ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৭৪৭

কাবা ধ্বংস করতে আসার ঘটনা ও অহঙ্কারীদের জন্য শিক্ষা

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০১৮  

আরবের ইতিহাস এ-বিষয়ের সাক্ষী যে, আরবের সমগ্র অধিবাসী, চাই তারা যে কোনো দলের হোক আর যে কোনো ধর্মেরই হোক, কাবা শরিফের খুব সম্মান করা এবং নিজ নিজ ধর্মবিশ্বাস অনুসারে তার হজ পালন করা পবিত্র কর্তব্য মনে করতো।

এ-কারণেই বিশেষ করে কাবার ভেতরে আরবের বিভিন্ন গোত্রের তিনশো ষাটটি মূর্তি রক্ষিত ছিলো। এমনকি হজরত ইব্রাহিম (আ.), হজরত ইসমাইল (আ.), হজরত ইসা (আ.) ও হজরত মারইয়াম (আ.) এর ছবিও কাবা ঘরে রক্ষিত ছিলো।

মক্কা বিজয়ের দিন যখন নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিজয়ীবেশে কাবা শরিফে প্রবেশ করলেন, তখন তাঁর আদেশে হজরত আলি (রা.) অন্যান্য কতিপয় সাহাবি (রা.) মূর্তিগুলোকে কাবাগৃহ থেকে বের করেন। তখনও এই ছবিগুলো কাবাগৃহে ছিলো। আর একটি রেওয়ায়েতে বর্ণিত আছে যে, নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সামনে এই আলোচনা করা হলো যে, আরবেরা হজরত ইসমাইল (আ.) এর ছবি বানিয়েছে এভাবে যে, তাঁর হাতে পাশা রয়েছে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, মুশরিকরা মিথ্যাবাদী। ইসমাইল (আ.) এ ধরনের অহেতুক কাজ থেকে পবিত্র ছিলেন।

এ কাবাকে ধ্বংস করতে এসেছিলো আবরাহা বাহিনী। ইতিহাস আজও তার নাম নিন্দাভরে স্মরণ করে। ঘটনাটি হচ্ছে, সানআয় অবস্থানকারী একজন হিজাযি শুনতে পেলো আবরাহা আল-কুল্লাইস নামক গির্জা নির্মাণ করেছে। সে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলো। এক রাতে সুযোগ পেয়ে (মলমূত্র ত্যাগ করে) ওই গির্জাকে অপবিত্র করে দিলো। আবরাহা সকালে এই সংবাদ শুনতে পেলো এবং অনুসন্ধান করে জানতে পারলো যে, এক হিজাযি এহ কাণ্ড ঘটিয়েছে। সে ক্রোধে অস্থির হয়ে পড়লো। গির্জাটির অপমান দেখে সে রাগে অপমানে দাপাদাপি করতে থাকলো। সে শপথ গ্রহণ করলো, ‘এখন এর প্রতিশোধে আমি ইব্রাহিমের কাবাকে ধ্বংস না করে শান্ত হয়ে বসে থাকবো না।’ এই সংকল্প করে আবরাহা এক বিরাট সেনাবাহিনী এবং বিশাল হস্তীবাহিনী সঙ্গে নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলো।

এই খবর বাতাসের ওপর সওয়ার হয়ে আরবের সমস্ত গেত্রের কাছে পৌঁছে গেলো। এই সংবাদের ফলে সমগ্র আরব জাতির মধ্যে বিশেষ উত্তেজনার সৃষ্টি হলো। প্রথমে ইয়ামানেরই একজন আমির যু-নাদার ইয়ামান থেকে বের হয়ে আরবের বিভিন্ন গোত্রের কাছে দূত প্রেরণ করে বললেন, আমি আবরাহার মোকাবিলা করতে চাই। আপনাদের উচিত এই পবিত্র উদ্দেশ্যে আমাকে সহযোগিতা করা। তারপর যু-নাদার অগ্রসর হয়ে আবরাহার মুখোমুখি হলেন এবং তার সঙ্গে যুদ্ধ করলে। কিন্তু তিনি পরাজিত হলেন। আবরাহা যু-নাদারকে বন্দি করলো। তারপর খাসআম গোত্রের সরদার নুফাইল বিন হাবিব আল-খাসআমির সঙ্গে আবরাহার মোকাবিলা হলো। কিন্তু নুফাইলকেও পরাজিত হতে হলো। তিনিও আবরাহার হাতে বন্দি হলেন।

আবরাহা তায়েফ পৌঁছার পর বনু সাকিফ গোত্রের সরদার মাসউদ বিন মুআত্তাব এগিয়ে আবরাহাকে আশ্বাস দিলো যে, ‘আপনার সঙ্গে আমার ও আমার গোত্রের কোনো বিরোধ নেই। তা একারণে যে, আমরা বিশ্বাস করি, আপনি বাইতুল্লাতকে (বাইতুল্লাহকে ) যাতে আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত মাবুদ লাত রক্ষিত রয়েছে ধ্বংস করার ইচ্ছা রাখেন না। আবরাহা তাদেরকে এ-বিষয়ে নিশ্চিত করে নীরবতার সঙ্গে সামনে এগিয়ে গেলো। মাসউদ সাকাফি আবরাহাকে মক্কার পথ দেখানোর জন্য আবু রিগাল নামের একজন ব্যক্তিকে পথপ্রদর্শক নিযুক্ত করলো। কিন্তু আবু রিগাল মুগাম্মিস উপত্যকায় গিয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হলো। বলা হয়ে থাকে যে, জাহেলি যুগে আবু রিগালের কবরের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হতো। কেননা, সে কাবাগৃহকে ধ্বংস করার জন্য আবরাহাকে পথপ্রদর্শন করেছিল।

আবরাহা মুগাম্মিসে পৌঁছার পর হাবশি সেনাপতি আসওয়াদ বিন মাকসুদকে মক্কায় গিয়ে অতর্কিত আক্রমণ করার নির্দেশ দিলো। আসওয়াদ মক্কার উপকণ্ঠে পৌঁছে দেখতে পেলো কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্রের উট, মেষ ও বকরির পাল মাঠে চরে বেড়াচ্ছে। এগুলো সংখ্যায় ছিলো অনেক। আসওয়াদ পশুগুলোকে ধরে তার সেনাবাহিনীর কাছে নিয়ে এলো। এতে আব্দুল মুত্তালিবেরই দুইশো উট ছিলো। এই সময় আব্দুল মুত্তালিব কুরাইশের সরদার ছিলেন। এই অবস্থা দেখে কুরাইশ, কিনানা, হুযাইল ইত্যাদি গোত্র পরস্পর পরামর্শ করলো যে, কিভাবে আবরাহার মোকাবিলা করা যায়। পরামর্শ করার পর সিদ্ধান্ত হলো, মোকাবিলা করার সাধ্য আমাদের নেই। সুতরাং আমাদের মক্কা ত্যাগ করে নিকটবর্তী পাহাড়ে চলে যাওয়া উচিত। তারা মক্কায় থাকতেই আবরাহার পক্ষ থেকে জানতাহ আল-হিমইয়ারি এসে পৌঁছালো এবং জিজ্ঞেস করলো, মক্কার সরদার কে? লোকেরা আবদুল মুত্তালিবের প্রতি ইশারা করে দেখিয়ে দিলো।

জানতাহ বললো, আমি আবরাহার পক্ষ থেকে এসেছি। আমাদের বাদশাহর আদেশ আপনাদের কাছে এই পয়গাম পৌঁছে দেয়া যে, আপনাদের কোনো ধরনের ক্ষতি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা আপনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসি নি। আমরা শুধু এই ঘরটি (বাইতুল্লাহ ) ধ্বংস করতে এসেছি। সুতরাং, যদি আমাদের মোকাবিলা করার বা আমাদের বাঁধা প্রদানের ইচ্ছা থাকে, তবে তা আপনাদের বিবেচনা। আর যদি আপনারা আমাদের এই ইচ্ছার বিরুদ্ধে না যান তবে আমাদের বাদশাহ আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী।

আবদুল মুত্তালিব বললেন, তোমাদের বাদশাহর সঙ্গে যুদ্ধ করার আমাদের কোনোও ইচ্ছে নেই। এটা আল্লাহ তায়ালার ঘর এবং তাঁর সম্মানিত নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর স্মৃতি। সুতরাং, একে রক্ষা করার ইচ্ছা যদি আল্লাহ তায়ালার না হয়, তবে কিছুতেই আমাদের বাধা প্রদানের সাধ্য নেই।

এই কথোপকথনের পর আব্দুল মুত্তালিব আবরাহার সেনাশিবিরে পৌঁছলেন। এক সভাসদের সুপারিশ ও পরিচয় প্রদানের পর তাঁকে আবরাহার সামনে উপস্থিত করা হলো। আব্দুল মুত্তালিব সুন্দর চেহারার ও গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। আবরাহা তাকে দেখে তার সঙ্গে খুব সম্মানজনক আচরণ করলো এবং তার বিনোদনের আসর বসালো।

কথাবার্তা শুরু হলে আবদুল মুত্তালিবের প্রাঞ্জল ভাষা ও বাগ্মিতায় আরো প্রভাবিত হলো। কথা বলতে বলতে যখর আসল ব্যাপারে আলোচনা শুরু হলো, আবদুল মুত্তালিব অভিযোগ করলেন, ‘আপনার এক সেনাপতি আমার উটগুলো ধরে নিয়ে এসেছে। আমি আপনার কাছে আবেদন চানাচ্ছি আমার উটগুলো আমাকে দিয়ে দিন।

আবরাহা এই কথা শুনে বললো, আবদুল মুত্তালিব, আমি তো তোমাকে খুব বুদ্ধিমান মনে করতাম। কিন্তু আমি তোমার এই আবেদন শুনে বিস্মিত হয়েছি। তুমি জানো আমি কাবা গৃহ ধ্বংস করতে এসেছি। আর কাবা গৃহ তোমার কাছে সবচেয়ে সম্মানি ও পবিত্র। কিন্তু তুমি এ ব্যাপারে একটি কথাও না বলে এমন একটি তুচ্ছ বিষয়ের উল্লেখ করলে! আবদুল মুত্তালিব বললেন, ‘বাদশাহ, উটগুলো আমার মালিকানাধীন। তাই আমি এ-ব্যাপারে আবেদন করলাম। আর কাবা আমার ঘর নয়; আল্লাহ তায়ালার পবিত্র ঘর। তিনিই তার রক্ষক। আল্লাহর দরবারে আমার সত্তার কী মূল্য আছে যে আমি কা‘বাগৃহ রক্ষার জন্য সুপারিশ করবো।’ আবরাহা বললো, এখন কেউ একে আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না। আবদুল মুত্তালিব জবাব দিলেন, ‘তা আপনি জানেন আর কাবাগৃহের যিনি মালিক তিনি জানেন।’ এই পর্যন্ত এসে তাদের কথোপকথন শেষ হলো। আবরাহা নির্দেশ দিলো, ‘আবদুল মুত্তালিবের উটগুলো তাকে ফিরিয়ে দাও।’

মুহাম্মদ বিন ইসহাক বলেন, বনু বকরের সরদার ইয়ামার বিন নাফাসাহ ও বনু হুযাইলের সরদার খুওয়াইলিদ বিন ওয়াসিলাহ আবদুল মুত্তালিবের সঙ্গী ছিলেন। ফিরে আসার আগে তাঁরা আবরাহার জন্য এই প্রস্তাব পেশ করলেন, ‘আপনি যদি কাবাগৃহ ধ্বংস করা থেকে বিরত থাকেন, তবে আমরা তিহামা আঞ্চলের এক তৃতীয়াংশ সম্পদ আপনার খেদমতে উপসিস্থত করবো। কিন্তু আবরাহা তার শক্তি ও প্রতাপের মোহে মত্ত থেকে তাঁদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলো এবং সংকল্পে অটল থাকলো। ফলে তারা বিফল হয়ে ফিরে গেলেন।

আবদুল মুত্তালিব মক্কায় ফিরে এসে কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্রের লোকদের সমবেত করলেন এবং আবরাহার সঙ্গে তাঁর কী আলোচনা হয়েছে সেটা জানালেন। তিনি তাদের সবাইকে পরামর্শ দিলেন, এখন তোমাদের সবাইকে নিকটবর্তী গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করা উচিত। এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য চোখে দেখতে না হয়। মক্কাবাসীরা পাহাড়ের দিকে যাওয়ার সময় আবদুল মুত্তালিবের নেতৃত্যে কাবাগৃহের পাশে জড়ো হলেন। কাবার দরজার শিকল ধরে তাঁরা সবাই আল্লাহ তায়ালার দরবারে এই প্রার্থনা করলেন-

‘হে আল্লাহ, এ বিষয়ে আমরা চিন্তিত নই, আমরা যখন আমাদের ধনসম্পদ রক্ষা করতে পারি, তখন তোমার সম্পদ (কাবা) অবশ্যই তোমাকে রক্ষা করতে হবে। তোমার রক্ষণাবেক্ষণের ওপর ক্রুশশক্তি জয়ী হতে পারবেনা এবং ক্রুশের পূজারীদেরও কনো সাধ্য নেই। তবে হ্যাঁ, তুমি নিজেই যদি তাদেরকে তোমার ঘর ধ্বংস করতে দাও, তবে আমরা আর কী। তোমার মন যা চায় তুমি তাই করো।’

আবদুল মুত্তালিব তার বিশেষ পদ্ধতির সঙ্গে তৎক্ষণাৎ যে-কবিতাগুলো আল্লাহ তায়ালার দরবারে পেশ করেছিলেন, ইতিহাসবিদগণ সেগুলো উল্লেখ করেছেন,

لا همّ إن العبدَ يمنع رحله فامْنَعْ حِلالَكَ

لا يَغْلِبَنَّ صليبُهم ومحالهم عَدُوَّا محالك

إن كنت تاركهم و قبلتنا فأمر ما بدا لك
‘হে আল্লাহ, একজন দাসও তার দলবলকে রক্ষা করে। সুতরাং তুমি তোমার বিধিসম্মত ও ন্যায়সঙ্গত সম্পদ ও লোকজনকে রক্ষ করো। ওদের ক্রুশ ও শক্তি যেনো তোমার প্রতাপ ও পরাক্রমের ওপর জয়যুক্ত না হয়। আমাদের কিবলাকে যদি তুমি শত্রুর করুণার ওপর ছেড়ে দিতে চাও, তা হলে যা খুশি করো।’

সুহাইলি এর পর আরো একটি পঙ্ক্তি বর্ণনা করেছেন,

وانصرْ على ال الصَّلِيبِ وعابديهِ اليوم ا لك

‘ক্রুশ পরিবার ও তার পূজারীদের বিরুদ্ধে আজ তোমার পরিবারকে সাহায্য করো।’ আবদুল মুত্তালিব ও কুরাইশ গোত্রের সব লোক মক্কা ত্যাগ করে নিকটস্থ পাহাড়ে আশ্রয় গ্রহণ করলেন। কী ঘটনা ঘটে তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগনেন।

আবরাহা পরের দিন সকালে তার সেনাবাহিনীকে সামনের দিকে অগ্রসর করালো। প্রথম সারিগুলোতে ছিলো হস্তীবাহিনী আর তার পেছনে ছিলো বিরাট পদাতিক বাহিনী। আবরাহার সেনাবাহিনী মক্কায় পৌঁছার আগেই পথিমধ্যে অকস্মাৎ ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি এসে সৈন্যদের মাথার ওপর শূন্যমণ্ডল ছেয়ে ফেললো। পাখিদের ঠোঁট ও পাঞ্জার নিচে ছোট ছোট প্রস্তর খণ্ড ছিলো। পাখিরা সেনাবাহিনীর ওপর ওইসর প্রস্তরখণ্ড নিক্ষেপ করতে লাগলো। যার গায়েই ওই প্রস্তরখণ্ড লাগলো, দেহ ছিদ্র হয়ে বের হয়ে গেলো এবং সঙ্গে সঙ্গেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পচে যেতে শুরু করলো। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্ত সেনাবাহিনী ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেলো।

মুহাম্মদ বিন ইসহাক বলেন, এই অবস্থায় কিছু সংখ্যক লোক সেনাবাহিনী থেকে পলায়ন করে ইয়ামেনে ও হাবশায় গিয়ে পৌঁছলো। ওখানে তারা আবরাহা ও তার সেনাবাহিনীর ধ্বংস হওয়ার ঘটনা শুনলো।

বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে আবি হাতিম (রহ.) উবাইদ বিন উমায়েরের রেওয়ায়েতে বর্ণনা করেছেন যে, আবরাহার সেনাবাহিনী মক্কার দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় প্রচণ্ড বাতাস প্রবাহিত হলো। বাতাসের সঙ্গে সমুদ্রের দিক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়ে এসে সেনাবাহিনীর ওপর ছেয়ে গেলো। মনে হতে লাগলো , শূন্যমণ্ডলে পাখিদের বিরাট সেনাবাহিনী সারির পর সারি বেঁধে আছে। তাদের ঠোঁটে ও দুই পাঞ্চায় প্রস্তরখণ্ড ছিলো। পাখিগুলো প্রথমে শব্দ করলো। সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বাতাস প্রবাহিত হলো। তা প্রস্তরবর্ষণকে সৈন্যদের জন্য ভয়ঙ্কর বিপদ সৃষ্টি করে দিলো। পাখিদের প্রস্তরখণ্ড যে-সৈন্যের ওপরই পতিত হলো, তার শরীর ভেদ করে বের হয়ে গেলো এবং দেহ পচে-গলে পড়তে লাগলো। এইভাবে পাখিদের প্রস্তরখণ্ড গোটা সেনাবাহিনীকে ঝাঁঝরা করে দিলো।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার