ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১১৯

সর্বোচ্চ আদালতে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২০  

ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ১০টা ১০ মিনিট। ভার্চ্যুয়াল বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাইক্রোসফট টিমস অ্যাপের মাধ্যমে একে একে যুক্ত হলেন দেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতি। এই ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হতে দেখা গেল রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতিকে। যুক্ত হলেন কার্যতালিকায় থাকা মামলা–সংশ্লিষ্ট আইনজীবীও। 

কার্যক্রম শুরুর আগে আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বললেন, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, শুনতে পাচ্ছেন? নাকি জুমে কার্যক্রম পরিচালনা করলে ভালো হয়। তখন সালাম জানিয়ে সমিতির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন বললেন, দেখা যাচ্ছে। তখন প্রধান বিচারপতি বললেন, ‘তাহলে আমরা শুরু করছি।’

তখন ঘড়িতে সোয়া দশটা। এর মধ্য দিয়ে দেশের বিচার বিভাগ তথা সর্বোচ্চ আদালত নতুন এক অধ্যায়ে যাত্রা শুরু করল।

সর্বোচ্চ আদালতের নতুন অধ্যায়ে যাত্রা
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের অধস্তন আদালত, হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বিচারিক কার্যক্রম চলে আসছে। এবার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আর সকাল সোয়া দশটা থেকে মাঝে ১৫ মিনিট বিরতি দিয়ে বেলা ১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চলে আদালতের কার্যক্রম। বিচারপতিরা নিজ নিজ বাসা থেকে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
সোমবার আদালতের কার্যতালিকায় থাকা ২০টি মামলার মধ্যে দুটির ওপর শুনানি নিয়ে আদেশ দেন আদালত। ১৬ জুলাই সকাল দশটা থেকে বেলা সোয়া একটা পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চের অপর পাঁচ সদস্য হলেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান।

কার্যক্রম শুরুর পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের জুডিশিয়ারির জন্য আজ ঐতিহাসিক দিন। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আইন (আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন) হয়েছে, সে জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়েছেন, সে জন্য কৃতজ্ঞতা। এ বিষয়ে সচেষ্ট ভূমিকার জন্য আইনমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। এ আইনের মাধ্যমে ডিজিটালি বিচার বিভাগ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। ভার্চ্যুয়াল কোর্ট স্বাভাবিক কোর্টের বিকল্প নয়। পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে স্বাভাবিক কোর্টের কার্যক্রমে ফিরে যাওয়া হবে।

এই যাত্রা সফল হবে, এমন আশা ব্যক্ত করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপিল বিভাগে যারা বিচারক আছি, আমরা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। কার্যক্রম (ভার্চ্যুয়াল কোর্ট) স্বাভাবিকভাবে চললে সপ্তাহের পাঁচ দিনই কোর্ট (ভার্চ্যুয়াল) পরিচালনার অভিপ্রায় ব্যক্ত করছি।’

এর আগে শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আজ বিচার বিভাগের জন্য ঐতিহাসিক দিন। বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে আদালত বসতে পারেননি। ১২ মে থেকে হাইকোর্টে ভার্চ্যুয়াল কার্যক্রম শুরু হয়। হাইকোর্ট বিভাগ সার্থকভাবে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালিয়ে যাচ্ছেন। ৬৩ কার্যদিবস আপিল বিভাগ বসতে পারেননি। আজ ১৩ জুলাই কার্যক্রম শুরু হলো। বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তির যে উন্নয়ন, আমরা তাতে আজ শামিল হলাম।’

এর পরপরই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘মহামারির মধ্যে মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়, সেখানে বিচার বিভাগের কার্যক্রমে চলছে, আমরা অংশ নিতে পারছি, সে জন্য প্রধান বিচারপতিসহ আদালতের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩৬ জন আইনজীবী মারা গেছেন। তাঁদের অনেকের করোনা ছিল, অনেকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। কথা দিচ্ছি, আইনজীবী সমিতি আদালতের কার্যক্রমে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে। তবে কোনো আইনজীবী অনুপস্থিতি থাকলে যাতে সময় দেওয়া হয়, তাদের মামলা যেন নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে নিবেদন রাখছি।

এরপর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। আদালতের কার্যক্রম চলাকালে কোন দিন (বার) কোন আবেদনের শুনানি হবে, আদালতের বিরতির সময় নির্ধারণ, আবেদন আপলোড করা, আদালতের ছুটি কমানো ও আপিলের সারসংক্ষেপ যথাযথভাবে দাখিল করার বিষয়ও আলোচনায় ওঠে।

কার্যতালিকায় থাকা পৃথক দুটি সিভিল আপিলের (কার্যতালিকার ২ ও ৩ নম্বর ক্রমিকে থাকা) ওপর শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দেন। এর মধ্যে দুই নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলাটিতে আপিলকারী পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। এই মামলায় অপর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। ৩ নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলায় আপিলকারী পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ পৃথক দুটি আপিল মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এ ছাড়া একাধিক মামলায় সংশ্লিষ্ট পক্ষের আইনজীবীদের সময়ের আরজি জানাতে দেখা যায়। ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও মোমতাজ উদ্দিন ফকির যুক্ত ছিলেন।

শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আজ প্রথম দিনেই বড় সফলতা। পূর্ণ সময় ধরে আদালতের কার্যক্রম চলেছে। আপিলের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানি হয়েছে। এক দিনে দুটি আপিল নিষ্পত্তি হয়েছে। সাধারণত একটি আপিল নিষ্পত্তির জন্য দু-তিন দিন চলে যায়।...আজ এখানেই শেষ করছি, সবাইকে ধন্যবাদ।’

ভার্চ্যুয়াল কোর্টের পূর্বাপর
সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরুর আগে চলতি বছরের গত ১২ মার্চ সর্বশেষ আপিল বিভাগ বসেছিলেন। অবকাশের পর আদালত খোলার প্রাক্কালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে উদ্ভূত প্রেক্ষাপটে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সাধারণ ছুটির সঙ্গে মিল রেখে আদালতেও ছুটি চলে। এমন প্রেক্ষাপটে সাধারণ ছুটি চলাকালে গত ৯ মে আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। ফলে অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার সুযোগ তৈরি হয়। অধ্যাদেশটি ৯ জুলাই আইনে পরিণত হয়। অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষেত্রে ভার্চ্যুয়াল কোর্টের জন্য পৃথক প্রাকটিস ডাইরেকশন (ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা) প্রকাশ করা হয়। ১১ মে থেকে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের পৃথক ১৩টি বেঞ্চে এবং আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম চলছে। এ অবস্থায় গতকাল ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত–সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আর আজ সর্বোচ্চ আদালতে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হলো, যা দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথম।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার