দুই টাকায় পাঠদান

করোনার কারণে দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। এ জন্য শিক্ষা গ্রহণে পিছিয়ে পড়ছে অনেক দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা। স্কুলশিক্ষকের পাঠদানের বাইরে প্রাইভেটও পড়তে পারে না অনেক শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা পালা করে তাদের পড়ানো শুরু করেছেন সুলতান মাহামুদ পার্থ নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। এ জন্য মাসে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দুই টাকা করে নিয়ে থাকেন তিনি।

পার্থ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌর সদরের বাকাইল গ্রামের শেখ আকরামুজ্জামান আকরামের ছেলে। বর্তমানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ১৫ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করেন তিনি। পাশাপাশি গ্রামের প্রতিটি ঘরে বই পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে টিউশনির টাকা জমিয়ে গড়ে তুলেছেন ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি।

সুলতান মাহামুদ পার্থ বলেন, এলাকার অনেক দরিদ্র পরিবারের সন্তানের কথা ভেবে প্রাইভেট পড়াচ্ছি। একটা ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি করেছি। বাড়িতে গিয়ে বই পৌঁছে দেবো। এ বয়সে অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে ভিন্ন পথে চলে যাচ্ছে। তারা যদি বই পড়ার প্রতি আগ্রহী হয়, তাহলে আর খারাপ পথে যাবে না।

আলফাডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীরা স্মার্টফোনে অধিকাংশ সময় ব্যয় করে। তারা বই পড়তে চায় না। পার্থ যে উদ্যোগ নিয়েছে, সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। 

তিনি বলেন, যে তরুণ-তরুণী ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের বলব মোবাইলে সময় না দিয়ে বই পড়তে। বই পড়ার বিকল্প নেই। পার্থর জন্য শুভ কামনা রইল।

পৌর মেয়র সাইফুর রহমান বলেন, সুলতান মাহামুদ পার্থকে পৌরসভার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান বলেন, সুলতান মাহামুদ পার্থকে ধন্যবাদ জানাই। আমি চাই তার এই কর্মকাণ্ড দেখে অন্য ছেলেমেয়েরাও পাশে দাঁড়াক। আমরা এ কাজের জন্য তাকে সাহায্য করব।