ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৩০৬১

ইসলামে শহীদের মর্যাদা

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮  

‘শহীদ’ আরবি শব্দ। শহীদ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ‘শাহাদত’ শব্দ থেকে। ‘শাহাদত’ শব্দের অর্থ হচ্ছে- সনদ, সাক্ষ্য, প্রত্যয়নপত্র, সার্টিফিকেট ইত্যাদি।

‘শহীদ’ শব্দটির ভাবার্থ হলো- ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে জীবন কোরবানীর মাধ্যমে ঈমানের সত্যতার সাক্ষ্য, সনদ, সার্টিফিকেট বা প্রত্যয়ন প্রদান।’ আরবি ডিকশনারীতে ‘মু’জাম আল-অসীত’-এ ‘শহীদ’ শব্দের অর্থ দেয়া আছে: তায়ার্’রাদা আয়্যুক্তালা ফি-ছাবিলিল্লাহ্ অর্থ: ‘যিনি আল্লাহর পথে নিহত হওয়ার জন্য নিজকে পেশ করলেন।’

মানব জাতিকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহর ইবাদত করা, সেই ‘ইবাদত’ প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই যে মৃত্যুবরণ করলো, ইসলামী পরিভাষায় তাকে ‘শহীদ’ নামে আখ্যায়িত করা হয়।


 
‘শহীদ’ সম্পর্কে শাফেয়ী মাজহাবে বলা আছে যে- ‘দুনিয়া ও অখিরাতের শহীদ হলেন: যিনি গনীমতের মাল গোপনে আত্মসাৎ অথবা মানুষের বাহ্বা কুড়ানোর উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই আল্লাহর কালিমা বুলন্দ করার উদ্দেশ্যে কাফিরদের সঙ্গে যুদ্ধে নিহত হয়েছেন।’

‘শহীদ’ সম্পর্কে হানাফী মাজহাবে বলা হয়েছে যে- ‘শহীদ ওই মুসলমান যে অত্যাচারিত বা নির্যাতিত অবস্থায় নিহত হয়েছে। তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হন অথবা কোনো বিদ্রোহী কিংবা কোনো শত্রু তাকে হত্যা করুক অথবা কোনো চোর বা ডাকাত তাকে নিহত করুক।’

‘শহীদ’ সম্পর্কে মালিকি মাজহাবে বলা হয়েছে যে - ‘শহীদ ওই ব্যক্তি, যাকে কোনো কাফের যোদ্ধা হত্যা করেছে অথবা মুসলমান ও কাফেরদের মধ্যে লড়াইয়ে মারা গেছে।’

‘শহীদ’ সম্পর্কে হাম্বলী মাজহাবে বলা হয়েছে যে- ‘শহীদ সে, যে কাফেরদের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করার সময় নিহত হয়েছেন।’
ইসলামে শহীদদের বিশেষ মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক নিজে পবিত্র কোরআন মাজীদে বলেছেন- ‘যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়েছে তাদেরকে তোমরা মৃত মনে কর না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের রবের নিকট হতে তারা রিজিক প্রাপ্ত।’ (সূরা: আল-ইমরান, আয়াত :১৬৯)

এছাড়াও জাবির ইবনু আতীক (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য দ্বীনের রাস্তায় যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছে এরূপ ব্যক্তি ছাড়াও আরো সাত শ্রেনীর মানুষ শহীদের মর্যাদা পাবে । তারা হলেন-


 
(১) মহামারীতে মৃত ব্যক্তি, (২) পানিতে ডুবে মারা গেছে এমন ব্যক্তি, (৩) যাতুল জানব বা শ্বাসকষ্ট রোগে মারা গেছে এমন ব্যক্তি, (৪) পেটের রোগে মারা যাওয়া ব্যক্তি, (৫) যে ব্যক্তি আগুনে পুড়ে মারা গেছে, (৬) কোনো কিছুতে চাপা পরে মারা যাওয়া ব্যক্তি, এবং (৭) প্রসব কষ্টে মৃত নারী।’

শহীদ হওয়ার জন্য যে বিষয়গুলো থাকা দরকার এগুলো ছাড়াও কিছু মানুষ শহীদের সমমর্যাদা পাবে। আর তারা হলেন-

(১) যারা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, রমজান মাসের সবগুলো সাওম সহীহ নিয়তের সঙ্গে পালন করে ও রমজান মাসের তারাবীহ সালাত নিয়মিত আদায় করে এবং জাকাত দেয়।

(২) রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘সৎ ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীগণ হাশরের ময়দানে নবীগণ, সিদ্দীকগন ও শহীদ্গনের সঙ্গে থাকবে।’

(৩) যে ব্যক্তি রাসূল (সা.) এর সুন্নাতকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে থাকবে, সে শহীদের মর্যাদা পাবে।

(৪) আসমা বিনতে ইয়াযিদ ইবনে আস সাকান (রা.) নবী করিম (সা.) এর কাছে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা পর্দানশীল নারীরা ঘরে বসে থাকি। পক্ষান্তরে পুরুষরা জুমার নামাজ, জানাযায় অংশগ্রহণ, জিহাদে যাওয়া, ইত্যাদির মাধ্যমে আমাদের ওপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। যখন তারা জিহাদে যায়, আমরা তাদের সম্পদ হেফাযত, সন্তানদের লালন পালন করি; তাহলে আমরা কি তাদের সওয়াবে ভাগ পাব কী?


 
রাসূল (সা) তার সাহাবাদের বললেন, ‘যাও হে আসমা, তুমি তোমার পিছনে রেখে আসা মহিলাদের বলে দাও, স্বামীর জন্য উত্তম স্ত্রী হওয়া, তার সন্তুষ্টি খুজে নেয়া, তার সম্মতি অনুসরণ করা, যেগুলো উল্লেখ করেছ তার সমান।’ (মুসলিম)

(৫) যে ব্যক্তি তার ধনমালের হেফাজতের কারণে নিহত হয়েছে সে শহীদের মর্যাদা পাবে। আবার যে ব্যক্তি নিজের জীবনের হেফাজতের কারণে নিহত হয়েছে সে শহীদের মর্যাদা পাবে। যে ব্যক্তি দ্বীনের হেফাজতকালে নিহত হয়েছে ও নিজের স্ত্রী-সন্তানদের হেফাজতকালে নিহত হয়েছে সেও শহীদ।

বিভিন্ন হাদীসে শহীদের মর্যাদা ও সুফল প্রাপ্তির ব্যাপারে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে:

সহীহ বুখারীতে হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, একমাত্র শহীদ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি মৃত্যুর পরে আবার দুনিয়ায় ফিরে আসতে আনন্দ পাবে না, কারণ সে আল্লাহর নিকট থেকে এমন কল্যাণপ্রাপ্ত হয়েছে যা দুনিয়া সমস্ত সম্পদের সমান। সে বাস্তবে শাহাদতের মর্যাদা অনুভব করবে এবং পুনরায় দুনিয়ায় ফিরে এসে আরো একবার আল্লাহর পথে শাহাদত বরণ করার আনন্দ অনুভব করবে।’ সহীহ মুসলিমে শহীদের প্রাপ্তির বর্ণনা করেছেন হজরত আমর ইবনুল আস (রা.)। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন, ‘ঋণ ছাড়া শহীদের সকল গুনাহ শাহাদত প্রাপ্তির কারণে ক্ষমা হয়ে যায়।’ অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালা ঋণ ছাড়া শহীদের ছোট বড় সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেন।


 
এগুলো ছাড়াও মহানবী (সা.) শহীদের প্রাপ্তি ও মর্যাদা সম্পর্কে আরো বলেন যে, একজন শহীদ আল্লাহর কাছ থেকে আরো ৬টি পুরস্কার পাবেন আর সেগুলো হলো:

(১) শহীদের শরীরের রক্তের প্রথম ফোঁটা মাটিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।

(২) জান্নাতে শহীদের সম্মান ও স্থান দেখানো হবে।

(৩) শহীদের কবর আযাব মাফ করে দেয়া হবে।

(৪) শহীদ ব্যক্তি কিয়ামতের ভয়ানক-আতঙ্কজনক বিভীষিকা থেকে নিরাপদ থাকবে।

(৫) শহীদের মাথায় মহাসম্মানিত জান্নাতী মুকুট পরানো হবে, যা মূল্যবান ইয়াকুত পাথর দুনিয়ার সকল সম্পদ থেকে উত্তম, এবং বাহাত্তর জন জান্নাতী হুরের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হবে।

(৬) একজন শহীদ তার নিকটাত্মীয়দের থেকে ৭০ জন লোকের জন্য সুপারিশ করার ক্ষমতা দেয়া হবে। (জামে’ আততিরমিজী)

পরিশেষে বলা যায়, মহান আল্লাহর কাছে একজন শহীদের জন্য রয়েছে আলাদা মর্যাদা ও সম্মান এবং তাকে ইসলাম প্রদান করেছে বিশেষ গুরুত্ব। একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিত শহীদের জন্য মহান আল্লাহর তায়ালার কাছে দোয়া-প্রার্থনা করা।

মহান আল্লাহ তায়ালা সবাইকে শহীদদের প্রকৃত মর্যাদা ও সম্মান প্রদান ও অনুধাবন করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার