পছন্দের সব খাবার খেয়েও মেদ ঝরবে সহজ এই উপায়ে!

 

মেদ কমাতে অনেকেই মজার মজার খাবারগুলো খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু এইটা হচ্ছে সব থেকে ভুল একটি ধারণা। খাওয়া ছেড়ে দিয়ে কখনোই মেদ কমানো যায় না।

তাই পছন্দের সব খাবার খেয়েও নিয়ন্ত্রণে রাখুন নিজেকে। মেদ ঝরাতে কিছু দারুণ কৌশল রয়েছে, যা জানলে ভুল ডায়েট করে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিটা আর থাকবে না। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সব খেয়েও মেদ ঝরানোর দারুণ উপায়-

ফ্যাট গলান ফ্যাট খেয়ে

ফ্যাট খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে, তৃপ্তিও বেশি হয়। বশে থাকে ওজন ও চর্বি। তবে ভাজা, প্রসেস্ড ফুড বা ফাস্ট ফুড থেকে পাওয়া ফ্যাট নয়। এরা হল ক্ষতিকর ফ্যাট। অল্প করে উপকারি ফ্যাটসমৃদ্ধ বাদাম বীজ, অ্যাভোক্যাডো, গোটা ডিম, তৈলাক্ত মাছ, দুধ, পিনাট বাটার ও অলিভ অয়েল খান।

কার্বোহাইড্রেট কম

মিষ্টি, ময়দা, নরম পানীয়, ফলের রস বাদ রাখুন। ভাত, রুটি, পাউরুটি কম পরিমাণে খান। ব্রাউন রাইস, ব্রেড, আটার রুটি, পাস্তা, নুডুল, খোসাসমেত আলুতে সমস্যা কম থাকে। তাও আগের চেয়ে কম খান।  ফল খান মাপ মতো। সবুজ শাক-সবজি পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে। পূর্ণবয়স্ক, সুস্থ ও সচল মানুষ সারা দিনে ১০০ গ্রাম চালের ভাত বা আটার রুটি, ৫০ গ্রাম ডাল, ৫০০ গ্রাম শাক-সবজি, অন্তত ২০০ গ্রাম ফল ও এক কাপ দুধ খান।

পর্যাপ্ত প্রোটিন

প্রোটিন খেলে খিদে কমে, পেশী তরতাজা থাকে। ক্যালোরি খরচ বাড়ে। পূর্ণবয়স্ক, সুস্থ ও মাঝারি সচল মানুষ এক গ্রাম বা কেজি হিসেবে খান। অর্থাৎ ৬০ কেজি ওজন হওয়ার কথা হলে খাবেন ৬০ গ্রাম। বেশি ব্যায়াম করলে এর দেড়গুণ বা দ্বিগুণ খেতে হতে পারে। ১০০ গ্রাম মাছ, মাংস, ডালে ২০ গ্রাম প্রোটিন থাকে। ৫০ গ্রাম ডিমে থাকে ৬-৬.৫ গ্রাম, ১০০ মিলি দই বা দুধে ৪ গ্রাম। কোনটা কী ভাবে খাবেন তা ঠিক করুন।

 
ফ্যাট কমানোর যুদ্ধে ফাইবার

পূর্ণবয়ষ্ক, সুস্থ ও মাঝারি কর্মক্ষম মানুষ মাপ মতো শাক-সবজি-ফল ও হোল গ্রেইন খেলে ১২-১৪ গ্রাম ফাইবার পায় শরীর। তাতে পেট বেশিক্ষণ ভরা থাকে, ১০ শতাংশের মতো ক্যালোরি কম ঢোকে ও ৪ মাসে দুই এক কেজির মতো ওজন কমে। অতটা না খাওয়া হলে দিনে দুই বার তিন চামচ করে ইসবগুল খেতে পারেন।

সন্ধ্যার পর স্টার্চ কম

বিকেলের পর থেকে খাটাখাটনি কমে যায় বলে স্টার্চ যত কম খাবেন তত ভালো। তার বদলে খান শাক-সবজি, সালাদ, ক্লিয়ার স্যুপ, মাছ/চিকেন/পনির।

রাতের খাবার বিকেলে

ডিনার করুন ৬ থেকে ৭টা, বড়জোর ৮টায়। তারপর ঘরের কাজ সারুন, হাঁটাহাটি করুন। ঘণ্টা দুয়েক পর ঘুমতে যান।

ক্রাশ ডায়েট নয়

খুব কম খেলে পেটে খিদে থাকে। বাড়ে ভুলভাল খাওয়া। তাছাড়া দীর্ঘ দিন ক্রাশ ডায়েট করলে বিপাক ক্রিয়ার হার কমে গিয়ে পরে সমস্যা বাড়ে।

ক্যালোরিহীন তরল

চিনি,দুধ ছাড়া চা-কফি কয়েক বার খেতে পারেন। পানি খান অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস। পারলে একটু ঠান্ডা পানিই খাওয়া ভালো।

খাওয়ার নিয়ম

খাওয়ার সময় ঠিক রাখুন। পেট একটু খালি রেখে খান। দিনে ৩ বার মূল খাবারের সঙ্গে ইচ্ছে হলে মিড মর্নিং ও বিকেলে হালকা কিছু খেতে পারেন।

নিশ্ছিদ্র ঘুম

খিদে, খাই–খাই ভাব ও চর্বি কমাতে ভাল ঘুম চাই। কাজেই সন্ধ্যার পর থেকে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, গম্ভীর আলোচনা, কফি পান ইত্যাদি বন্ধ করুন।

হাঁটুন খালিপেটে

সকালে দুধ-চিনি ছাড়া কফি বা চা খেয়ে ৪০ থেকে ৬০ মিনিট এমন ভাবে হাঁটুন, যাতে হার্টরেট আপনার বয়স অনুপাতে ঠিক থাকে। বয়স ভেদে কত হার্টরেট ঠিক তা জেনে নিন চিকিৎসকের কাছ থেকে।  

দিনভর সচল থাকুন

সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেছে ঘণ্টা চারেক একটানা বসে থাকলে কোলেস্টেরল ও ফ্যাট মেটাবলিজমের সমস্যা হয়। তাই সেই দিক রুখে দিতে পারলে অনেকটা ঝরঝরে থাকবেন। অফিসেও একটানা না বসে এক-দুই ঘণ্টা অন্তর একটু হাঁটাহাঁটি করে আসুন।