ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৪২

কোম্পানীগঞ্জ পাথরকোয়ারি : ৩ বছরে ২৯ শ্রমিকের মৃত্যু

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০২০  

২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। ভোলাগঞ্জের পাথর কোয়ারিতে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারান মাধবপুরের মতিউর রহমান, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের রুহুল, আশিক মিয়া, জামালগঞ্জের মঈন উদ্দিন, আতাবুরসহ মোট ৫ শ্রমিক। একই কোয়ারিতে কাজ করতে গিয়ে মাটি ধ্বসে পড়ে তাদের মৃত্যু হয়। অভাবের তাড়নায় কাজ করতে গেলে তাদেরকে কোয়ারির মালিকরা ঠেলে দেন ঝুঁকির মুখে। মাটি খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করে গভীরে যেতে বাধ্য করা হয় তাদের। তাতেই মাটি ধ্বসে পড়ে মৃত্যু হয় এক সাথে ৫ শ্রমিকের। এ ঘটনার রেশ কাততে না কাটতেই ২৮ ফেব্রুয়ারি শাহ আরেফিন টিলায় আরো ৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

এভাবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন পাথর কোয়ারিতে ২৯ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আর আহত হয়েছেন ৯ জন শ্রমিক। কিন্তু দিনে দিনে শ্রমিকের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও থেমে নেই খনন, পাথর উত্তোলন। এমনকি কোন ঘটনায় হয়নি কারো শাস্তি। বরং এটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে আখ্যা দিয়েই চলছে ধ্বংসযজ্ঞ। শুধু তাই নয়, প্রাণহানির পর পর লাশ গুমের চেষ্টা, শ্রমিকদের দোষ দেখিয়ে ঘটনার ধামাচাপা দেয়ার বিষয়টিও একাধিকবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

পরিবেশ কর্মীদের অভিযোগ ‘নিহত শ্রমিকদের নিরীহ স্বজনদের চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে আপোষ মীমাংসার মধ্যদিয়ে প্রশাসনের সাথে আঁতাত করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রাখা হয়। আর আইনজীবীদের মতে ‘প্রশাসন নিজে বাদি হলে এবং মামলায় সাক্ষী হিসেবে গণমাধ্যম কর্মী, পরিবেশ কর্মীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের রাখা হলে বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত হবার সুযোগ নেই।’ তবে সচেতন নাগরিকরা মনে করেন ‘পুলিশ প্রশাসনের স্বচ্ছতার অভাবেই এমন ঘটনা বার বার ঘটে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (সিলেট) এর দেয়া তথ্যমতে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরেফিন টিলা ও ভোলাগঞ্জের কালাইরাগসহ বিভিন্ন কোয়ারিতে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে শাহ আরেফিন টিলায়।

বেলার দেয়া তথ্যমতে ২০১৮ সালে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। আর আহত হয়েছেন ২ জন শ্রমিক। নিহত ১৯ জনের মধ্যে শাহ আরেফিনে পাথর চাপায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের আর ভোলাগঞ্জে ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

এদিকে ২০১৯ সালে কেবল শাহ আরেফিনে ৬ জনের মৃত্যু হলেও উপজেলার অন্য কোন কোয়ারিতে মৃত্যু বা আহতের ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও ২০২০ সালে শাহ আরেফিনে গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলনের সময় ২ জন ও ভোলাগঞ্জে ২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ দুই জায়গায় ২ জন করে এ সালে মোট ৪ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

তবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ২৫ জন শ্রমিক মারা গেলেও কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে মাত্র ১৮টি। এর মধ্যে ২০১৮ সালে মোট ১১টি ও ২০১৯ সালে ৭টি মামলা হয়েছে।

শ্রমিক মৃত্যুর সাথে মামলার অসামঞ্জস্যতার কারণ জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঠিক বলতে পারব না। কারণ আমি তখন ছিলাম না। তবে আমার থানায় ২০১৮ সালে ১১টি ও ২০১৯ সালে ৭টি মামলা হয়েছে।’

এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জে নতুন কিছু নয়। মানুষ মরলেও মানুষ হিসেবে আমাদের বিবেক নড়ে না। বরং যাদের কারণে এসব ঘটনা ঘটে তাদের শাস্তির আওতায় না এনে এটিকে শ্রমিকের ভুল হিসেবে উল্লেখ করে দুর্ঘটনা হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়। এমনকি লাশ গুম করার ঘটনাও আমরা দেখেছি। প্রকৃতপক্ষে যারা কোয়ারি চালায় তারা শ্রমিকদেরকে বাধ্য করে গভীরে যেতে। সুতরাং কোনভাবেই এটিকে দুর্ঘটনা না বলে হত্যাকাণ্ড হিসেবেই আইনের আওতায় আনা উচিৎ। কিন্তু প্রশাসন তা না করে আঁতাত করে ফেলে। এতে অপরাধীরা পার পেয়ে যায় এবং তারা আবারও হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটায়।

সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম বলেন, পাথরচাপায় মৃত্যু মূলত একধরণের হত্যাকাণ্ড। কিন্তু দেখা যায় ঘটনার পর নিহতের স্বজনরা মামলা করলেও পরে দূরত্ব এবং খরচের অভাবে মামলা পরিচালনা করতে পারেন না। আবার কখনো সাক্ষী ও স্বজনরা অপরাধীদের চাপে আপোষ করতে বাধ্য হন। তাই ন্যায় বিচার ব্যহত হয়। কিন্তু এমন ঘটনায় আইনের ক্ষেত্রে আপোষের কোন সুযোগ নেই। তাই মামলা যদি পুলিশ বাদী হয়ে করে এবং মামলায় সাক্ষী হিসেবে সাংবাদিক, পরিবেশ কর্মী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের করা হয় তাহলে মামলাটি আপোষের কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ কোন কারণে এক সাক্ষী অপরাধীর সাথে আঁতাত করলেও অন্য সাক্ষীর মাধ্যমে বিচার কাজ পরিচালিত হবে। এতে অপরাধী শাস্তি পাবে এবং স্বজনরাও ন্যায় বিচার পাবে।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফ মাহমুদ অপু’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সকলকে দায়িত্বশীল হুয়া উচিৎ। আমি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করব। যেহেতু হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে সে ক্ষেত্রে এটা বন্ধ করা উচিৎ।’

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার