ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
২১৭

স্বামীর নির্যাতনে প্রান গেল হবিগঞ্জের সাজেদার

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

 


স্বামীর নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে হবিগঞ্জর বাহুবল উপজেলা থেকে ঢাকার হাতিরপুল এলাকায় অবস্থান করেছিলেন সাজেদা বেগম (৩৫) নামের এক গৃহবধূ।

কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ঢাকায় সাত বছর বসবাসের পর মাদকাসক্ত ওই স্বামীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতেই প্রাণ হারাতে হয়েছে তাকে।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে এবং ঘাতক স্বামীকে আটক করে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার রাতে হাতিরপুল নর্থ সার্কুলার রোডের ভূতের গলিতে একটি টিনসেট বাসায়।

নিহত সাজেদা বেগম হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুস সোবহানের মেয়ে। দীর্ঘ ১২ বছর আগে একই উপজেলার উজিরপুর গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস আহমদের সাথে তার বিয়ে হয়।

কলাবাগান থানার ওসি (তদন্ত) আসাদুজ্জামান জানান, গত বুধবার রাতে হাতিরপুল এলাকার ভূতের গলিতে সাজেদা নামের এক গৃহবধূকে তার স্বামী ফেরদৌস খুন করে রুমের মধ্যেই বসে ছিল। পরে তাকে আটক করা হয়।

তিনি আরো জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল বলে জানিয়েছে ফেরদৌস। স্ত্রী পরকীয়া করে এমন সন্দেহ ছিল তার। বিষয়টি নিয়ে তাদের গ্রামের বাড়িতে একবার সালিসও হয়েছে বলে জানিয়েছে সে।

তবে নিহত সাজেদার স্বজনদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ফেরদৌস সাজেদার ওপর নির্যাতন শুরু করে। কিন্তু বাবা-মা ও বড় ভাই কেউ না থাকায় নির্যাতন সহ্য করেই স্বামীর বাড়িতে বছরের পর বছর অতিবাহিত করেন সাজেদা। এর মধ্যে অনেকবার গ্রামে মুরব্বিরা সালিস বৈঠক করেও স্বামীর নির্যাতন থামাতে পারেননি। তারপরও নির্যাতন সহ্য করে সংসার করছিলেন তিনি। এক এক করে দুটি সন্তানও তাদের ঘরে আসে। প্রথম সন্তানের বয়স ৯ বছর ও দ্বিতীয় সন্তানের বয়স ৭ বছর।

সাজেদার চাচাতো বোন রাজিয়া বেগম জানান, স্বামীর নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে দুই সন্তানকে নিয়ে সাত বছর আগে ঢাকায় আসেন সাজেদা। পরে রাজধানীর কলাবাগান থানাধীন হাতিরপুলের ভূতের গলিতে একটি টিনসেট বাসায় ভাড়া করেন এবং মানুষের বাসায় কাজ করে পরিবারের খরচ চালান। এক পর্যায়ে স্বামীও ঢাকায় চলে আসে। এ সময় আর নির্যাতন করবে না জানিয়ে স্ত্রীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। পরে সহজ-সরল স্ত্রী তাকে ক্ষমা করে দেন। আবার সংসার জীবন শুরু করেন তারা।

এক পর্যায়ে ঢাকা শহরে রিকশা চালানো শুরু করেন ঘাতক ফেরদৌস। তবে কয়েক মাস যেতে না যেতে ফের স্ত্রীর ওপর নির্যাতন শুরু করেন ফেরদৌস। শুধু তাই নয়, স্ত্রীকে কারো সাথে কথা বললে পরকীয় সন্দেহ করেন তিনি। এর জের ধরে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত।

গত জানুয়ারি মাসে ঝগড়া করে ফেরদৌস গ্রামে চলে যান। পরে গত মঙ্গলবার আবার ঢাকায় ফিরে আসেন এবং পুনরায় স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চান। এ সময় স্ত্রী ক্ষমা করে দিয়ে আবার জীবন যুদ্ধ শুরু করেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এক দিন যেতে না যেতেই আবার নির্যাতন শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন ঘাতক স্বামী।

নর্থ সার্কুলার রোডের ভূতের গলির ওই কলোনীতে গিয়ে দেখা গেছে, ওই কলোনীতে ছয়টি রুম আছে। কলোনীর প্রবেশ করতেই হাতের বাম পাশের রুমে সাজেদা ও তার স্বামী বসবাস করতেন। তবে ওই রুমের দরজায় একটি তালা ঝুলানো দেখা যায়। পরে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখা গেছে, রুমের ভেতরে এলোমেলো অবস্থায় আছে। ঘরে খাটের ওপর চাল ও কাপড় রাখা আছে।

ওই কলোনীর বাসিন্দা বিলাল হোসেন জানান, কলোনীতে যারা বসবাস করেন তাদের মধ্যে সবাই শ্রমিক। পুরুষের পাশাপাশি নারী সদস্যরাও অন্যের বাসায় কাজ করেন। তাই প্রতিদিনের মত গতকালও কলোনীতে তেমন কেউ ছিল না। এই সুযোগে সন্ধ্যায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি। পরে খুনের খবর পেয়ে সবাই কলোনীতে আসেন।

তিনি আরো জানান, প্রায় সাত বছর থেকে ওই কলোনীতে বসবাস করছেন সাজেদা। তবে প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া করতেন। কিন্তু স্ত্রীকে রুম থেকে তেমন বের হতে দিত না স্বামী। কারো সাথে কথা বললে সন্দেহ করত। এছাড়া ঘাতক ফেরদৌস নিয়মিত মাদক সেবন করত। নেশা করে বাসায় এসে মাঝে মাঝে স্ত্রীকে মারধর করত।

পুলিশ জানায়, গত বুধবার সন্ধ্যায় ফেরদৌস ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপযুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এ সময় অতিরিক্ত রক্তকরণে তার মৃত্যু হয়। পরে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। গতকাল ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

কলাবাগান থানার ওসি (তদন্ত) আসাদুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় নিহতের বোন বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলায় ঘাতক ফেরদৌসকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

তবে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন এখনো পুলিশে হাতে এসে পৌঁছায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেদন পাওয়ার মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার