‘সাদা পাথরে’ নতুন আশা
সিলেট সমাচার
প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২০
পাহাড়-পাথর-জল। একসঙ্গে এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেখা পাওয়া গেছে শুধু সিলেটের বিছনাকান্দিতে। সেখানে যেন পাথরের সুবিশাল এক ‘বিছনা’ (শয্যা) পাতানো। এ মৌসুমের প্রথম পাহাড়ি ঢলের সুবাদে ঠিক সে রকম আরেক ‘বিছনা’ তৈরি হয়েছে।
স্থানটি সিলেটের নতুন পর্যটনকেন্দ্র ‘সাদা পাথর’ এলাকা। ঢলের পানিতে ভেসে আসা পাথর সংরক্ষণ করায় প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে দৃশ্যমান হয়েছে নতুন পাথরের স্তূপ। নতুন জমা হওয়া পাথর যাতে সুরক্ষিত থাকে, সে জন্য ওই এলাকায় যাতায়াত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দুটি ফাঁড়ি বিশেষ নজরদারির মধ্যে রেখেছে পুরো এলাকা। স্থানীয় প্রশাসনসহ সেখানকার পর্যটন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আশা, করোনাকাল কাটলে নতুন এই পর্যটনকেন্দ্র বাড়তি আয়ের পথ দেখাবে।
‘সাদা পাথর’ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির পাশের একটি এলাকা। সীমান্তের শূন্য রেখার কাছে অবস্থান। ২০১৭ সালে পাহাড়ি ঢলে সেখানে প্রথম পাথর জমা হয়েছিল। কোম্পানীগঞ্জের তৎকালীন ইউএনও মোহাম্মদ আবুল লাইছ পাথরগুলো সংরক্ষণ করেছিলেন। এ নিয়ে ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোতে ‘ধলাইমুখে আবার জমল ধলাসোনা’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেই থেকে এলাকাটি ‘সাদা পাথর’ পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পায়।
সিলেটে পাহাড়-নদী-পাথরকেন্দ্রিক প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র বিছনাকান্দির পর সাদা পাথর এলাকা পর্যটকদের কাছে নতুন আকর্ষণ হয়ে ওঠে। বিপুলসংখ্যক পর্যটকের যাতায়াতে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ‘সাদা পাথর পরিবহন’ নামে বিশেষ বাস সার্ভিসও চালু হয়েছে। সিলেট অঞ্চলে কোনো পর্যটনকেন্দ্রের পর্যটনবাহী পরিবহন চালুর উদ্যোগ সেটিই ছিল প্রথম। প্রতিদিন সেখানে ১০ হাজার পর্যটকের পদচারণ ঘটে। ধলাই নদের ঘাট থেকে সাদা পাথর এলাকায় চলাচল করে দুই শতাধিক নৌকা। করোনা পরিস্থিতিতে পর্যটকদের যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য জানিয়েছেন, ২৬ মে থেকে টানা তিন দিন ভারী বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ি ঢল নেমেছিল। বৃষ্টি থামার এক দিন পর সাদা পাথর এলাকায় নতুন করে পাথর জমা হওয়ার খবর আসে। ওই দিনই একদল পরিদর্শক পাঠিয়ে নতুন পাথরের স্তূপ চিহ্নিত করা হয়।
কোম্পানীগঞ্জের ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা সুজন সাহা জায়গার প্রাথমিক মাপজোখ করে রেখেছেন। তিনি জানান, পাহাড়ি ঢলে এভাবে প্রতিবছর পাথর জমা হয় না। আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা বলেছেন, সেখানে প্রথম ১৯৯০ সালে পাথর জমা হয়েছিল। সেই বছর সব পাথর লুট হয়েছিল। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০১৭ সালে পাথর জমা হলে তখন লুটপাট ঠেকানোর দাবি তোলেন স্থানীয় লোকজন। সংরক্ষণ করার পর পর্যটনকেন্দ্রে রূপ নিয়েছে এলাকাটি। এবার তৃতীয় দফায় পাথর জমা হওয়ার পরপরই প্রশাসনের তাৎক্ষণিক নজরদারিতে দৃশ্যমান হয়েছে নতুন পাথর।
এখন পর্যটক যাওয়া বন্ধ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সিলেটের অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রের মতো সাদা পাথরে পর্যটক যাওয়া বন্ধ রয়েছে গত ২৫ মার্চ থেকে। সেই থেকে পর্যটকহীন গোটা এলাকা। নতুন পাথর সংরক্ষিত রাখতে যাতায়াত পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ধলাই নদের ঘাট থেকে সাদা পাথর এলাকায় এখন শুধু বিজিবি সদস্যদের যাতায়াত। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমরা সেখানে গেলাম গত ৩০ জুন।
ধলাই নদের ঘাট থেকে নৌকায় প্রায় ২৫ মিনিটের পথ। যে ঘাটে আগে আগন্তুক দেখলে নৌকার মাঝিরা রীতিমতো কাড়াকাড়ি শুরু করতেন। সেখানে এখন কেউ নেই। ঘাটে মাত্র একটি নৌকা। মাঝি তজম্মুল আলী একা বসা। মনমরা ভাব নিয়ে জানালেন, গত দুই মাসে এই প্রথম তিনি সাদা পাথরের পথে নৌকা চালালেন। একা একটি নৌকা, চলছিল হনহনিয়ে। ১৫ মিনিটের মধ্যে কাছাকাছি সাদা পাথর। দেখা গেল ওপারে সবুজ পাহাড়ের গা ঘেঁষে আরও নতুন পাথর।
দূর থেকে এ পাথরগুলোকে জলজ কোনো প্রাণীর মতো দেখাচ্ছিল। একের পর এক স্তূপ আকৃতির পাথর। ফাঁড়ির বিজিবি সদস্যরা দেখালেন নতুন পাথরের ‘বিছনা’। আগে যে পাঁচ একর জায়গায় পাথর ছিল, সেখানেও পাথরের আরেকটি স্তর জমা হয়েছে। নদের উৎসমুখের পানির তোড়ে দুই দিকে পাথর জমে তীরের মতো তৈরি হয়েছে। এপারে বাংলাদেশ, ওপারে ভারত। বেড়াতে গেলে শুধু এপারেই অবস্থান করতে হয়। সাঁতার কাটতে নেমে যাতে সীমানা লঙ্ঘিত না হয়, সে জন্য দুই পাড়েই খুঁটি দিয়ে চিহ্নিত করে রাখা।
সিলেটে নতুন পর্যটনকেন্দ্র
ঢলের পানিতে ভেসে আসা পাথরে প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে দৃশ্যমান হয়েছে নতুন পাথরের স্তূপ
নতুন করে যেখানে পাথর জমছে, সেটি দেখতে লম্বা আকৃতির। পুরোটা বাংলাদেশ অংশে পড়েছে। পাথরের স্তর প্রায় পাঁচ ফুট গভীর বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন। তাঁর ভাষ্য, নতুন পাথর সংরক্ষণে রাখতে পারলে পর্যটন এলাকার পরিসর দেড় গুণ বড় হবে। তখন বেড়াতে আসা মানুষজন সাঁতার কাটতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাবেন।
ধলাই নদের উৎসমুখের একটি অংশ ভারত সীমান্তে। সেখানে কয়েকটি পাহাড়ের ভাঁজ থেকে নেমে এসেছে একটি ঝরনা। নদের উৎস বলতে এই ঝরনাধারা। পাহাড়ে যখন ভারী বৃষ্টি হয়, তখন ঢল নামে। উজান থেকে ঢলের পানির সঙ্গে ভাটিতে নেমে আসে পাথর। ঢল তো প্রতিবছরই হয়, কিন্তু পাথর কেন বিরতি দিয়ে আসে? এমন প্রশ্ন শুনে বিজিবির এক সদস্য শূন্যরেখার কাছে নিয়ে দেখালেন ওপারে পাহাড় কেটে রাস্তা আর যত্রতত্র পাথর তোলার দৃশ্য।
সমতল থেকে দূর পাহাড়ের এ দৃশ্য দেখার সময় হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশ। বিজিবি সদস্য যেন কথার সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে উদাহরণও পেয়ে গেলেন। তিনি বলেন, লুংলংপুঞ্জিতে পাথর তুলতে পাহাড়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এভাবেই। এ কাজটি বর্ষাকালে বেশি হলে পাহাড়ি ঢলে পাথর আসার পরিমাণটাও বেড়ে যায়। ওপারে এবার বিস্ফোরণ বেশি হওয়ায় ঢলের সঙ্গে পাথর এসেছে বেশি।
বিজিবি ফাঁড়ি ঘরের পাশেই পর্যটকদের ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে সজ্জিত নৌকাগুলো ডাঙায় তুলে রাখা। অব্যবহৃত থাকায় জং ধরেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পর্যটক যাতায়াত আগের চেয়ে আরও বেশি হওয়ার আশা বিজিবি সদস্যদেরও। এই আশাবাদে নৌকার মাঝি তজম্মুলকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখাল। কথায় প্রবাদ জুড়ে দিয়ে তজম্মুল বললেন, ‘সবুরে মেওয়া ফলে। আমরার সবুরের ফল মনে অয় সাদা পাথরের ওই বিছনাটা!’
সাদা পাথর এলাকায় বিকেল গড়িয়ে নদের ঘাটে ফিরে দেখা গেল জনা পাঁচেক মানুষ। পাড়ুয়া গ্রামের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন তাঁর বন্ধ রেস্তোরাঁ পরিষ্কার করছিলেন। করোনাকালের আগে রেস্তোরাঁয় গড়পড়তায় প্রতিদিন এক হাজার কাপ চা বিক্রি হতো। প্রতি চায়ের কাপ পাঁচ টাকা। লকডাউন তোলার পর এক দিন রেস্তোরাঁ খোলা রেখেছিলেন। সারা দিন শুধু নিজেই চা খেয়েছেন। এক কাপ চা-ও বিক্রি করতে পারেননি। এরপর থেকে রেস্তোরাঁ বন্ধ রেখে গৃহস্থালি কাজ করছেন তিনি।
তজম্মুলের মতো আনোয়ারও জানালেন, তাঁরা ধৈর্য ধরে এ পরিস্থিতি কাটাচ্ছেন। তাঁদের এই ধৈর্যের ফল হয়তো সাদা পাথর এলাকায় নতুন পাথর জমা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাড়তি রোজগারের পথ দেখাবে সাদা পাথর।
- দেশে ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন
- রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে আছে ভারত: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
- সিলেটে বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির শঙ্কা
- র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের নতুন পরিচালক কমান্ডার আরাফাত
- মন্ত্রী-এমপির স্বজন যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি, সময়মতো ব্যবস্থা
- বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি করিডোরের জন্য কেনা হচ্ছে ১৩৭টি এসি বাস
- বেপজায় গার্মেন্টস পণ্য তৈরির কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সিলেটে মানববন্ধন
- সিলেট বিভাগের সেরা ওসি ছাতক থানার শাহ্ আলম
- নতুন সাজে ৫’শ বছরের পুরনো রামকৃষ্ণ জিউর আখড়া
- ফুটপাত দখল করে নগরীতে ব্যবসা, সিসিকের অভিযান ও জরিমানা আদায়
- ৫ জুন সিলেটের যে সাত উপজেলায় ভোট
- বিয়ানীবাজারে ভুট্টা মাড়াই মেশিন বিতরণ
- কে কোন প্রতীক পেলেন সিলেটের চার উপজেলার প্রার্থীরা
- বিশ্বনাথ পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ নারী কাউন্সিলরের
- সিলেটে সবজি ওঠাতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেল স্কুলছাত্রীর
- সিলেটে হোটেল থেকে একজনের লাশ উদ্ধার
- শাবিতে ডিজিটাল এটেন্ডেন্স সিস্টেমের উদ্বোধন
- ঢাকা ছেড়েছেন কাতারের আমির
- কানাইঘাটে ভাতিজাদের হাতে চাচা খুন
- সিলেটে বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির আভাস
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : দক্ষিণ সুরমায় কে কোন প্রতিক পেলেন
- উপজেলা নির্বাচনে ২-৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন - ইসি সচিব
- শ্রমিক সংকটে কৃষকের বন্ধু কম্বাইন হারভেস্টার
- ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড
- সিলেটে পৌছেছে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল
- সিলেটে পুলিশের অভিযান, আবারও আ ট ক ১০ জুয়াড়ি
- কুলাউড়ায় প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ
- এবার স্বাস্থ্যবীমার আওতায় শাবি কর্মচারীরা
- ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নি
- ভুটানে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট বানিয়ে দেবে বাংলাদেশ
- স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সেবা দিন, কর্মকর্তাদের ভূমিমন্ত্রী
- আইসিসির নারী সেরা দশে প্রথম বাংলাদেশি নাহিদা আক্তার
- প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা আজ
- কালোজিরা খাওয়ার ৫ উপকারিতা
- ভুটানে যাচ্ছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
- আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত
- মানুষের কষ্ট বৃদ্ধিতে বিএনপির নতুন সংস্করণ ভারত বিরোধিতা: নাছিম
- বসন্ত গায়ে মেখে রঙিন হয়ে উঠেছে শিমুল
- স্বাধীনতার ৫৩ বছরের মধ্যে ২৯টা বছর এই জাতির দুর্ভাগ্যের বছর
- বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ঘরে, শেষ প্রদীপও নিভে গেল দরিদ্র ফয়জুরের
- বড়লেখায় বিজিবির ইফতার ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
- বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সৌদি আরবের ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ
- ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়াকে টপকে যেতাম’
- স্বাধীনতার ঘোষণা , বঙ্গবন্ধুর রচনা
- বাবার হাতে লাগানো গাছ ছুঁয়ে দেখলেন ভুটানের রাজা
- বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত
- রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ও ভুটানের রাজা
- ঈদে ফাঁকা ঢাকায় বিশেষ নিরাপত্তা, নেই নাশকতার হুমকি