ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৭৩৮

মৃত্যুপথযাত্রী বাংলাদেশির শেষইচ্ছা পূরণ করলেন সিঙ্গাপুরিয়ানরা

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২০  

সিঙ্গাপুরের একটি শিপইয়ার্ডে কাজ করতেন বাংলাদেশি নাগরিক শিকদার রানা। গত মাসে হঠাৎ করেই জানা যায়, পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। অসুখ গুরুতর পর্যায়ে চলে যাওয়ায় আর বাঁচার আশা নেই ৩৪ বছর বয়সী এ ব্যক্তির। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী।

কিন্তু বিদেশ-বিভূঁইয়ে একা একা প্রিয়মুখগুলোকে না দেখেই চিরবিদায় নেয়াটা যে আরও কঠিন। তার ওপর দু’দিন পরেই ঈদ। এমন সময় প্রিয় মা আর সন্তানের কাছে পৌঁছানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন তিনি। গত ১৯ মে দেশে ফেরার সব বন্দোবস্তও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাতে বাধ সাধে করোনাভাইরাস। মহামারির কারণে গত ১৪ মে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ। ফলে বাতিল হয়ে যায় সব ফ্লাইট। দেশে লকডাউন চলবে অন্তত ৩০ মে পর্যন্ত। কিন্তু সেই পর্যন্ত রানা বেঁচে নাও থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।

তাহলে কি অপূর্ণই থেকে যাবে তার আশা? শেষবারের মতো সন্তানের মুখ দেখতে পারবেন না? বিদেশে একলা একাই নিভৃতে পাড়ি দেবেন পরপারে?

সবার মনে যখন এমন প্রশ্ন, তখন অনেকটা দেবদূতের মতোই এগিয়ে এলেন ডা. সিনথিয়া গোহ। তিনি ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার সিঙ্গাপুরের সাপোর্টিভ অ্যান্ড প্যালিয়েটিভ ডিভিশনের সিনিয়র কনসালট্যান্ট। গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকর্মীদের কাছ থেকে শিকদার রানার শেষইচ্ছার কথা জানতে পারেন ডা. সিনথিয়া।

তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে মেডিকেল এভাক্যুয়েশন ফ্লাইটের জন্য ৫৫ হাজার ডলারের মতো খরচ হবে এবং আগামী মাসের আগে কোনও বাণিজ্যিক ফ্লাইটও নেই।

অথচ হাতে সময় বেশি নেই। রানার অবস্থা দিনদিন আরও খারাপ হচ্ছে। তার ইচ্ছাপূরণ করতে হলে দ্রুত নিজ দেশে পাঠাতে হবে।

ডা. সিনথিয়া সিঙ্গাপুরিয়ান সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইট টাইমকে বলেন, ‘তিনি (রানা) একেবারে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন… এমনকি যখন জানলেন তার আর কোনও চিকিৎসা নেই, তিনি স্বেচ্ছামৃত্যুর কথাও বলেছিলেন। কিন্তু ছেলেকে দেখার সাধই তাকে টিকিয়ে রেখেছিল।’

‘তিনি হয়তো তার দেশ খুলে দেয়া পর্যন্ত না-ও টিকতে পারেন, তাই আমরা যত দ্রুত সম্ভব তাকে বাড়ি পাঠাতে চাচ্ছিলাম।’

রানার জন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মেডিকেল এভাক্যুয়েশন ফ্লাইটের জন্য অর্থ সংগ্রহ জরুরি হয়ে পড়েছিল। সহযোগিতার খোঁজে বের হলে গত বৃহস্পতিবার ডা. সিনথিয়াকে মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স সেন্টারে (এমডব্লিউসি) পাঠানো হয়। এটি মূলত সিঙ্গাপুরের জনশক্তি মন্ত্রণালয় ও ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস অ্যান্ড এমপ্লয়ার্স সমর্থিত অভিবাসী শ্রমিকদের একটি কল্যাণমূলক সংস্থা।

এসময় এমডব্লিউসি দু’টি পথ বের করে- ডোনেশনের জন্য আবেদন করা এবং ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সোশ্যাল সার্ভিসের প্রেসিডেন্ট আনিতা ফ্যাম ও এমডব্লিউসি’র চেয়ারম্যান ইয়ো গুয়াত কোয়াং তাদের ব্যক্তিগত ক্ষমতায় এভাক্যুয়েশনের খরচ দেয়া। এর ভিত্তিতে রানাকে দেশা ফেরাতে গত শুক্রবার একটি গ্যারান্টি লেটারের অনুমোদন দেয় মেডিকেল এভাক্যুয়েশন কোম্পানি হোপ মেডফ্লাইট এশিয়া।

পাশাপাশি, এয়ারক্রাফট চার্টার্স ইউনিয়নের মাধ্যমে ফ্লাইট খরচে কিছুটা ছাড়ও আদায় করে নেয় এমডব্লিউসি। ফলে হোপ মেডফ্লাইট এশিয়া তাদের বিল নামিয়ে আনে ৪৮ হাজার ডলারে।

বর্তমানে গিভিং.এসজি নামে একটি ওয়েবসাইটে রানার জন্য তহবিল সংগ্রহ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সেখানে ৬০ হাজার ডলার জমা হয়ে গেছে।

সিঙ্গাপুরের একদল মহানুভব মানুষের আপ্রাণ চেষ্টায় গত শুক্রবারই দেশে ফিরেছেন শিকদার রানা। সোমবার ঈদ করেছেন মা, স্ত্রী ও প্রিয় পুত্রের সঙ্গে। তৃপ্তিভরে খেয়েছেন মায়ের হাতের রান্না সেমাই ও খিচুড়ি।

রানা স্ট্রেইট টাইমসকে বলেন, ‘এটাই সম্ভবত আমার শেষ ঈদ। দীর্ঘদিন পর মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ নিতে পারলাম। মনে হচ্ছে বেহেশতে আছি। জানি না কতজন আমাকে সাহায্য করায় জড়িত, কিন্তু তাদের প্রত্যেককেই হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে ধনবাদ জানাই। তাদের কারণেই আজ আমি আমার ছেলের সঙ্গে। তাদের কারণেই আমি আজ শান্তিতে মরতে পারব।’

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার