ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৩৩

‘কঙ্কাল হ্রদ’, রহস্যের কিনারা নেই

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০২১  

ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের হিমালয় অঞ্চলের ত্রিশূল পর্বতমালা। পর্বতমালার শৃঙ্গে রয়েছে একটি হ্রদ। হ্রদটিতে রয়েছে শত শত কঙ্কাল। এটির আসল নাম ‘রূপকুণ্ড লেক’। কিন্তু রহস্যজনক মানবকঙ্কাল পাওয়ায় সেটি ‘কঙ্কাল হ্রদ’ নামেই বেশি পরিচিত।

রূপকুণ্ড হ্রদে হাড়গোড়যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি রোববার এই হ্রদ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রূপকুণ্ড হ্রদটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ১৬ হাজার ফুট ওপরে। হ্রদটির চারপাশে ও বরফের নিচে মানুষের কঙ্কালে ভরা। ১৯৪২ সালে ‘কঙ্কাল হ্রদটি’ আবিষ্কার করেন একজন টহলরত ব্রিটিশ বনরক্ষী। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, হ্রদটি আবিষ্কারের ৫০ বছরের বেশি সময় পার হলেও কঙ্কালের বিষয়টি এখনো অজানা। নৃবিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিষয়টি নিয়ে একাধিক গবেষণাও করেছেন। ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে বছরের পর বছর বিজ্ঞানী ও দর্শনার্থীরা হ্রদটি ভ্রমণ করেন।

অষ্টম থেকে দশম শতাব্দীর মধ্যকার সময়ে স্থানীয় মন্দিরে শিলালিপি পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, যেসব দেহাবশেষ পাওয়া গেছে, তাদের কিছু তীর্থযাত্রীদের হতে পারে, যাঁরা ভ্রমণকালে একসঙ্গে মারা গেছেন।

ঋতু ও আবহাওয়ার ভিত্তিতে হ্রদটির আকার ছোট–বড় হয়। বছরের প্রায় পুরোটা সময় দেহাবশেষগুলো বরফে জমাট থাকে। তবে যখন বরফ গলতে থাকে, তখন ভেসে ওঠে কঙ্কালগুলো। এখন পর্যন্ত হ্রদটিতে ৬০০ থেকে ৮০০টি কঙ্কাল পাওয়া গেছে। পর্যটক আকর্ষণের জন্য স্থানীয় সরকার হ্রদটিকে ‘রহস্যজনক হ্রদ’ আখ্যা দিয়েছে।

দেহাবশেষগুলো নিয়ে গবেষণা করার সময় নানা প্রশ্ন এসেছে নৃবিজ্ঞানীদের মনে। সেই প্রশ্নগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো: লোকগুলো কারা? কখন তাঁরা মারা গেছেন? কীভাবে মারা গেছেন? তাঁরা কোথা থেকে এসেছেন?

পুরোনো একটি তত্ত্বমতে, দেহাবশেষগুলো একজন ভারতীয় রাজা, তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের সহযোগীদের। প্রায় ৮৭০ বছর আগে অতিরিক্ত বরফ পড়ার কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়। আরেকটি তত্ত্বে বলা হয়েছে, দেহাবশেষগুলো ভারতীয় সেনাদের, যাঁরা ১৮৪১ সালে তিব্বত আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন। পরে পিছু হটে আসার সময় তাঁদের হত্যা করা হয়।

রূপকুণ্ড হ্রদের দৃশ্যআরেকটি ধারণা আছে, এটি একটি সমাধিস্থল হতে পারে। মহামারিতে মারা যাওয়ার পর তাঁদের সেখানে সমাহিত করা হয়েছে। তবে স্থানীয় গ্রামগুলোতে একটি লোকসংগীত মানুষের মুখে মুখে বাজে। সেই লোকসংগীতে নন্দ দেবী নামের এক দেবীর কথা বর্ণনা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ওই দেবী একটি শক্তিশালী ঝড় সৃষ্টি করেন। সেই ঝড়ের কারণেই হ্রদে পড়ে লোকজন মারা যান। ওই দেবীর নামানুসারে ভারতে একটি পর্বতমালারও নামকরণ করা হয়েছে, যেটি দেশটির দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতমালা।

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব কঙ্কাল পাওয়া গেছে, তার অধিকাংশের উচ্চতা সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশি। অধিকাংশ মধ্যবয়সী, বয়স ৩৫ থেকে ৪০ এর মধ্যে। সেখানে কোনো শিশু বা কিশোর নেই। আছে কিছু বয়স্ক নারী। তবে তাঁরা সবাই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। গবেষণাটিতে আরও বলা হয়েছে, কঙ্কালগুলো একটি সম্প্রদায়ের মানুষের। তাঁরা নবম শতাব্দীতে একটি বিপর্যয়কর দুর্ঘটনায় একসঙ্গে মারা গেছেন।

যখন বরফ গলতে থাকে, তখন ভেসে ওঠে কঙ্কালগুলো। এখন পর্যন্ত হ্রদটিতে ৬০০ থেকে ৮০০টি কঙ্কাল পাওয়া গেছে। পর্যটক আকর্ষণের জন্য স্থানীয় সরকার হ্রদটিকে ‘রহস্যজনক হ্রদ’ আখ্যা দিয়েছে।

 তবে ওই গবেষণার সঙ্গে মতপার্থক্য রয়েছে সবশেষ পাঁচ বছর ধরে করা নতুন একটি গবেষণায়। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানির ১৬টি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে গবেষণাটি করে। ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, আগের গবেষণায় সব ধারণা সত্য নয়। বিজ্ঞানীরা জিনগত বিশ্লেষণ করেছেন এবং হ্রদে পাওয়া ১৫ নারীসহ ৩৮টি দেহাবশেষের কার্বন–তারিখ পরীক্ষা করেছেন। তাতে দেখা গেছে, দেহাবশেষগুলো প্রায় ১ হাজার ২০০ বছর আগের। যাঁদের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে, তাঁদের জিনগত বৈচিত্র্য রয়েছে এবং ১ হাজার বছর আগে আলাদা ঘটনায় তাঁদের মৃত্যু হয়।

রূপকুণ্ড হ্রদের একটি অংশের দৃশ্যগবেষণার প্রধান লেখক ও হার্ভাড ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ছাত্র এডাইন হার্নি বলেছেন, ‘রূপকুণ্ড লেকে আসলে কী ঘটেছিল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এই মৃত্যুগুলো যে একক কোনো ঘটনার মাধ্যমে ঘটেছে, তা আমরা মনে করি না।’

জিনগত গবেষণায় উঠে এসেছে যে দেহাবশেষগুলোয় নানা ভিন্নতা রয়েছে। যেমন বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাস করা লোকের সঙ্গে কিছু দেহাবশেষের জিনগত মিল পাওয়া গেছে। অন্যদিকে কিছু দেহাবশেষের জিনগত মিল পাওয়া গেছে ইউরোপের, বিশেষ করে গ্রিক আইল্যান্ড ক্রিটের বর্তমান বাসিন্দাদের সঙ্গে।

হার্নি বলেছেন, কিছু দেহাবশেষের সঙ্গে উপমহাদেশের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের পূর্বপুরুষের এবং অন্যদের উপমহাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের পূর্বপুরুষের সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে।
 তবে স্থানটিতে এখন পর্যন্ত কোনো অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বাণিজ্য পণ্য পাওয়া যায়নি। বাণিজ্য রুট হিসেবে হ্রদটি ব্যবহৃতও হতো না। জিনগত গবেষণায় দেহাবশেষে প্রাচীন ব্যাক্টেরিয়াল জীবাণুর কোনো অস্তিত্বও পাওয়া যায়নি। ফলে রোগে ভুগে তাঁরা মারা গেছেন, সেটাও বলা যাচ্ছে না।

এখন পার্বত্য এলাকায় তীর্থযাত্রীদের ভ্রমণ করতে দেখা যায়। ফলে এই দেহাবশেষ প্রাচীন তীর্থযাত্রীদের কি না, তা নিয়েও কথা উঠছে। গবেষণাগুলোতে বলা হয়েছে, স্থানটিতে তীর্থযাত্রার বিশ্বাসযোগ্য বিবরণ ১৯ শতাব্দীর শেষের দিকের আগে প্রকাশ পায়নি। পরে অষ্টম থেকে দশম শতাব্দীর মধ্যকার সময়ে স্থানীয় মন্দিরে শিলালিপি পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, যেসব দেহাবশেষ পাওয়া গেছে, তাদের কিছু তীর্থযাত্রীদের হতে পারে, যাঁরা ভ্রমণকালে একসঙ্গে মারা গেছেন।

 তবে সুদূর ইউরোপ থেকে দুর্গম এই তীর্থস্থান মানুষের ভ্রমণ করার বিষয়টি অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে। ফলে নিশ্চিত করে কোনো কিছুই বলা যাচ্ছে না।  হার্নি বলেছেন, ‘আমরা এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি।’ 

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার