ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৫২০৯

সিজারিয়ানের পর প্রসুতি মায়ের যত্ন

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০১৯  

একজন গর্ভবতী মহিলার বাচ্চা গর্ভে থাকাকালীন যেমন তার যত্ন নিতে হয় সবার থেকে আলাদাভাবে, ঠিক তেমনি সন্তান প্রসবের পর বিশেষভাবে তার যত্ন নিতে হয়  যেন সে তার আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। প্রসব পরবর্তী ৬-৮ সপ্তাহ সময় একজন মায়ের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ সময়। প্রসব পরবর্তী দিনগুলো মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং বিশেষ করে মায়ের যদি সিজারিয়ান হয়। সিজারিয়ানের পর মায়ের যত্ন নিয়েই আজকের আলোচনা।

সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেয়ার সময় এবং তার পরেও শরীরের উপর দিয়ে অনেক ধকল যায়। এটি একটি বড় ধরনের অস্ত্রোপচার, যেখানে পেটের বিভিন্ন স্তরের টিস্যু কাটা হয়।  সিজারের প্রভাব মায়ের উপর শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও পরতে পারে। তবে এই পরিবর্তন একেক মায়ের জন্য একেক রকম হতে পারে।

সার্জারির পর আপনার অস্থির এবং বমি বমি ভাব হতে পারে। এ অনুভূতি ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে। অনেক মায়েদের সারা গায়ে চুলকানি হতে পারে বিশেষ করে যাদের চেতনানাশক ওষুধ দেয়া হয়।

সিজার হলে মায়েদের সাধারণত  ২-৪ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়। তবে বাসায় ফিরে যাওয়ার পরও কয়েক সপ্তাহ মা রিকোভারি স্টেজ এ থাকবেন।

সিজারের পর কাটা স্থানে অসাড় অনুভূতি বা ব্যাথা হতে পারে। এবং কাটা স্থান সাধারণত কিছুটা ফুলে থাকতে পারে এবং কালো হয়ে যেতে পারে। পেটে চাপ পড়ে এমন যেকোনো কিছুতেই এ সময় ব্যাথা লাগতে পারে। তবে এটা আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়। এ সময় কাশি দেয়ার সময় বা হাসার সময় হাত বা বালিশ দিয়ে কাঁটা স্থানে সাপোর্ট দিতে পারেন।

প্রত্যেকটি মায়েরই প্রসবের পর ভ্যাজিনাল ডিসচার্জ হয় যাকে। এটি রক্ত, ব্যাকটেরিয়া এবং জরায়ুর ছিঁড়ে যাওয়া টিস্যুর সমন্বয়ে গঠিত। প্রসবের পর প্রথম কিছুদিন এ ডিসচার্জ উজ্জ্বল লাল বর্ণের থাকে।

সিজারের পর প্রথম এক দুই দিন আপনার গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এসময় মায়ের পরিপাকতন্ত্র মন্থর থাকে বলে বেশি গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে। এ সময় হালকা হাঁটাচলা স্বস্তি দিতে পারে। সার্জারির পরদিনই মাকে বিছানা থেকে উঠে কিছুটা হাঁটাহাঁটি করার পরামর্শ দেয়া হতে পারে। তবে সেটা নিজে নিজে কখনোই চেষ্টা করবেন না, নার্সের সাহায্য নিন।

এ সময় হেঁটে বাথরুমে যাওয়াটাও আপনার কাছে অসম্ভব মনে হতে পারে। কিন্তু এই নড়াচড়া সেরে উঠার জন্য খুবই উপকারী। এর ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমে যায়। সার্জারির পর শুয়ে থাকা অবস্থাতেও পা নাড়িয়ে, স্ট্রেচিং করে পায়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পারেন।

তৃতীয় বা চতুর্থ দিনে ডাক্তার আপনার সেলাই খুলে দিতে পারেন। এতে তেমন কোনো ব্যাথা পাওয়া যায়না এবং খুব অল্প সময় লাগে। এটি সাধারণত হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জের আগে করা হয়। তবে যদি কোনো সমস্যা থাকে তবে আরো কিছুদিন পরেও তা খোলা হতে পারে।

প্রথম দিকে সিজারের কাটা স্থান সামান্য ফোলা এবং গাঁড় বর্ণের থাকলেও ছয় সপ্তাহের মধ্যে তা আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে আসতে থাকে। সিজারের কাটা সাধারণত  ৪-৬ ইঞ্ছি লম্বা হয়। এটি সেরে ওঠার সময় কাটা স্থানে চুলকাতে পারে।

সিজারের পর মায়ের শারীরিক যত্ন

কাজ ও বিশ্রাম

সিজারিয়ান একটি মেজর সার্জারি। অন্য যেকোনো সার্জারির মতোই তা সেরে ওঠার জন্য সময় দিতে হবে। সিজারের পর স্বাভাবিকভাবেই আপনাকে বিশ্রামে থাকতে হবে এবং অন্যদের আপনার কাজে সাহায্য করতে দিতে হবে। এই সময়টুকু নিজের শরীরকে সুস্থ করার জন্য ভালমতো বিশ্রাম করা জরুরি, অন্তত প্রথম ৬ সপ্তাহ থাকতে হবে বিশ্রামে।

যদিও এটা বলার চাইতে করাটা অনেক কঠিন। বাচ্চার কারণে বিশ্রাম নেয়াটা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাচ্চার যত্নআত্তির কাজে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নিন।

তবে শুধু শুয়ে বসে সময় কাটালেই চলবেনা। সিজারের সাধারণত চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই মাকে বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে যেতে উৎসাহিত করা হয়। এতে ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে সাহায্য করে। তবে এ সময় হাঁটাচলা ধীরে সুস্থে করতে হবে। নিয়মিত হাঁটা শুধু ক্যালরি বার্ন করে না, অপারেশনের পর শরীরের অ্যানার্জি লেভেল বাড়াতেও সাহায্য করে।

যে সকল মায়েরা সিজার অপারেশনের মধ্য দিয়ে যান তাদেরকে সাধারণত অপারেশনের পরদিন থেকেই অল্প অল্প করে হাঁটা শুরু করতে বলা হয়। কারণ হাঁটলে সেলাই দ্রুত শুকায়, রক্ত জমাট বাঁধে না এবং ব্যাথা প্রশমন ত্বরান্বিত হয়। তবে প্রথম ছয় থেকে আট সপ্তাহ খুব আস্তে আস্তে হাঁটতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে হাঁটার গতি এবং সময় বাড়াতে হবে। তবে তা অবশ্যয় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করতে হবে।

খাবার

প্রসব পরবর্তীতে মায়ের স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ক্যালরি দরকার হয়। এই অতিরিক্ত ক্যালরি বুকের দুধ তৈরির জন্য প্রয়োজন হয়। তাই এ সময় মাকে সঠিকমাত্রায় সুষম খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে। এ সময় মায়ের দেহে পানির প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায় ও ঘন ঘন পিপাসা পায়। মাকে সব সময় পিপাসা পেলেই প্রচুর পানি পান করতে হবে। পানি পানের উপকারিতা অনেক। যেমন : এই পানি বুকের দুধের মাধ্যমে বাচ্চার পানির প্রয়োজনীয়তা মেটায়। বাচ্চাকে আলাদাকরে পানি খাওয়ানোর প্রয়োজন হয় না। পানি মায়ের শরীরের বিভিন্ন পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে, প্রস্রাবের প্রদাহ, কোষ্টকাঠিন্য এবং রক্ত জমাট বাধা রোগ হবার ঝুঁকি কমায়।

কাটা স্থানের যত্ন:

সিজারের ক্ষেত্রে কাটা স্থানের যত্ন নিতে হবে। প্রতিদিন হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শুকিয়ে নিন। যদি কাটা স্থানটি কাপড়ের সাথে ঘষা লাগে তবে এর উপর গজ ব্যান্ডেজ লাগিয়ে নিতে পারেন। ঢোলা, আরামদায়াক এবং সুতির কাপড় পরার চেষ্টা করুন।

কাটা স্থানে ইনফেকশন হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন। যদি ক্ষতস্থান লাল হয়ে যায় বা বেশি ব্যথা হয় তবে ডাক্তারকে জানান। এ সময় সুইমিং পুল বা হট টাব এড়িয়ে চলা উচিত।

বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো:

বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো শুধু বাচ্চার জন্যই উপকারী না, এটা মায়ের জন্যও অনেক উপকারী। যেসকল মায়েরা বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান তাদের ওজন অন্য মায়েদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত দ্রুত ঝড়ে যায়। কারণ বুকের দুধের মাধ্যমে বাচ্চাকে পর্যাপ্ত পুষ্টি দিতে গিয়ে মায়ের শরীর থেকে অনেক বেশি ক্যালরি ক্ষয় হয়। যার ফলে ওজন ঝড়ে যেতে শুরু করে। এজন্য শুধু জন্মের প্রথম ছয় মাসই নয়, বরং এরপরও বাচ্চাকে অন্তত এক বছর পর্যন্ত নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত।

বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় বিভিন্ন পজিশন চেষ্টা করে দেখতে পারেন কোনটা আপনার জন্য আরামদায়ক। বুকের দুধ খাওয়ানো সময় আপনার সোজা হয়ে বসে কোলের উপর বালিশ রেখে তার উপর বাচ্চাকে শুইয়ে দুধ খাওয়াতে পারেন। বাচ্চাকে ব্রেস্ট ফিডিং এর জন্য এ ধরনের কিছু বিশেষ ধরনের বালিশ এখন কিনতে পাওয়া যায়। এছারাও আপনি পাশ ফিরে শুইয়েও বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে পারেন।

যেসব কাজ এড়িয়ে চলতে হবে:

সিজারিয়ানের পর কিছু কিছু কাজ বেশ কিছুদিনের জন্য এড়িয়ে চলা উচিত। সিজারিয়ানের পর ক্ষতস্থানে বার বার হাত দেয়া উচিত নয়। এতে ইনফেকশনের সম্ভাবনা বাড়ে। বাসায় ফেরার সাথে সাথে গৃহস্থালির কাজ কর্ম শুরু করার প্রয়োজন নেই। এ সব কাজে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নিন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা যতটা সম্ভব কম করা উচিত। এছাড়াও ভারী জিনিষ ওঠানো বা বহন করা আপাতত বন্ধ রাখতে হবে।

সিজারিয়ানের পর কিছুদিন পর্যন্ত নিজের বাচ্চাকে কোলে নেয়াটাও কষ্টকর হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই সেটা খুব বেশি  করার প্রয়োজন নেই। আপনি চেয়ারে বসে অন্য কাউকে বলুন বাচ্চাকে আপনার কোলে তুলে দেয়ার জন্য।

সিজারিয়ানের পর অন্তত ছয় সপ্তাহ শারীরিক মিলন থেকে বিরত থাকুন। আপনার ক্ষতস্থান স্বাভাবিক হয়ে আসার পর প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে শারীরিক মিলন শুরু করতে পারেন। এসময় খুব বেশি  জোরে হাঁসা বা কাশি দেয়া উচিত নয়। এতে ক্ষতস্থানের উপর চাপ পড়তে পারে। হাঁসার সময় বা কাশি দেয়ার সময় হাত বা বালিশ দিয়ে ক্ষতস্থানে সাপোর্ট দিন।

সিজারিয়ানের পর মানসিক যত্ন:

ডেলিভারির পর,বিশেষ করে সিজারিয়ান হলে ৪-৫ দিনের দিন ইমোশনাল ব্রেকডাউন হয়। একটুতেই খারাপ লাগে,কান্না পায়, দুর্বল লাগে এবং ঠিকমতো চিন্তা করার ক্ষমতা থাকেনা। অনেক মা ই নরমাল ডেলিভারি হয়নি বলে অনেক মন খারাপ করে থাকেন বা নিজেকে অযোগ্য বলে ভাবতে থাকেন। এসব অনুভূতি নিয়ন্ত্রন করা অনেক সময় মায়েদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

বাচ্চার দেখাশোনা এবং সামনের বেশ কিছু দুশ্চিন্তা-পূর্ণ সময় যেন মা-কে গ্রাস করে না ফেলে, তার জন্য বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। কিছু কিছু মা হয়তো প্রসব পরবর্তি বিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠতে পারে না-এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই মা কে পরিবারের অন্যদের এবং একজন ভালো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। বাবা ও পরিবারের অন্যানদের সহযোগীতা বিশেষভাবে কাম্য এই সময়টিতে।

সন্তান জন্মদানজনিত শারিরিক ধকল, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব এবং হরমনের বিভিন্ন জানা-অজানা প্রভাবের কারণে মায়েরা একটু খিটখিটে আচরণ করতে পারে, তুচ্ছ কারণে অভিমান বা কান্নাকাটি হতে পারে- এগুলোকে সাধারণত বেবি ব্লুস (Baby Blues)- বলা হয় যা সাধারণত শিশুর জন্মের এক-দেড় মাসের মধ্যে কেটে যায়। তবে বিষয়টি আর ‘Baby blue’-র পর্যায়ে থাকে না যখন এসব সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায় যেমন, মাকে ভয়াবহ আত্মগ্লানি এবং বিষণ্ণতা গ্রাস করে এবং বিষয়গুলো দীর্ঘসময় ধরে চলতে থাকে কিংবা সময়ের সাথে বাড়তে থাকে। তখন এক প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতা বা পোস্ট পারটাম ডিপ্রেশন বলে।

মায়ের এরকম সমস্যা হোলে তাকে যথাসম্ভব মানসিক সাপর্ট দিন। বিশেষ করে বাবাদের ভুমিকা এসব ক্ষেত্রে বিশেষ ভুমিকা রাখে। প্রসুতি যদি বেবি ব্লু জনিত খিটখিটে আচরণও করে তাকে ভরসা দিন, তাকে বেশ কিছুদিনের জন্য বিচার করবেন না। সবসময় ধৈর্য রাখা পরিবারের অন্যদের জন্য খানিকটা চ্যালেঞ্জিং তবে, নবজাতক এবং মায়ের স্বার্থে তাদের সহযোগিতা বিশেষ ভাবে প্রয়োজনীয়।

প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতা বা পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন এর ক্ষেত্রে স্বামী কিংবা পরিবারের অন্যদের বিশেষভাবে কিছু স্টেপ নিতে হবে যেমনঃ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মা-কে সর্বদা Motivated রাখা, তার বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করা, এমনকি তার অন্যায্য কোনো ব্যাবহারের সমালোচনা না করে ঠাণ্ডা মাথায় তাকে শান্ত করা এবং যথাসম্ভব তাকে সঙ্গ দেয়া। একা মায়েদের ক্ষেত্রে / কিংবা একক পরিবারে বিষয়টি অনেকখানি কঠিন হয়, যার কারণে গর্ভাবস্থায় এ বিষয়ের প্রয়োজনীয় প্ল্যান করে রাখা দরকার।

আপনি যদি নতুন মা হন, সেক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজে অন্যের সাহায্য নিন। অন্যেরা আপনার উপর বিরক্ত হচ্ছে কিনা, আপনি অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন কিনা, কেউ নিজে থেকে আপনাকে কেয়ার করছেনা কেন?- ইত্যাদি চিন্তা কিছুদিনের জন্য বন্ধ করার চেষ্টা করুন। সেইসাথে আপনার সমস্যা অন্যের সাথে শেয়ার করলে তারা আপনার সম্পর্কে কি ধারণা করবে- জাতীয় চিন্তা বাদ না দিলে সমস্যা বরং আরো বাড়বে। সমস্যা শেয়ার করুন এবং সাহায্য চান। আপনার এ সমস্যাটি আপনার একার নয় বরং পরিবারের সবার।

সিজারের পর নিচের লক্ষনগুলো দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারকে জানাতে হবে:

১০০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি জ্বর আসলে

পেটে হঠাৎ ব্যাথা হলে, পেট নমনীয় হতে উঠলে বা জ্বলুনি হলে।

কাঁটা স্থানে হঠাৎ ব্যাথা হলে বা পুঁজ দেখা গেলে।

যোনিপথে নির্গত তরলে দুর্গন্ধ হলে

পায়ের কোনো স্থান ফুলে গেলে, লাল হয়ে গেলে বা ব্যাথা হলে

প্রস্রাবের সময় জ্বালা পোড়া হলে বা প্রস্রাবের সাথে রক্ত গেলে

স্তনে বা বুকে ব্যাথা বা শ্বাসকষ্ট হলে।

সবশেষে মনে রাখতে হবে প্রসব পরবর্তী ৬-৭ সপ্তাহ পর মাকে অবশ্যই একবার চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

সম্পূর্ণ চেক-আপের জন্য আমাদের দেশে মায়েদের এই সেবা গ্রহণের হার খুবই কম। এ সময় চিকিৎসক মাকে সম্পূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন চিকিৎসা ও উপদেশ দিয়ে থাকেন।

এই চেকআপের সুবিধাসমূহ হচ্ছে- গর্ভধারণের সময় মায়ের শরীরে যে পরিবর্তন হয়েছিল তা পূর্বের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে কিনা চিকিৎসক তা নির্ণয় করে থাকেন।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার