ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
২৮০

‘আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়ো না’

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯  

 

পর্ব-১


ইসলাম ও ঈমান মানুষের আশা আকাংখাকে উৎসাহিত করে, পক্ষান্তরে হতাশা বা নিরাশাকে, করে নিরুৎসাহিত।
প্রকৃতপক্ষে যিনি আল্লাহকে প্রভু, রাসূলকে (সা.) অনুসরণীয় অনুকরণীয় নেতা ও ইসলামকে দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেছে তার কি কোনো হতাশা থাকতে পারে? না, কখনো না, হতাশা-নিরাশা তাকে স্পর্শ করতে পারে না।

 
পবিত্র কোরআনে হতাশা বা নিরাশা সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে,


يَا بَنِيَّ اذْهَبُواْ فَتَحَسَّسُواْ مِن يُوسُفَ وَأَخِيهِ وَلاَ تَيْأَسُواْ مِن رَّوْحِ اللّهِ إِنَّهُ لاَ يَيْأَسُ مِن رَّوْحِ اللّهِ إِلاَّ الْقَوْمُ الْكَافِرُونَ


বঙ্গানুবাদ: ‘হে আমার পুত্রগণ! তোমরা যাও, ইউসুফ ও তার সহোদর ভাইয়ের অনুসন্ধান করো এবং আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হইও না। কারণ আল্লাহর রহমত হতে কেউই নিরাশ হয় না, কাফির সম্প্রদায় ব্যতীত।’ (সূরা ইউসুফ, আয়াত: ৮৭)।


শাব্দিক ব্যাখ্যা: ‘হে আমার পুত্রগণ! তোমরা যাও অতঃপর তোমরা অনুসন্ধান করো ইউসুফ ও তার সহোদর ভাইকে এবং তোমরা নিরাশ হইও না আল্লাহর রহমত হতে। নিশ্চয়ই কেউই নিরাম হয় না আল্লাহর রহমত হতে কাফির সম্প্রদায় ব্যতীত।’


আয়াত নাজিলের প্রেক্ষাপট: 

এখানে আল্লাহ তায়ালা ইয়াকুব (আ.) এর ১১ ছেলের ত্রাণ সংগ্রহে মিসর সফরকালে ইউসুফ (আ.) কর্তৃক তার সহোদর ভাই বিন ইয়ামীনকে তার নিকট আটক রাখার পর তার ভাইয়েরা তাদের বৃদ্ধ পিতা ইয়াকুব (আ.) এর নিকট ফিরে আসলে তার কষ্ট জর্জরিত কন্ঠে ছেলেদের উদ্দেশ্যে তিনি যে কথা বলেছিলে তারই বর্ণনা করেন।


মূল বক্তব্য: 

ইয়াকুব (আ.) তার দুই ছেলে হারিয়েও কঠিন বিপদে হতাশ হলেন না এবং তার ছেলেদেরও ধিক্কার দিলেন না বরং তিনি ধৈর্যের পরিচয় দিলেন আর তাদেরকেও হতাশ বা নিরাশ হতে বারণ করলেন আর এটাই প্রত্যেক মুমিনের উচিৎ। কারণ হতাশ হওয়া কোনো মুমিনের কাজ নয়। আমরা আলোচ্য আয়াতে লক্ষ্য করেছি আল্লাহ সুবাহানু ওয়া তায়ালা বলেছেন,


أَخِيهِ وَلاَ تَيْأَسُواْ مِن رَّوْحِ اللّهِ إِنَّهُ لاَ يَيْأَسُ

 
অর্থাৎ: ‘আল্লাহর রহমত হতে কেউই নিরাশ হয় না, কাফির সম্প্রদায় ব্যতীত। (সূরা: ইউনুস, আয়াত: ৮৭)।


আর আমাদের আলোচ্য বিষয়- ‘হতাশা বা নিরাশা।’


নিন্মে ‘হতাশা বা নিরাশা’র পরিচয়, কারণ, প্রভাব ও তা থেকে মুক্তির উপায় অতি সংক্ষেপে আলোচনা করার প্রায়াস পাব- ইনশা-আল্লাহ!


হতাশা কী?


হতাশাকে ইংরেজীতে বলা হয় Deperession (ডি’প্রেশন), অর্থাৎ-বিষাদগ্রস্ততা, মন-মরাভাব, দীনমনস্কতা। Frustration 
(ফ্রাসট্রেশান), অর্থাৎ-বিফলতা, ব্যর্থতা, নৈরশ্য, হতাশা।


যার বিশ্লেষণ- অতীতে কোনো চাহিদা পূরণ না হওয়া কিংবা সাধ্যানুযায়ী চেষ্টার পরেও কাংখিত ফল না পাওয়া অথবা ভবিষ্যতে লক্ষ্যে পৌঁছার সম্ভাবনা না থাকায় মানসিকভাবে যে অস্থিরতা বা অবসাদের সৃষ্টি হয় তাকেই হতাশা বা নিরাশা বলা হয়।

 
হতাশা বা নিরাশার কারণ- আমরা যদি একটু মনোযোগসহ লক্ষ্য করি তাহলে দেখতে পাব আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কিছু না কিছু এমন ঘটনা রয়েছে বা আমাদরে কম-বেশি হতাশায় ভোগায়।


আর এমন কিছু কারণ নিম্নে উল্লেখ করছি-


(১) পরকাল কেন্দ্রীক কারণ: 

কোনো বড় ধরনের পাপ করে ফেলা, হতে পারে জীবনের অধিকাংশ সময় ধরে পাপের কাজে লেগে থাকা, হঠাৎ কোনো বড় পাপে জড়িয়ে যাওয়া,পাপের রাস্তা থেকে ফিরে আসার ইচ্ছা থাকা সত্বেও কোনো প্রতিবন্ধতার দরুন ফিরতে না পারা, পাপের পরিমাণ নিয়ে অধিক ভাবা, জাহান্নামের ভয়ে ভীত হওয়া, জান্নাত থেকে নিরাশ হওয়া, কিয়ামতের ভয়াবহতা নিয়ে ভাবনা ইত্যাদি।


(২) ইহকাল কেন্দ্রীক কারণ: যথা- 

(ক) আপনজনের বিয়োগ: হতে পারে কারো মাতা-পিতা, সন্তান, ভাই-বোন, স্ত্রী অথবা এমন কেউ, যার তার সঙ্গে আত্নীয়তার কোনো সম্পর্ক নাই অথচ যে তার পৃতিবীতে একমাত্র আপনজন অথবা অবলম্বন তার মৃত্যু হওয়া, অথবা সম্পর্ক ছিন্ন হওয়া, অথবা ভুল বুঝা-বুঝি হওয়া, অথবা আপনজনদের পক্ষ্য থেকে কষ্ট, অবহেলা, অবজ্ঞার কথা শুনা ইত্যাদি।


(খ) উপার্জনে ক্ষতি সাধন: হতে পারে কারো উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন চাকরি চলে যাওয়া, ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া, ফল-ফসলের বাগান-ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া ইত্যাদি।


(গ) কাঙ্খিত লক্ষ্য পূরণ না হওয়া: হতে পারে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে না পারা বা ফেল হওয়া, চাকরি ইন্টারভিউতে উত্তীর্ণ না হওয়া, চাহিদমত চাকরি না পাওয়া, অতিকষ্টে জীবন-যাপন করা,কাঙ্খিত জনের সঙ্গে বিবাহ না হওয়া বা প্রেমে ব্যর্থ হওয়া ইত্যাদি।


(ঘ) শারীরিক কারণ: যেমন- কোনো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়া, কোনো দুর্ঘটনার শিকার হওয়া, প্রতিবন্ধী হওয়া ইত্যাদি।


হতাশার প্রভাব: 

হতাশার দরুণ একজন লোক যা খুশি করতে পারে, হতাশা-মানুষের মধ্যে থাকা সকল যোগ্যতাকে বিনষ্ট করে দিতে পারে, যার ফলে শারীরিক, মানুষিক এবং নৈতিক ভাবে সে ক্ষতিগ্রস্তহতে পারে, ইতিবাচক চিন্তা থেকে সর্বদায় নেতিবাচক চিন্তায় ডুবে থাকে যার ফলশ্রুতিতে তার নিজেকে,পরিবার, বা অন্য কাউকে নিয়ে ভালো চিন্তা করার সুযোগ সে পায় না এমনকী সে আত্নহত্যা পর্যন্ত করতে পারে। এছাড়াও তার মাঝে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো পরিলক্ষিত হয়। যথা-
১.মহান আল্লাহকে দোষারোপ করা। ২.মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় না করা। ৩.মহান আল্লাহর ওপর ভরসা না করা। ৪.মহান আল্লাহর অবাধ্য হওয়া। ৫.তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস না করা। ৬.কুফরী পথ বেছে নেয়া। ৭.সংসারের প্রতি উদাসীনতা। ৮.কারো সঙ্গে ভালো আচরণ না করা। ৯. মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া। ১০.একাকীত্ব বেছে নেয়া। ১১.অধৈর্য হওয়া। ১২.আত্নহত্যা করা ইত্যাদি।


হতাশা বা নিরাশা থেকে মুক্তির উপায়: হতাশা থেকে মুক্তির জন্য প্রথমেই যে বিষয়টিকে সামনে রাখতে হবে তা হলো-

 
`The Most Important Time' অর্থাৎ- ‘এখন বা বর্তমান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়।’


আপনি যদি কোনো অতীত বিষয়কে কেন্দ্র করে হতাশ বা নিরাশ হয়ে থাকেন ভালো হোক বা মন্দ হোক, ইহকাল কেন্দ্রীক হোক বা পরকাল কেন্দ্রীক হোক তাহলে মনে রাখুন-যে অতীত হারিয়ে গেছে তা আপনার জীবনে আর কখনোই আসবে না তাই অতীতকে ভুলে যান, আর যদি ভবিষ্যতের কোনো বিষয় নিয়ে আপনি হতাশ বা নিরাশ হয়ে থাকেন তাহলে মনে রাখতে হবে যে এখনো ভবিষ্যত আসেনি। তাই তার প্রস্তুতির জন্য বর্তমান সময়কে কাজে লাগান। তাতে আপনার দুনিয়া এবং আখিরাতের সকল কাজ সুন্দর ও সহজ হয়ে যাবে-ইনশা-আল্লাহ!


সম্মানিত পাঠক! আপনি যদি উল্লিখিত কোনো কারণে হতাশ বা নিরাশ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি মনে রাখবেন, আপনি একজন মুমিন। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা মুমিনদের কম-বেশি পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের ঈমানকে আরো সুদৃঢ় করে থাকেন। এমতাবস্থায় আপনার করণীয় হলো-


(১) মহান আল্লাহর ক্ষমা ও দয়া থেকে কখনো-ই নিরাশ হবেন না এবং দ্রুত পাপের কাজ হতে তাওবাহ করত:
 

ফিরে আসুন! মহান আল্লাহর ক্ষমা ও দয়ার প্রতি আশা বা ভরসা রেখে পাপের মধ্যে কখনো-ই ডুবে থাকবেন না। আল্লাহ তায়ালা বলেন,


قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

অর্থাৎ: ‘বলো: হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ- আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়ো না, আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।’(সূরা: আয যুমার, আয়াত: ৫৩)।


তাওবাহ করে মহান আল্লাহর দিকে ফিরে আসলে তিনি বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত খুশি হন। যেমন- রাসূল (সা.) বলেছেন,


অর্থাৎ: বান্দা যখন মহান আল্লাহর কাছে তাওবাহ করে তখন তিনি ওই লোকের চেয়ে বেশি আনন্দিত হন, যে মরুভূমিতে নিজ সওয়ারীর ওপর আরোহিত ছিল। তারপর সওয়ারীটি তার হতে হারিয়ে যায়। আর তার ওপর ছিল তার খাদ্য ও পানীয়। এরপর নিরাশ হয়ে সে একটি গাছের ছায়ায় এসে আরাম করে এবং তার উটটি সম্বন্ধে সম্পূর্ণরুপে নিরাশ হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় হঠাৎ উটটি তার কাছে এসে দাঁড়ায়। অমনিই সে তার লাগাম ধরে ফেলে। এরপর সে আনন্দে আত্নহারা হয়ে বলে উঠে, হে আল্লাহ! তুমি আমার বান্দা, আমি তোমার রব।


আনন্দে আত্নহারা হয়ে সে ভুল করে ফেলেছে। (সহীহ বুখারী-২৭৪৭, ই.ফাঃবাং, হা: ৬৭০৮,বাং,ই:সে:,হা:৬৭৬৩)। চলবে...

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার