ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১১৬

যেসব ভেষজ আপনার সহায়ক

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২০  

বর্তমানে করোনাভাইরাস (SARS-CoV-2 ) দ্বারা সংক্রমিত বিশ্বব্যাপী একটি মহামারি রোগ কোভিড-১৯। এখন পর্যন্ত এর কোনো কার্যকর ভ্যাকসিন বা ড্রাগ আবিষ্কৃত হয়নি। বিভিন্ন ড্রাগ যেমন ক্লোরোকুইন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, এজিথ্রোমাইসিন ও ফেভিপিরাভিরের কথা বলা হলেও এসব ড্রাগ দিয়ে তেমন আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। উন্নত দেশগুলো তাই মানসম্মত চিকিৎসাসেবা থাকা সত্ত্বেও এই রোগের চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে হিমশিম খাচ্ছে। এই অবস্থায়, বিশ্ব ভ্যাকসিন বা ড্রাগের পাশাপাশি সহায়ক কিছু চিকিৎসার কথা ভাবছে। এ ক্ষেত্রে প্রকৃতিতে যেসব ভেষজ উদ্ভিদ ও অন্যান্য উপাদান পাওয়া যায় এবং যাদের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ভাইরাল ক্ষমতা আছে, তা বিবেচনাধীন হতে পারে।

আদা
আদা দক্ষিণ এশিয়ার একটি মসলা এবং এর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ক্যানসার, অ্যান্টি-ভাইরাল প্রতিক্রিয়া আছে। এটি শ্বাসযন্ত্রের প্রসারণ ঘটাতে সংক্ষম, যা ব্রোঙ্কোডিলেটিং নামে পরিচিত। পরীক্ষায় দেখা গেছে, গুরুতর করোনা রোগীদের মধ্যে যাঁরা আদা খেয়েছেন, তাঁদের অবস্থা তুলনামূলক ভালো অন্যদের তুলনায় এবং তাঁদের মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন ও আইসিইউর কম প্রয়োজন পড়েছে। এটি মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ) দ্বারা সাধারণত স্বীকৃত এবং করোনা আক্রান্ত রোগীরা এটি খেতে পারেন। প্রাপ্তবয়স্করা প্রতিদিন ৪ গ্রাম খেতে পারেন।

লবঙ্গ
শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতায় লবঙ্গ কাজ করতে পারে। গবেষণায় লবঙ্গের কুঁড়ি বা পাতা থেকে সংগৃহীত প্রয়োজনীয় তেলগুলোতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ভাইরাল কার্যক্রম পাওয়া গিয়েছে। এ থেকে প্রাপ্ত ইউজেনল ট্র্যাকিয়াল মসৃণ পেশিতে ভালো প্রভাব ফেলে এবং ব্রোঙ্কোডিলেটিং এবং অ্যান্টি-এজম্যাটিক হতে পারে। এটিও মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ) দ্বারা স্বীকৃত। এই ইউজেনল মানুষ দৈনিক ২ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম/কেজি দৈহিক ওজনের গ্রহণযোগ্য মাত্রায় ব্যবহার করতে পারে।

গ্রিন টি
গ্রিন টিতেও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ক্রিয়াকলাপ পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো গ্রিন টির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ক্যাটচিনস, বিশেষ করে এপিগ্যালোকটেকিন-৩-গ্যালেটের (ইসিজিজি) অনেক ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টি-ভাইরাল কার্যকলাপ দেখানো হয়েছে। একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে চা-এ ট্যানিক অ্যাসিড এবং ৩-আইসোথাফ্ল্যাভিন-৩-গ্যালেট (টিএফ২ বি) থাকে, যা ‘SARS-CoV’ দ্বারা সংঘটিত তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সিনড্রোমকে প্রতিরোধ করতে পারে। উল্লেখ্য যে এই সার্স করোনাভাইরাসের সঙ্গে বর্তমানের SARS-CoV-2-এর ব্যাপক মিল পরিলক্ষিত হয়। দৈনিক ৩ থেকে ৫ কাপ (৭২০ থেকে ১২০০ মিলি) গ্রিন টি গ্রহণের ফলে কমপক্ষে ১৮০ মিলিগ্রাম ক্যাটচিন এবং ৬০ মিলিগ্রাম থ্যানিন পাওয়া যায়। তবে খালি পেটে চা পান করা উচিত নয়।

কালো বীজ
জীবাণুর বিরুদ্ধে কালো বীজ একটি হাতিয়ার হতে পারে। এই বীজ থেকে প্রাপ্ত তেল শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে পারে। যেমন গামা ইন্টারফেরন, টিসেল এর সংখ্যাবৃদ্ধি এবং ম্যাক্রোফাজের কার্যকারিতা ও সংখ্যা কমানো। গবেষণায় দেখা গেছে, ফুসফুস জটিলতা–সংক্রান্ত এবং অন্যান্য শ্বাসজনিত সমস্যায় এর বীজ ও তেল দারুণ কাজ করে। প্রতিদিন ৫ মিলি পরিমাণ কালো বীজের তেল গ্রহণ করা যেতে পারে, এতে কোনো বিরূপ প্রভাব দেখা যায় না।

নিম
বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ হিসেবে নিম খুব পরিচিত। এটি ভাইরাসের বিরুদ্ধেও কাজ করতে পারে। ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এর লিমনয়েড নামক উপাদানটি নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংকট সিনড্রোমকে (এআরডিএস) প্রতিহত করতে পারে। ভাইরাল জ্বরের উন্নতি করতে পারে নিমপাতার রস। ১০ সপ্তাহব্যাপী দৈনিক ৬০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ডোজ নিরাপদে ব্যবহার করা যেতে পারে।

তুলসী
এটিও অনেক ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, এর ইথানলিক নির্যাস শরীরের আইএল-৬ নিঃসরণ এবং এনএফ-কে বি প্রকাশ বন্ধ করে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ক্ষমতা দেখায়, ফলে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সময় কম প্রদাহ হতে পারে। অবশ্য এর পাতা ও জলীয় অংশও ব্যবহার করা যায়।

ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-সি
ভিটামিন-ডি ভাইরাল সংক্রমণ রোধ করতে পারে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারে। সাধারণত, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি সাইটোকাইন দেখা যায়। ভিটামিন-ডি এই প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি সাইটোকাইন যেমন এনএফ-কে বি ও গামা ইন্টারফেরনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সূর্যের আলো এর গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এ ছাড়া দৈনিক হাফ-চামচ কডলিভার তেল, ১০০ গ্রাম রুই মাছ খাওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে, ভিটামিন–সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা শরীরের শ্বাসযন্ত্র ও সিস্টেমিক সংক্রমণকে রোধ করতে পারে। এটিও ভিটামিন-ডির মতো প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি সাইটোকাইনের মাত্রা হ্রাস করতে পারে, বিশেষ করে এটি ফুসফুসের অ্যালভিওলাসের পরিষ্কার, শরীরের নিউট্রোফিলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে ফুসফুসের ক্ষতি উপশম করতে পারে। এ জন্য, খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন ভিটামিন-সি রাখা দরকার।

জিংক
জিংক মানবদেহের প্রতিরোধব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি করোনাভাইরাসসহ নানা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এমনকি এটি করোনাভাইরাসের বংশবৃদ্ধির বিশেষ এনজাইম আরএনএ পলিমারেজকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য দৈনিক ১১ মিলিগ্রাম এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৮ মিলিগ্রাম জিংক সুপারিশ করে। জিংকের উৎস হলো গরুর মাংস, মুরগি, দই, মটরশুঁটি, মটর এবং কাজুবাদাম।

এই ভেষজ ও খাদ্যগুলো রোগের উপশম ও সামগ্রিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। এ অবস্থায় এই সহজলভ্য ও বৈজ্ঞানিক বিকল্প চিকিৎসাগুলো আমাদের শুধু করোনা নয়, অন্যান্য রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকারেও কার্যকরী হবে। নিশ্চয়ই এ আঁধার কেটে যাবে, আমরা জয়ী হব। এই বিষয়ে বাংলাদেশে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক। বর্তমানে প্রেষণে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সংক্রামক অণুজীব নিয়ে গবেষণা তাঁর মূল ক্ষেত্র।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার