ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৭৫

গলা ফোলা রোগ

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২১  

বিভিন্ন কারণে গলা ফুলতে পারে বা গলার ভেতর চাকা বা গোটা তৈরি হতে পারে। এটা বলতে আমরা সাধারণত বুঝি ধীরে ধীরে বা হঠাৎ করে জন্মগতভাবে গলার ভেতরে এক বা একাধিক ফোলা থাকে। এর সঙ্গে ব্যথা থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে। এর সঙ্গে ব্যথা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে না থাকার জন্য আমরা এ সমস্যাকে গুরুত্ব দেই না। এটা আসলে ঠিক নয়। ব্যথা না থাকলেই যে এটা গুরুত্বহীন এ ভ্রান্ত ধারণা এবং অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যেগুলো ফোলা ব্যথা ছাড়া থাকে সেগুলোর মধ্যে সমস্যা নিহিত আছে।

কী কারণে গলা ফুলতে পারে-
১. জন্মগত : লিম্ফ্যানজিওমা, ডারময়েড, হাইরোগ্লোসাল সিস্ট।
২. গঠনত বৃদ্ধি : ব্র্যাকিংয়াল সিস্ট, ল্যারিগোসিস।
৩. থাইরয়েড গ্লান্ড বড় হয়ে যাওয়া যেটাকে আমরা ভুল করে প্রায় সর্বক্ষেত্রে ঘ্যাগ বলে থাকি।
৪. ইনফেকশন থেকে গলার গ্রন্থি ফুলে যাওয়া।
৫. গলায় বিভিন্ন ধরনের টিউমার।
৬. ক্যান্সার থেকে গলার গ্রন্থি ফুলে যাওয়া।
(১) জন্মগত ফোলা : জন্মের সময়ই বর্তমান থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটা জন্মের পরপরই প্রকাশিত হয়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটা জন্মের অনেক পর প্রকাশ পেতে পারে। এগুলোর একমাত্র চিকিৎসা অপারেশনের মাধ্যমে ফেলে দেয়া। কখন আমরা এ অপারেশন করব তা সমস্যার ওপর নির্ভর করে থাকে।
(২) বৃদ্ধি বা গঠনতন্ত্র ফোলা : জন্মের সময়ই বর্তমান থাকে। রোগী বড় হওয়ার সময় ধীর ধীরে এটা বড় আকার ধারণ করে এবং প্রকাশ পায়। এগুলোরও চিকিৎসা অপারেশন। কখন অপারেশন করতে হবে সেটা কেবল বিশেষজ্ঞই বলতে পারবেন।
(৩) থাইরওয়েড গ্রন্থি : আমাদের গলার সামনের দিকে একেবারে মধ্য স্থানে এবং তার দুই পাশে থাইরওয়েড গ্রন্থি থাকে। বেশি বড় হয়ে গেলে এটা গলার পাশে ডান বা বামে বা উভয় পাশে বিস্তৃত হতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থির ফোলাকে আমরা সাধারণ ভাষাতে ঘ্যাগ বলে থাকি এবং এ সমস্যাগুলোকে আমরা কম গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এ জিনিসটা একেবারেই ঠিক নয়। বিভিন্ন কারণে থাইরওয়েড গ্রন্থি ফুলে থাকে। এর মধ্যে হরমোনের আধিক্য বা স্বল্পতা, গ্রন্থিতে ইনফেকশন এবং গ্রন্থির টিউমার বা ক্যান্সার ইত্যাদি অনেক কারণ থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা একটা কারণে ফুলে যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। কাজেই ঘ্যাগ হয়েছে মনে করে কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকা ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে এর পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে সঠিক চিকিৎসা নেয়া উচিত। থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যান্সার নিতান্তই কম নয় এবং এটা সব বয়সেই হতে পারে। অনেক সময় কিছু পরিবারের অনেকের মধ্যে একসঙ্গে হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটাতে কোনো ব্যথা থাকে না। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব।
(৪) ইনফেকশনের জন্য গলার গ্রন্থি ফুলে যাওয়া : গলার উভয় পাশে অনেক গ্রন্থি আছে যাকে আমরা লিম্ফনোড বলে থাকি। ছোটদের ক্ষেত্রে গলায় এবং নাকের ভেতর ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশনে গলার গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। নাকের ইনফেকশন, টনসিল ও এডেনয়েডের ইনফেকশনের মধ্যে অন্যতম। এতে গলার ভেতরে এক বা দুই দিকে, এক বা একাধিক গ্রন্থির প্রদাহের কারণ হতে পারে। শরীরে জ্বর থাকে এবং গ্রন্থিগুলো হঠাৎ ফুলে যায় এবং প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। ইনফেকশন বেশি হলে এর ভেতর পুঁজ জমে যায়, যাকে আমরা অ্যাবসেস বলে থাকি। ছোট ও বড় উভয় ক্ষেত্রেই ভাইরাসঘটিত ইনফেকশনে এ গ্রন্থিগুলো ফুলে যেতে পারে। এটা সাধারণত তেমন সমস্যার সৃষ্টি করে না। অনেক সময় গলার টিবি গ্রন্থি ফুলে যায়। এতে এক বা একাধিক গ্রন্থি ফুলতে পারে এবং এর অঙ্গ ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। শরীরে খুসখুসে জ্বর থাকে তার সঙ্গে টিবি বা যক্ষ্মাসহ আরও আনুষঙ্গিক সমস্যা থাকতে পারে, যেমনÑ শরীর দুর্বল, কাজে স্পৃহা না থাকা, শরীরের ওজন কমে যাওয়া, খুসখুসে কাশি হওয়া ইত্যাদি। চিকিৎসা করাতে দেরি করলে এ গ্রন্থিগুলোর মধ্যে পুঁজ তৈরি হয় এবং অনেক সময় এগুলো ফেটে গিয়ে পুঁজ নিঃসরণ করতে থাকে।
এটা জটিল অবস্থা অনেক সময় ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে এগুলোয় অপারেশনেরও দরকার পড়ে এবং কিছু ক্ষেত্রে অপারেশন এবং দীর্ঘমেয়াদি ওষুধেও এগুলোর নিরাময় করা সম্ভব হয় না। অনেক ক্ষেত্রে ওষুধ ৯ থেকে ১৮ মাস বা আরও বেশি সময় খাওয়া লাগতে পারে।
(৫) গলায় বিভিন্ন ধরনের টিউমার : এগুলো সাধারণত হয় না তবে থাইরয়েড গ্রন্থি টিউমার, স্নায়ুর টিউমার, বিভিন্ন রকম লাল গ্রন্থির টিউমারের মধ্যে অন্যতম।
(৬) ক্যান্সার থেকে গলার গ্রন্থি ফুলে যাওয়া : এটা অনেক ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। মুখের ক্যান্সার, ঠোঁটের ক্যান্সার, জিহ্বা এবং মুখ গহ্বরের ক্যান্সার, টনসিল ক্যান্সার, নাক ও সাইনাসের ক্যান্সার, বিভিন্ন ধরনের ফ্যারিংসের ক্যান্সার, স্বরযন্ত্রের এবং খাদ্যনালির ক্যান্সার, থাইরয়েডের ক্যান্সার ইত্যাদি সব ধরনের মাথা ও গলার ক্যান্সার গলার গ্রন্থিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এক বা একাধিক গ্রন্থি ধীরে ধীরে ফুলতে থাকে এবং বড় হতে থাকে। দেরি করলে এটা ফেটে যায় এবং ঘা তৈরি করে। প্রাথমিক অবস্থায় এগুলোয় কোনো ব্যথা থাকে না এবং এ জন্য রোগী দেরি করে হাসপাতালে আসে বা ডাক্তারের শরণাপন্ন হয় যা একেবারেই ঠিক নয়।
অনেক সময় এ সমস্যা গ্রন্থি প্রাথমিক ক্যান্সার ও হজকিনস ও নন-হজকিনস লিম্ফোমা হতে পারে যা এসব গ্রন্থি ফোলা হিসেবে প্রকাশ পায়। এগুলোয়ও ব্যথা থাকে না এবং এ কারণে রোগী রোগের অগ্রসর পর্যায়ে দেরি করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। গলায় ফোলার ব্যাপারে কয়েকটি তথ্য জেনে নেয়া উচত-
ক) গলার ভেতর যখন নতুন করে কোনো ফোলা দেখা দিলে তখন অবশ্যই একে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
খ) লক্ষ রাখতে হবে যে এটা নিয়মিত বড় হচ্ছে কিনা।
গ) ওষুধ খেয়ে যদি এটা কমে যায় বা চলে যায় তবে দেখতে হবে যে এটা সম্পূর্ণভাবে চলে গেল কিনা। সম্পূর্ণভাবে চলে না যাওয়া পর্যন্ত কখনই এর ওপর থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়া যাবে না।
ঘ) যে ফোলা প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো ধরনের ব্যথা ছাড়া থাকে এবং ধীরে ধীরে প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকে সেগুলোর দিকে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
ঙ) মনে রাখতে হবে এগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যথা ছাড়া থাকলেও পরের দিকে ব্যথাযুক্ত হতেও পারে।
চ) প্রথম থেকে যে ফোলাতে বেশি ব্যথা থাকে সেগুলো সাধারণত ইনফেকশন থেকে হয়ে থাকে। পর্যাপ্ত এন্টিবায়োটিক খেলে এগুলো সাধারণত চলে যায় তবে মনে রাখতে হবে সঠিক এন্টিবায়োটিক না খেলে এগুলো খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ছ) গলার যেসব ফোলাতে ব্যথা থাকে না সেগুলোর সঙ্গে যদি চারপাশের এলাকার অন্য কোনো অঙ্গের অন্য কোনো সমস্যা জড়িতে থাকে যেমন- গলার স্বর বসে যাওয়া বা খাদ্য খেতে অসুবিধা বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। তবে এগুলোর দিকে অতিমাত্রায় নজর দেয়া উচিত।
জ) প্রাথমিক পর্যায়ে গলার যে কোনো ফোলাতে আপনি সাধারণত চিকিৎসা নিতে পারেন যেমন- এন্টিবোয়োটিক ইত্যাদি কিন্তু দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে যদি এগুলো সম্পূর্ণ না চলে যায় তবে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এর সঠিক কারণ নির্ধারণ করা উচিত।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার