ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৩৪

বর্ষার ফল করমচা

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২১  

করমচা, টক স্বাদের ছোট আকৃতির মুখরোচক একটি ফলের নাম। কাঁটায় ভরা ফলটি গ্রাম থেকে এখন শহরেও চাষ করা হয়। কারও কারও বাড়ির ছাদ কিংবা বারান্দায়ও দেখা মেলে করমচার। এক সময়ে গ্রামে করমচার প্রচুর ফলন হতো। কিন্তু বন-জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করা এবং জমি কেটে বাড়িঘর নির্মাণ করার ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে করমচা। করমচা নিয়ে কবিরা ছড়া লিখেছেন- ‘আয় বৃষ্টি ঝেপে ধান দেব মেপে, লেবুর পাতায় করমচা যা বৃষ্টি ঝরে যা’। বৃষ্টি নামতে কবিরা তাদের ছড়ায় করমচার কথা বলেন। 

করমচা খুবই জনপ্রিয় টক জাতীয় ফল। কাঁটায় ভরা এ গাছ, পাতা ও ফলে নান্দনিকতার ছোঁয়া থাকায় অনেকে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্যও এ গাছ রোপণ করে থাকেন।

করমচার বৈজ্ঞানিক নাম ক্যারিসা ক্যারোন্ডাম। কনটোরটি বিভাগে অ্যাপোসাইনেসি শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করমচা ফলের আদিনিবাস ক্যারোনডাস প্রজাতি ভারতবর্ষ, গ্রান্ডিফোরা প্রজাতির দক্ষিণ আফ্রিকা এবং এডুইলিস প্রজাতির মিসরে। তবে ভারতবর্ষে এসব প্রজাতির করমচা দীর্ঘদিন ধরে চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় সমতল ভূমিতে করমচা চাষ করা যায়। অ্যাপোসাইনেসি শ্রেণিতে ১৫৫ বর্ণের প্রায় এক হাজার গোত্রের করমচা গাছ দেখা যায়।

করমচা গাছ বেশ ঝোপতলা ধরনের শক্ত জাতের কাঁটাওয়ালা গুল্ম। বড় সাদা ও ফিকে গোলাপি রঙের সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত করমচা ফুল দেখতে কিছুটা কুন্ধ ফুলের মতো। এর ফলের রঙ কাঁচায় গাঢ় সবুজ, পাকায় লাল হয়। কোনো কোনো জাতের ফলের গায়ে খয়েরি দাগ থাকে। চেরি ফলের মতো দেখতে করমচা ফল বেশ শাঁসালো, ভেতরে ছোট ছোট চার-পাঁচটি বীজ থাকে। গাছ ও ফলে দুধের মতো আঠালো রস রয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে গাছে ফুল আসে এবং ফল ধর এপ্রিল-মে মাসে। এছাড়া বর্ষায় ফল পাকে। অনেক সময় আবার অনিয়মিতভাবে কমবেশি প্রায় সারা বছরই করমচা ফলে।

করমচা গাছ গরম, আর্দ্র কিংবা শুষ্ক পরিবেশে ভালো জন্মে। এছাড়া বেলে-দোআঁশ বা হালকা মাটিতে করমচা জন্মাতে ভালোবাসে। অম্লমাটি অপেক্ষা কিছুটা ক্ষারভাবাপন্ন মাটি বেশি পছন্দ করে। করমচা চাষে জমি উঁচু হলেই ভালো তবে নিচু জমিতেও চাষ করা চলে যদি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো থাকে। গাছ লাগানোর ১৫-২০ দিন আগে থেকে গর্ত তৈরি করতে হবে। বাগানে চাষ করতে হলে গর্ত তৈরির আগে ৩০ সেমি. গভীর করে জমি চাষ করে নিতে হবে। গর্তের মাঝখানে চারা বসিয়ে পানি সেচ দিতে হবে। চারার গোড়ার মাটি শক্তভাবে চেপে দিতে হবে; যাতে গাছ পড়ে না যায়। বর্ষাকালে চারা রোপণ করা ভালো। এতে বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় না। শীতকাল বাদে অন্য সময়েও চারা রোপণ করা যায়। সার প্রয়োগ ক্ষেত্রে প্রতি বছর বর্ষার আগে করমচা গাছের গোড়ার মাটির সাথে ১০ কেজি কম্পোস্ট সার ২৫ গ্রাম সুফলা মিশিয়ে দিলে উপকার হয়। বড় গাছে সার প্রয়োগের প্রচলন কম হলেও ভালো ফলন পেতে গোবর সারের সাথে ৫০ গ্রাম সুফলা দিতে হবে।

করমচা গাছের পরিচর্যার বেলায় ফল শেষ হয়ে যাওয়ার পর ঘন ডালপালা ছেঁটে কিছু হালকা করে দেয়া দরকার। গোড়ায় মাটি ধরিয়ে বর্ষার আগে একটু উঁচু করে দিতে হবে। যাতে বৃষ্টির পানি না দাঁড়ায়। মাঝে মধ্যে গোড়ায় মাটি আগাছামুক্ত করে হালকা করে কুপিয়ে দিতে হবে।

করমচা খুব শক্ত ধরনের গাছ এবং দেহে আঠালো রস থাকায় রোগ ও পোকায় সহজে আক্রমণ করতে পারে না। তবে ফল ছিদ্রকারী পোকা ফলের ছোট অবস্থায় ভেতরে ঢুকে শাঁস খেয়ে ফেলে। 

এবার আসা যাক করমচার পুষ্টি ও ওষুধি গুণের কথা। করমচা পুষ্টিগুণে যেমন সমৃদ্ধ, তেমনি আছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তবে যাদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি, তাদের করমচা না খাওয়াই ভালো। তাজা করমচা নিয়মিত খেলে অনেক রোগ এড়ানো যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, বাজারে প্যাকেটে করে চেরির নামে কৃত্রিম রং দেওয়া করমচা বিক্রি হয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। 

করমচা ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ। এ ফলের অনেক গুণ। করমচা ফলের মধ্যে রয়েছে ১৮.২ ভাগ জলীয় রস, ২.৩ ভাগ প্রোটিন, ২.৮ ভাগ খনিজ, ৯.৬ ভাগ স্নেহ, ৬৭.১ ভাগ শর্করা। এছাড়া খনিজের মধ্যে ক্যালসিয়াম ০.১৬ ভাগ, ফসফরাস ০.৬ ভাগ এবং লৌহ ৩৯.১ ভাগ। প্রতি ১০০ গ্রাম করমচা থেকে পাওয়া যায় ৩৬৪ ক্যালরি তাপ, রিবোফ্লেভিন ০.১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ২৬০ মিলিগ্রাম, কপার ০.২ মিলিগ্রাম এবং ১০০ গ্রাম তাজা ফলে রয়েছে ২০০.৯৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। করমচায় চর্বি এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে না।

ভিটামিন সি-তে ভরপুর করমচা মুখে রুচি বাড়ায়। এ ফল রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃৎপিণ্ডের সুরক্ষা দেয়। শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ কমাতেও সাহায্য করে। যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধে আছে বিশেষ ভূমিকা। এছাড়া  মৌসুমি সর্দি-জ্বর, কাশিতে করমচা খান বেশি করে। এদিকে করমচাতে থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বক ভালো রাখে। এতে থাকা ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা দেয়।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার