ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৫৫

তাঁরা দুজন বিসিএস জয় করলেন যেভাবে

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০২০  

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর নূর পেয়ারা বেগম ৩৮তম বিসিএসে (প্রশাসন) ১৫তম এবং তাঁর স্বামী সাদত হোসেন ১২৪তম হয়েছেন। 

তিনটি জামা দিয়ে পুরো হাইস্কুল জীবন শেষ করেছেন সাদত হোসেন। বাবার সঙ্গে লাকড়ি বিক্রি করে দুটো পয়সা আয় করেছেন।

অন্যদিকে নূর পেয়ারা বেগম পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন টিউশনি করে। মেসে থেকে নিজে বাজার করে খেয়েছেন। শুরু থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে দুজনের বসবাস। তবে সেটা কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। তাঁদের ছিল অটুট মনোবল। আর সেই শক্তিতে ছাত্রজীবনের প্রতিটি ধাপ পেরিয়েছেন সাফল্যের সঙ্গে।

অবশেষে আরও অর্জন এসেছে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর এই তরুণ দম্পতির জীবনে। সংসার ও সন্তান সামলে দুজনই ৩৮তম বিসিএসে (প্রশাসন) নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

এর মধ্যে নূর পেয়ারা বেগম বিসিএসের (প্রশাসন) মেধাক্রমে হয়েছেন ১৫তম। আর তাঁর স্বামী সাদত হোসেন হয়েছেন ১২৪তম। গত ৩০ জুন ফলাফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।

এই দম্পতির বিয়ে হয় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ছয় মাসের এক সন্তান রয়েছে তাঁদের।

দুজনেরই বাড়িই বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের দুয়াড়ি পাড়া গ্রামে। লেখাপড়ার শুরুটাও গ্রামের স্কুলে। পরে সাদত হোসেন চট্টগ্রামের মহসিন কলেজ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেন। আর নূর পেয়ারা ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে তিনি স্নাতকে চতুর্থ ও স্নাতকোত্তরে দ্বিতীয় হন। 

এরই মধ্যে দুজনেরই হয়েছে কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা। সাদত হোসেন ৩৫তম বিসিএসে (নন-ক্যাডার) বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগের সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। অন্যদিকে নূর পেয়ারা ঢাকায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। কিন্তু সেখানে দুই মাস চাকরি করে গর্ভকালীন ছুটি নিয়ে চট্টগ্রামে ফিরে আসেন। বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা ও পরিবারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে তাঁর আর সেখানে যাওয়া হয়নি।

সাদত হোসেন বলছিলেন তাঁর পরিবারের কথা, ‘আমার বাবা একজন কাঠুরিয়া। পরিবারে লেখাপড়া জানা কেউ ছিল না। প্রতিবেশীর কারও বাড়িতে পড়াশোনা জানা কোনো নারী বউ হয়ে এলে মা অনুরোধ করে তাঁর কাছে পড়াতে পাঠাতেন। বিনিময়ে তরকারি বা কিছু একটা পৌঁছে দিতেন। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাজারে লাকড়ি বিক্রি করেছি। তখন লজ্জায় ডুবে থাকতাম। স্কুলে যাওয়ার পোশাক ছিল না। শিক্ষকেরা স্কুলের পোশাক কিনে দিয়েছিলেন।’

নূর পেয়ারা বেগমরা তিন বোন। তাঁদের পরিবারেও কেউ শিক্ষিত ছিলেন না। মা-ই ছিল তাঁদের সবকিছু। মা আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীদের কাছ থেকে টাকা ধার করে তাঁদের পড়াশোনা করিয়েছেন। তাঁর কথা, ‘অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। মায়ের ধারের টাকা এখনো শোধ করতে পারিনি।’ 

নূর পেয়ারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় হলে থাকতেন। সময়টা ২০১৭ সাল। চট্টগ্রাম শহরের বিসিএসের একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন। সে সময় চকবাজারের একটি মেসে থাকতেন। বিসিএসের কোচিং সেন্টারের লাইব্রেরিতে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত লেখাপড়া করতেন। এরপর বাজার করে মেসে যাওয়া, রান্না করে খেয়ে আবারও বিসিএসের পড়াশোনা।

কীভাবে পেলেন এমন সাফল্য, এ প্রশ্নের জবাবে সাদত বললেন, ‘আমার স্ত্রী বিজ্ঞান বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন। আমি ব্যবসা ও ইংরেজিতে ভালো ছিলাম। দুজন একে অপরকে সাহায্য করেছি। রাত দুইটা-তিনটা পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি।’ আর নূর পেয়ারার কথা, ‘পেটে সন্তান নিয়ে ভাইভা দিয়েছি। সাদত সব দিক থেকে সহায়তা করেছে।’

বিসিএসের প্রস্তুতির বিষয়ে তাঁরা দুজনই মনে করেন, কঠোর পরিশ্রম আর ধৈর্য ছাড়া বিসিএসে সফলতা আশা করা যায় না। টানা কয়েক বছর কষ্ট করতে হয়।

সুযোগ এলে বাঁশখালীর জন্য কিছু করতে চান এই দম্পতি, ‘আমরা দুজন এলাকার জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করব। নাড়ির টান ও অতীত যে ভুলে যায়, সে ভালো মানুষ হতে পারে না।’

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার