ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৭৮৬

হারিছ চৌধুরীর ডান হাত মোশাররফ ঠাকুর: হবিগঞ্জের লুটপাটের ‘নায়ক’

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২১  

বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে হবিগঞ্জরে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পরে মূল হোতা ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিত মোশাররফ হোসেন ঠাকুর। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এমএইচ কিবরিয়ার হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

বিএনপি জামাত সরকারের ৫ বছরে বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ভাগ্যবিধাতা হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। স্থানীয় প্রশাসনে তার ছিল একছত্র আধিপত্য। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে তার ক্ষমতার দাপটে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও ছিল অতিষ্ঠ। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়ায় এলাকা ছেড়ে আত্নগোপনে চলে যান মোশাররফ হোসেন ঠাকুর। নিম্ন-মধ্য ব্ত্তি পরিবারের ছেলে হলেও ক্ষমতার দাপটে গত ৫ বছরে তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। ইতিমোধ্যে তিনি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন বলে এলাকায় সর্বত্র প্রচার রয়েছে। গত ৫ বছরে তিনি দুর্নীতি, অনিয়ম, টেন্ডারবাজি, তদবির, স্বজনপ্রীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ সময় এলাকায় তিনি সবচেয়ে প্রভাব বিস্তার করেছেন পরিবহন সেক্টরে।

বেকার থেকে কোটিপতি
পাঁচ বছর আগেও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুন ছিলেন তিনি। বাড়িতে ছিল একটি জরাজির্ণ ঘর। আয়ের তেমন কোন উত্‍স ছিল না তার। কিন্ত ৫ বছরের ব্যবধানে সবকিছু পাল্টে যায়। গড়ে তোলেন প্রসাদসম ভবন। অভিযোগ রয়েছে, গত পাঁচ বছর স্থানীয় প্রশাসন এবং বিএনপির দলীয রাজনীতিকে নিজের ইচ্ছেমত ব্যবহার করেন। এলাকায় গড়ে তোলেন নিজস্ব একটি ক্যডার বাহিনী। তার ক্ষমতার অপব্যবহারে অতিষ্ঠ অনেক দলীয় লোক সাংগঠনিক অনেক লোক নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। কেউ বিরোধিতা করলে নিজস্ব বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন ব্যবহার করে কৌশলে শায়েস্তা করেছে ঠাকুর। হবিগঞ্জরে বানিয়াচং উপজেলার আদমখানি গ্রামের বাচ্চু ঠাকুরের চার ছেলে ও পাঁচ মেয়ের মধ্যে মোশাররফ হোসেন ঠাকুর বড়। বানিয়াচং বাজরে ছোটখাটো কাপড়ের ব্যবসা ছিল তার বাবার। সেই আয় দিয়ে কোনমতে চলত ১১ সদস্যের পরিবারটি। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রশাসনে মোশাররফ ঠাকুরের প্রভাব ও সাংগঠনিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে করা হতো টেন্ডারবাজি। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সিনেমা সরবরাহের কাজ পেয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

তদবির ও চাকরি বাণিজ্য
গত ৫ বছরে মোশাররফ হোসেন ঠাকুর সরকারের বিভিন্ন দফতরে এলাকার লোকজনকে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যাদের অধিকাংশ টাকা আত্নসাৎ করলেও চাকরি দিতে পারেননি। নিরীহ লোকজন তার ভয়ে এ ব্যপারে কোন প্রতিবাদ করতে পারে নি। 

চাকরি দেয়া এবং তদবির ব্যবসাও চালিয়েছেন সমানতালে। নগদ টাকা নিয়ে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের বদল করেছেন পছন্দের জায়গায়। তিনি হবিগঞ্জের এক পুলিশ সুপারকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সিলেটে বদলি করেছেন। এমনিভাবে গত ৫ বছরে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাকে টাকার বিনিময়ে বদলি করিয়ে দিয়েছেন। এর বিনিময়ে নগদ টাকা ছাড়াও দামি উপহার সামগ্রী ও বিনা খরচে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি প্রোমোদ ভ্রমণ করেছেন। তার সব কর্মকান্ড অন্যতম সহযোগি ছিলেন বানিয়াচং উপজেলার বিএনপির সাধারন সম্পাদক ওয়াশির উদ্দিন খান।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের সময় তিনি মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন চাকরি দেয়ার নামে। ক্ষমতার জোড়ে হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ নিয়ন্ত্রন করেন তিনি। তদবির করে বিভিন্ন জনকে চাকরি পাইয়ে দেয়ার পাশাপাশি সরকারি চাকরি দিয়েছেন নিজের দুই বোনকে। এর মধ্যে একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অন্যজনকে কলেজে। ঠাকুরের দুই ভাই নিয়ন্ত্রন করছেন এলাকার পরিবহন সেক্টর। তাদের অনুমতি ছাড়া হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কে গাড়ি চালানো যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রশাসনে প্রভাব
বিগত জোট সরকারের আমলে বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সবসময়ই থার চাপের মুখে থাকতেন। হবিগঞ্জে মোশাররফ ঠাকুর একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসন নিয়ন্ত্রন করেছেন। হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কথা বলে প্রশাসনের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আদায় করতে সক্ষম হয় এই সিন্ডিকেট। স্থানীয় জেলা প্রশাসন ঠাকুরের ইচ্ছানুযায়ী এলাকার বালু ও জলমহল এবং খাস জমি ইজারা দিয়েছে।

সম্পদের পাহাড়
মোশাররফ হোসেন ঠাকুর গত ৫ বছরে নামে-বেনামে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। এর ঢাকার পুরানা পল্টনে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ফ্লাট কিনেছেন। তার ঘরের বিদেশী ফার্নিচার দেখলে অনেকেই অবাক হন। রয়েছে একাধিক বিলাস বহুল গাড়ি। যা নিজে ও পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করে থাকেন। তিনি প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিগত পাঁচ বছরে কোটি টাকার টেন্ডার বাণিজ্য করেছেন। তার পছন্দসই ঠিকাদারকে নির্ধারিত কমিশনের মাধ্যমে সরকারি কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, ঠাকুরের দাপটে সড়ক ও জনপদ (সওজ), এলজিআরডিসহ প্রকৌশল বিভাগের লোকজন তটস্থ থাকতেন। বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার একাধিক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অনেক সরকারি কর্মকর্তা ঠাকুরের চাপে অতিষ্ঠ ছিলেন বলে স্বীকার করেন।

১৯৯১ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে হঠাৎ করে ৪৬ লাখ টাকার পাজারো গাড়ি, ঢাকার ৫৩ পুরানা পল্টনে ১২টি ফ্লাট বাড়ি, ঢাকায় কয়েকটি ব্যবসা, হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কে দিগন্ত পরিবহন নামে ২০টি মিনিবাসসহ বিভিন্ন ব্যাংকে তার ও আত্তীয় স্বজনের নামে প্রচুর পরিমান টাকা রয়েছে। মোশাররফ হোসেন ঠাকুর তার দলীয় ক্ষমতা অপব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত প্রার্থিদের কাজ থেকে প্রতারনার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্নসাত্‍ করেছেন। তার বোনকে ক্ষমতার প্রভাব ঘাটিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরী সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। আরও অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

তথ্য সূত্র: দৈনিক যুগান্তর

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার