২ লাখ টাকার সংস্কার, সংরক্ষণ ও উন্নয়নকাজ করেছে। এ অর্থবছরে আরও প্রায় ৭ লাখ টাকার উন্নয়নকাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত মোগল আমলের এ নান্দনিক স্থাপনা সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করা হবে। প্রায় ৪০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ধানমন্ডি শাহি ঈদগাহ মোগল স্থাপত্য নিদর্শনের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন একটি নিদর্শন এবং এটিকে ঢাকার প্রথম পরিকল্পিত ঈদগাহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।’

প্রতিমন্ত্রী খালিদ বলেন, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় যে ৫০৪টি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি রয়েছে, তার মধ্যে এটি অন্যতম। তিনি বলেন, ধানমন্ডি শাহি ঈদগাহের ভেতরে ও বাইরে প্রচুর খোলা জায়গা রয়েছে। সেখানে প্রয়োজনে উদ্যানতত্ত্ববিদের সহযোগিতা নিয়ে সবুজায়নের ব্যবস্থা করা যায়। ঈদগাহের বাইরের জায়গা দখলমুক্ত রাখার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।’

প্রতিমন্ত্রী জানান, এখন থেকে এ প্রাচীন ঈদগাহটির রক্ষণাবেক্ষণে প্রতিবছর দুই থেকে তিন লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। তাতেও সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ না হলে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হবে।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার