ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৬৬

দন্তচিকিৎসার শুরু প্রাচীনকালেই, নাপিতরা ছিল চিকিৎসক

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০২১  

দাঁতের সুরক্ষায় দুইবেলা ব্রাশ করা কিংবা ছয়মাসে একবার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া। এমন অনেক সতর্কতা থাকলেও কয়েকশ বছর আগে এগুলো ছিল আদিখ্যেতা। বর্তমানে দাঁতের যে কোনো সমস্যার রয়েছে নানা রকমের উন্নতমানের চিকিৎসা। আর দিন দিন তৈরি হচ্ছে নানা রকম ব্যবহার্য যন্ত্রপাতিও। রয়েছে অভিজ্ঞ চিকিৎসক। 

তবে জানেন কি? দাঁত বা দন্তচিকিৎসা শুরু হয়েছিল প্রাচীনকালেই। বর্তমানের মতো নিঃশ্বাসে সজীবতা কিংবা দাঁতকে ঝকঝকে সাদা করে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোনো প্রচারণা চালানো হতনা। জীবাণু থেকে সুরক্ষা কিংবা দাঁতের মাড়ি সুরক্ষিত রাখার এমন অভিনব সব পণ্যও তখন তৈরি হয়নি। প্রাচীনকালে যখন ঔষধশিল্প, চিকিৎসাবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি- কোনোটিরই তেমন বিকাশ ঘটেনি। তবে কীভাবে তারা রক্ষা পেত দাঁতের সমস্যা থেকে। নাকি এখনকার মতো তখনো চিকিৎসা এবং চিকিৎসকও ছিল। তাহলে কীভাবে তারা চিকিৎসা করতেন। 

 

দাঁতের গর্ত ঠিক করতে ব্যবহার হত বার্লি, ডুমুরসহ বিভিন্ন কিছু

দাঁতের গর্ত ঠিক করতে ব্যবহার হত বার্লি, ডুমুরসহ বিভিন্ন কিছু

ইতিহাসে প্রাচীন মিশরে দাঁতের সমস্যা এবং এর সমাধানের নজির পাওয়া যায়। এমনকি মধ্যযুগেও ছিল দন্ত সমস্যা সমাধানের নানান চেষ্টা। প্রাচীনকাল বা আমাদের পূর্বপুরুষদের দাঁত ও মুখগহ্বর আমাদের তুলনায় বিস্ময়কর রকমের সুস্থ ও নীরোগ ছিল। এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে অনেক। এখন দাঁতের ক্ষয়রোগের যে প্রবণতা দেখা যায়, তখনকার সময় তা এত প্রকট ছিল না। এর পেছনে অবশ্য তাদের স্বাস্থ্যকর এবং নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। 

আধুনিককালের দন্তচিকিৎসকেরা সুস্থ দাঁতের জন্য হরহামেশাই যেমন খাদ্যতালিকা অনুসরণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন, ঠিক তেমন খাদ্যতালিকাই প্রচলিত ছিল মধ্যযুগে। বিভিন্ন ধরনের ফল, সবজি, শস্যদানা আর ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত পণ্য- এগুলোই ছিল তখনকার মূল খাবার। চিনির দাম বেশ চড়া হওয়ায় সে সময় চিনি মোটামুটি বিলাসদ্রব্যের পর্যায়েই পড়তো। জনসাধারণ মিষ্টি খাবার তৈরিতে চিনির পরিবর্তে মধু ও ফলের রস ব্যবহার করতো, তাও খুব কম । ফলে তাদের দাঁতে গর্ত বা ক্যাভিটি হতো না বললেই চলে। কালক্রমে চিনির উৎপাদন ও ব্যবহার যেমন বিস্তৃতি লাভ করেছে, এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মানুষের দাঁতের রোগ। এবার প্রাচীন কিছু সভ্যতার সময়কাল থেকে তাদের দাঁতের রোগ ও তৎকালীন চিকিৎসা সম্পর্কে জানা যাক।

মিশরীয় সভ্যতায় দন্তচিকিৎসা

 

মিশরীয়দের মমি পরীক্ষার সময় জানা যায়, সেই সময় তারা দাঁতের নানান সমস্যায় ভুগত

মিশরীয়দের মমি পরীক্ষার সময় জানা যায়, সেই সময় তারা দাঁতের নানান সমস্যায় ভুগত


বিভিন্ন সময় প্রত্নতাত্ত্বিকরা খননকার্যের মাধ্যমে মিশরীয় সভ্যতা সম্পর্কিত তথ্য উদঘাটন করেছেন। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে সেই সময়কার মানুষের জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস, আচার-সংস্কৃতিসহ নানা কিছু। তৎকালীন সময়ের মিশরীয়দের মমি হচ্ছে সবচেয়ে যুগান্তকারী আবিষ্কার। এসব মমি পরীক্ষা করে দেখা যায়, জীবদ্দশাতেই তাদের অধিকাংশের দাঁত ভীষণভাবে ক্ষয়ে গিয়েছিল। এর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে  দায়ি করা হয়, তাদের নিম্নমানের খাদ্যাভ্যাসকে। তাদের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ও খনিজের অভাব তো ছিলই, উপরন্তু তারা যে রুটি খেতো, তাতে ভুসি, খড় এমনকি পাথর ও ধূলিকণাও মিশে থাকতো। খাবারের সঙ্গে এ ধরনের ধারালো, শক্ত পদার্থ চিবানোর কারণে তাদের দাঁত খুব দ্রুত ক্ষয়ে যেত। এছাড়া মরুভূমির ধূলিময় পরিবেশেরও এক্ষেত্রে কিছুটা ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। মিশরীয় দন্তচিকিৎসকদের লিপিবদ্ধ করা তথ্য থেকে জানা যায় যে, তাদেরকে সেসময় দাঁতের গোড়ায় পুঁজ জমা, দাঁতের পাথর, মাড়ির রোগ, পেরিওডন্টাল লিগামেন্টের প্রদাহ, চোয়ালের হাড়ের সমস্যা, নড়ে যাওয়া দাঁত, মুখের ভেতরের ক্ষত ও ঘাঁ, এমনকি দাঁতের সংক্রমণ থেকে ছড়িয়ে পড়া বিষক্রিয়ার চিকিৎসাও করতে হয়েছে।

মিশরীয় সভ্যতায় প্রচলিত চিকিৎসাপদ্ধতিসমূহের সংকলন ‘এবার'স প্যাপাইরাস’-এ সে সময়কার দন্তচিকিৎসার এগারোটি পন্থা তুলে ধরে হয়েছে। যার একটিতে নড়বড়ে দাঁতের চিকিৎসায় ‘ফিলিং’ এর ব্যবহার দেখা যায়। এই ‘ফিলিং’ তৈরিতে ব্যবহার করা হতো বার্লি, মধু আর অ্যান্টিসেপটিক। এরপর তা দিয়ে নড়ে যাওয়া দাঁতে ফিলিং দেয়া হতো অথবা দাঁতটিকে তার সকেটের হাড়ের সঙ্গে আটকে স্থির করে দেয়ার চেষ্টা করা হতো। শুধু তা-ই নয়, এরপর রোগীকে ব্যথা ও প্রদাহ কমার জন্যে, দাঁত ও মুখ সুস্থ রাখার জন্যে বিভিন্ন সিরাপ এবং মাউথওয়াশও ব্যবহার করতে হতো। 

 

নকল দাঁতেরও ব্যবহার প্রচলন ছিল মিশরে

নকল দাঁতেরও ব্যবহার প্রচলন ছিল মিশরে

এছাড়াও মধু, গিরিমাটি ও গমের চূর্ণের মিশ্রণ, জিরা, ফল ও ভেষজ উপাদানের মিশ্রণ, কিংবা শুধু কাপড়ের টুকরোকেও ফিলিং হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তৎকালীন চিকিৎসা কেবল ভেষজ ওষুধপথ্য দিয়ে রোগ সারানোতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, দাঁতে জমা হওয়া পুঁজ ড্রিল করে বের করাসহ মাড়ি এবং চোয়ালের নিখুঁত সব অস্ত্রোপচারও করতেন সে সময়কার দন্তচিকিৎসকগণ। খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ সালেই মুখগহ্বরের অস্ত্রোপচারে ফরসেপ, স্কালপেলসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতির ব্যবহার হতো।

আধুনিককালে দাঁত পড়ে গেলে যেমন ব্রিজ করে দাঁত প্রতিস্থাপন করা হয়, প্রাচীন মিশরে প্রায় সে ধরনের চিকিৎসারও তিনটি নিদর্শন পাওয়া গেছে। পড়ে যাওয়া দাঁতকে ফুটো করে, স্বর্ণ বা রৌপ্যনির্মিত তার দিয়ে সেটিকে পাশের সুস্থ দাঁতের সঙ্গে বেঁধে রাখতে দেখা গেছে এসব নিদর্শনে। এর কোনোটিতে রোগীর নিজের পড়ে যাওয়া দাঁতটিই ব্যবহার করা হয়েছে, আর কোনোটিতে সংগৃহীত দাঁত কাজে লাগানো হয়েছে। তবে এই চিকিৎসা রোগীর জীবদ্দশায়ই করা হয়েছিল, নাকি তার সৎকারের সময় তাকে নিখুঁত করে তোলার জন্যে করা হয়েছিল, তা সঠিকভাবে জানা যায়নি।

মধ্যযুগে দন্তচিকিৎসা

 

বেশিরভাগ সময় দাঁতের সমস্যার সমাধানে দাঁত তুলে ফেলা হত

বেশিরভাগ সময় দাঁতের সমস্যার সমাধানে দাঁত তুলে ফেলা হত


মধ্যযুগে অধিবাসীরা দাঁত সাদা রাখা এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখার ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ছিল। মোটা দানার লবণ আর কাঠকয়লার মিহি গুঁড়াকে তারা ব্যবহার করতো টুথ পাউডার হিসেবে। স্বাদ ও সুগন্ধের জন্যে এর মধ্যে মেশানো হতো পুদিনা, ভূঁই-তুলসী, মৌরি, রোজমেরি ইত্যাদি। খসখসে কাপড়ের টুকরোর মধ্যে এই মিশ্রণ নিয়ে তা দিয়ে ঘষে দাঁত ও মাড়ি পরিস্কার করা হতো। মদ বা সিরকার মধ্যে দারুচিনি, লবঙ্গ, পুদিনা বা মৌরি ভিজিয়ে রেখে তৈরি করা হতো মাউথওয়াশ।

এগুলো ছিল রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা। তবে রোগের উপসর্গ দেখা দিলে সেগুলো উপশমের জন্যে অদ্ভূত সব চিকিৎসাও তখন প্রচলিত ছিল। যেমন- দাঁতে ব্যথা হলে পিঁপড়া ও তার ডিম গুঁড়া করে নিয়ে আক্রান্ত দাঁতে তা ব্যবহার করা। আরেকটি পদ্ধতি ছিল- গুইসাপ এবং গ্রীষ্মকালে জলাশয়ের কাছে যেসব গুবরেপোকা ঘুরে বেড়ায়, সেগুলোকে নিয়ে একটি লোহার পাত্রে ততক্ষণ সিদ্ধ করা, যতক্ষণ পর্যন্ত না সেগুলোকে গুঁড়া করা যায়। এরপর ডান হাতের তর্জনীতে করে সেই গুঁড়া নিয়ে যন্ত্রণাদায়ক দাঁতটিতে মাখিয়ে রাখা হতো।

মধ্যযুগে পাদ্রীগণ ছিলেন সমাজের সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি এবং তারাই তখন দাঁত তোলাসহ সবধরনের অস্ত্রোপচারের কাজ সম্পন্ন করতেন। পরবর্তীতে গির্জা থেকে তাদের জন্যে এসব কাজ করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে এই গুরুদায়িত্ব ন্যস্ত হয় স্থানীয় নাপিতদের ঘাড়ে, যেহেতু ধারালো যন্ত্রপাতি নিয়েই তাদের দৈনন্দিন কাজ। তবে দাঁতের অবস্থা নিতান্তই খারাপ এবং সংরক্ষণের অযোগ্য না হলে তারা দাঁত তুলতো না।

মায়ান সভ্যতায় দন্তচিকিৎসা

 

দাঁতের সমস্যার প্রধান কারণ খ্যাদ্যাভ্যাস

দাঁতের সমস্যার প্রধান কারণ খ্যাদ্যাভ্যাস


মায়ানরা দাঁতে ফিলিং করা, পাথর পরিস্কার করা এবং দাঁত তোলার কাজে পারদর্শী ছিল। এই প্রতিটি কাজের জন্যে তাদের বিশেষ যন্ত্রপাতি ছিল এবং প্রতিটি চিকিৎসা ও যন্ত্রের তারা আলাদা আলাদা নামও দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, প্রত্নতত্ত্ববিদগণ হন্ডুরাসে মায়ান সভ্যতার পুরাতন নিদর্শনের মধ্যে চোয়ালের হাড়ে ঝিনুক ব্যবহার করে দাঁতের ইমপ্ল্যান্ট করার প্রমাণ পেয়েছেন। অবাক করা ব্যাপার এই যে, দাঁতের ইমপ্ল্যান্ট দৃঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী হতে হলে চোয়ালের হাড়ের সঙ্গে ইমপ্ল্যান্টের যে বিশেষ বন্ধন তৈরি হওয়া আবশ্যক, মায়ানদের তৈরি করা ঝিনুক ইমপ্ল্যান্ট ও হাড়ের মধ্যে এই বন্ধন অনেকাংশেই গড়ে উঠেছিল। দাঁতের সুস্থতার পাশাপাশি এর সৌন্দর্যবৃদ্ধিতেও তাদের চেষ্টার কমতি ছিলনা। অনেকেই দাঁতকে অলঙ্করণের উদ্দেশ্যে দাঁতে ছোট গর্ত করে তাতে মূল্যবান পাথর বসাতো। এছাড়াও মায়ান মহিলারা নিজেদের হাসিকে ভিন্নরূপে তুলে ধরার জন্যে তাদের দাঁতকে লাল বা কালো রংয়ে রাঙাতো। কেউ আবার দাঁতকে ঘষে সূঁচালো আকার দিতেও পছন্দ করতো।

গ্রিক সভ্যতায় দন্তচিকিৎসা

 

দাঁতের রোগ থেকে মৃত্যুও হত অনেকের

দাঁতের রোগ থেকে মৃত্যুও হত অনেকের


গ্রিকরা নিজেদের শক্তিশালী ও নিখুঁত সুন্দর ভাবমূর্তি বজায় রাখতে বেশ সচেষ্ট ছিল। ব্যথা, বেদনা, অসুস্থতা প্রকাশ করা এবং চিকিৎসা নেয়া তাদের কাছে ছিল দুর্বলতার লক্ষণ! ফলে তারা অনেকেই দাঁত বা মুখে কোনো রোগ দেখা দিলে তার চিকিৎসা করানোর বদলে রোগযন্ত্রণা ভোগ করে নিজেকে নিখুঁত হিসেবে জাহির করাকেই শ্রেয়তর মনে করতো।

দাঁতের রোগ থেকে মৃত্যু হতে পারে- ব্যাপারটা অস্বাভাবিক শোনালেও, প্রত্নতত্ত্ববিদরা গ্রিক শাসনামলের একটি মমিকৃত মিশরীয় মৃতদেহে ঠিক এমনই লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী, নাম না জানা, ধনী এই তরুণ তার জীবনের শেষ সময়ে অনেকগুলো দাঁতে গর্ত, পুঁজ ও যন্ত্রণাদায়ক সংক্রমণে ভুগেছিল বলে জানা যায়। সিটি স্ক্যান পরীক্ষায় দেখা যায়, তার ওপরের পাটির দুই দাঁতের মাঝে তৈরি হওয়া গর্তে ডুমুরের রস বা সিডারের তেলে ভেজানো কাপড় দিয়ে দাঁতে খাবার জমা প্রতিরোধ এবং ব্যথা উপশমেরও চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে দুঃখজনকভাবে চিকিৎসার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই দাঁতের সেই সংক্রমণ তার সাইনাসে ছড়িয়ে পড়ে মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং এতেই তার মৃত্যু ঘটে বলে ধারণা করা হয়। 

 

দাঁতে ব্যথা হলে পিঁপড়া ও তার ডিম গুঁড়া করে নিয়ে আক্রান্ত দাঁতে তা ব্যবহার করা হত

দাঁতে ব্যথা হলে পিঁপড়া ও তার ডিম গুঁড়া করে নিয়ে আক্রান্ত দাঁতে তা ব্যবহার করা হত

খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ থেকে ৩০০ সালের মধ্যে গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটস এবং বিজ্ঞানী ও দার্শনিক অ্যারিস্টটল- উভয়েই দাঁতের চিকিৎসা বিষয়ে লিখতে শুরু করেছিলেন। দাঁত ওঠার প্রক্রিয়া, দাঁতের গর্তের চিকিৎসা, মাড়ির রোগ, দাঁত তোলা, ভাঙা চোয়াল বা নড়বড়ে দাঁতকে তার দিয়ে বেঁধে পূর্বের সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনা-এমন অনেক চিকিৎসার কথা উঠে এসেছিল তাদের লেখনীতে। চিকিৎসার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সে সময় হিপোক্রেটসের নির্দেশিত নিয়মই অনুসরণ করা হতো।

তবে যতই অদ্ভুত আর হাস্যকর মনে হোক না কেন এসব চিকিৎসা পদ্ধতি। স্বীকার করতেই হবে এগুলো থেকেই উন্নত হয়ে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে আমাদের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। 

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার