ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৬৯

চট্টগ্রাম বন্দরে ঘুষ দিলেই খালাস হয় পণ্য

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৯  

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামে বসেছে ঘুষের হাট। ঘুষ দিলেই দ্রুত খালাস হয় পণ্য। অন্যথায় ধাপে ধাপে তৈরি হয় হয়রানির ফাঁদ। করা হয় সময়ক্ষেপণ।

পণ্য ওঠানো-নামানো, কায়িক পরীক্ষা, স্ক্যানিং ও খালাস প্রক্রিয়ার ১২টি ধাপে ঘুষ দিতে হচ্ছে বন্দর ব্যবহারকারীদের। কনটেইনারের অবস্থান শনাক্তকরণে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু থাকলেও ঘুষ দিতে হচ্ছে সেখানে। 

ঘুষ দিতে দিতে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনকে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে পণ্য খালাস করতে গিয়ে কোথায় কীভাবে ঘুষের ফাঁদ পাতা হয়, তা দুদকের গণশুনানিতেও প্রকাশ্যে বলেছেন ভুক্তভোগীরা। 

পরে ঘুষ ও হয়রানির এ হাট বন্ধ করতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার। নির্দেশনা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে পণ্য আসার সঙ্গে সঙ্গে তা জাহাজ থেকে নামাতে দরকার হয় যন্ত্রপাতির। পণ্য আগে নামাতে এসব যন্ত্রপাতির চালককে খুশি করার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে খোলা হয় ঘুষের খাতা। 

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পণ্যভর্তি কনটেইনার পছন্দমতো স্থানে রাখতে ঘুষ দিতে হয় আরেক দফা। ব্যবসায়ীদের হয়রানি কমাতে বন্দরে চালু রাখা হয়েছে ওয়ানস্টপ সার্ভিস। কিন্তু সেই সার্ভিস সেন্টারে নথিপত্র ভেরিফাই করতে গেলে দিতে হয় আরেক দফা ঘুষ। 

চাহিদামতো ঘুষ না পেলে রোটেশন লাইন নম্বর কিংবা আমদানিকারকের নাম ঠিক থাকলেও অহেতুক দিয়ে দেয়া হয় বিন নাম্বার। কনটেইনার খুলে পণ্য খালাসের সময়ও ঘুষ দিতে হয় বন্দর ব্যবহারকারীদের। অন্যথায় ডকুমেন্টে ত্রুটি আছে বলে করা হয় হয়রানি। পরীক্ষা শেষে পণ্যের চূড়ান্ত ছাড়পত্র তৈরির সময় আরেক দফা দিতে হয় ঘুষ। ছাড়পত্র শেষে পণ্য ডেলিভারির সময় প্রথমে ইয়ার্ডে, পরে গেটে ঘুষ দিতে হয় আরও দু’দফা। এভাবে একটি আমদানি কনটেইনারের মালিককে ন্যূনতম ১২টি খাতে ঘুষ দিতে হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। 

কোনো নথিতে ভুল পেলে ঘুষের এ খাত বেড়ে যায় আরো। বেড়ে যায় ঘুষের রেটও। ১০ হাজার টাকা দিয়ে যে পণ্য খালাস হওয়ার কথা, সেই পণ্য খালাস হতে তখন সাত থেকে ১০ গুণ বাড়তি ঘুষ দিতে হয়। ঘুষের এ টাকা মিলেমিশেই খায় জেটিতে থাকা দায়িত্বশীলরা।

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে ঘুষ ও হয়রানি নিয়ে ব্যবহারকারীরা এভাবে সরব হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। 

দুদক কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামার বিভিন্ন ধাপে ঘুষ ও হয়রানির যে অভিযোগ আমরা পেয়েছি, তা নথিভুক্ত করা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সময় দেয়া হয়েছে। অন্যথায় ফাঁদ পেতে অভিযান চালাবে দুর্নীতি দমন কমিশন। ঘুষ গ্রহণকারী ব্যক্তির কোনো রক্ষা হবে না। আবার যারা তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে; পার পাবে না তারাও।

বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ বলেন, ঘুষ ও হয়রানির অভিযোগ তদন্তে পরিচালক (প্রশাসন)-কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যখন যেখানে ঘুষের অফার পাবেন, সঙ্গে সঙ্গে তা অবহিত করবেন। আমরা ঘুষ ও হয়রানিমুক্ত চট্টগ্রাম বন্দর চাই। যাদের কারণে বন্দরের বদনাম হবে, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তবে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ দিতে হবে। ঢালাও অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

দুদকের গণশুনানিতেও গত মঙ্গলবার দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর নিয়ে ঘুষ, অনিয়ম ও হয়রানির ৫২টি অভিযোগ ওঠে। দুদক কমিশনার ও বন্দর চেয়ারম্যানের সামনেই বন্দর ব্যবহারকারী মো. মাহবুবুল আলম বলেন, এক্সামিন করা পণ্য ডেলিভারি নিতে গেলে এএসআই, সিকিউরিটি লোডিং চেকার কর্তৃক ১০০ টাকা চাঁদার বিপরীতে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এএসআই শহীদুল কবির ৯০ হাজার টাকার কমে কাজ হবে না মর্মে সাফ জানিয়ে দেন। 

বিজন কুমার খাস্তগীর নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারে পেপার ভেরিফাই করার সময় রোটেশন লাইন নম্বর ও আমদানিকারকের নাম ঠিক থাকলেও অহেতুক বিন নম্বর দিয়ে ঝামেলা তৈরি করে ২-৩ হাজার টাকা ঘুষ নেয়া হয়। 

মো. ফারুক নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, বন্দরের ৪ নম্বর গেটের ডিটিএম ফারুক ডকুমেন্টে ত্রুটি আছে বলে ঘুষ দাবি করেন। টাকা ছাড়া কোনো কাজ করতে চান না তিনি। 

নাছির আহমদের অভিযোগ, বিভিন্ন ইয়ার্ডে ক্রেন অপারেটররা পণ্য নামানোর সময় ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দিলে নানাভাবে হয়রানি করেন।

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে পণ্য খালাস করতে গিয়ে এমন ঘুষ লেনদেন হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে। পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেলে সে খেসারত দিতে হয় সবাইকে। 

এ প্রসঙ্গে শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর হচ্ছে পুরো অর্থনীতির প্রাণ। এখানে দ্রুত পণ্য খালাস করতে গিয়ে যদি ঘুষ দিতে হয়, তবে তা পুরো দেশের জন্য দুঃখজনক। বন্দরের নীতিনির্ধারক যারা আছেন, ব্যবহারকারীদের এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখা উচিত তাদের। যেসব ধাপে এখন ঘুষ দিতে হয় সেগুলো বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশনকে হস্তক্ষেপ করা উচিত। 

একই প্রসঙ্গে বন্দরে পণ্য খালাস কার্যক্রমে নিয়োজিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস করতে গিয়ে ঘুষ দিতে হয় বিভিন্ন ধাপে। এটি এখন ওপেন সিক্রেট। দুদকও বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে দরকার এখন শুদ্ধি অভিযান।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার