ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৪০

ফসল হারিয়ে কাঁদছেন কৃষক

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ৬ এপ্রিল ২০২২  

গত ছয় মাস ধরে ক্ষেতে-কাম করছি, গুছাত ধান বড়াইছে, আবার কোনটা পুষ্ট হইছে না। আশায় আশায় দিন কাটাইতেছি। জমিটির দিকে তাকাইতেছি। আর সাত-আট দিন ওলেই ধান কাটতে হারতাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ধান ক্ষেত ডুবে গেছে। দেড় লাখ টাকা ঋণ করে জমি রইছিলাম, এখন কেমনে ঋণ পরিশোধ করাম? গত বছরেও গরম হাওয়ায় জমিটি নষ্ট হইয়া গেছিলগা, এই ঋণও পরিশোধ করা ওইল না।


মদন উপজেলার ডুবে যাওয়া চাতল, আনবালই হাওরপাড়ের বিয়াশি গ্রামের কৃষক মাসুদ মিয়া আপসোস করতে করতে এমনই কথাগুলো বলছিলেন। হাওরপাড়ে দাঁড়িয়ে একইভাবে হা-হুতাশ করছিলেন একই গ্রামের মগ্গুল নামে আরেক কৃষক।

স্থানীয় কৃষকদের দাবি, ফতেপুর ইউনিয়নের চাতল, আনবালই, খয়রা, গুরাইল, রায়ামাটি, হাওরে পাঁ থেকে ছয়শ হেক্টর জমি আছে। কোনো ধানই পাকেনি। ২ এপ্রিল থেকে ধনু নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে এসব হাওরে ঢুকেছে। ফলে আধাপাকা ধান কাটছেন কৃষক।

এ নিয়ে গত পাঁচ দিনের উজানের ঢলে (ভারতের মেঘালয়-চেরাপুঞ্জি থেকে নেমে আসা পানিতে) পাঁচটি হাওর ডুবেছে।

হাওরগুলো হলো— চাতল, আনবালই, খয়রা, গুরাইল, রায়ামাটি, চাকুয়া, বড়, হেলি, বুরবুরিয়া, তিহারদাইর, হরগারডর, খরখরিয়া হাওর। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মদনের নদীর পানি হাওরের বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বড় ছয়টিসহ ছোট-বড় প্রায় অর্ধশতাধিক বোরো ফসলের হাওর হুমকিতে পড়েছে। 
উপজেলার তলার হাওরে এসব নদীর পানি প্রবেশ করে। কৃষকদের চোখের সামনেই ডুবে যাচ্ছে জমির ধান। এই হাওরে ৯৫ ভাগ জমি চাষাবাদ করেন তিয়শ্রী ও ফতেপুর ইউনিয়নের কৃষকরা। স্থানীয়রা জানান, মঙ্গল ও বুধবার নদীতে ৮-৯  ইঞ্চি পানি বেড়েছে। ২-৩ দিন এভাবে পানি বাড়লে ছোট ছোট অনেক হাওর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই হাওরগুলো হচ্ছে— তলার হাওর, উচিতপুর হাওর, গজারিয়া হাওর, গোবিন্দশ্রী হাওর, ডলিয়ার হাওর ও ফেনির হাওর।

এসব নদীতীরবর্তী হাওরের ফসলরক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। অসময়ে নির্মিত দুর্বল বাঁধ নিয়ে উৎকণ্ঠা আরও বেশি কৃষকদের।

ফতেপুর ইউনিয়নের বিয়াশি গ্রামের কৃষক মাসুম মিয়া এবার ৮ একর জমি ঋণ করে বর্গা দিয়েছেন। তিনি বলেন, কয়েক কাটা জমি আধাপাকা কেটেছি। বাকি সব জমি চোখের সামনেই ডুবে গেছে। কীভাবে ঋণ পরিশোধ করব তাও ভেবে পাচ্ছি না।

কৃষাণী হোসনা আক্তার জানান, অনেক ক্ষতি হয়েছে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে জমি চাষ করেছিল। সব গঙ্গার জলে চলে গেছে। পোলাপান নিয়ে কীভাবে চলব তা বুঝতেছি না।

মদন উপজেলার বেড়িবাঁধগুলোতে বিপদসীমা দেখা দেওয়ায় কৃষক ও প্রশাসন দিন-রাত মাটি খেটে বাঁধরক্ষার চেষ্টা করছেন। এদিকে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে মূল হাওর গুলোতে এখনো পানি উঠেনি। শুধু মাত্র নদী ও খালের মধ্যে অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে পানি ঢুকেছে।

ফসল রক্ষার বাধঁগুলো এখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এ নিয়ে মাঠে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন কাজ করছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৈকত  জানান, প্রকল্প এলাকার বাহিরে নদী ও খালের মধ্যে পানি ঢুকেছে। সেখানে আমাদের বাঁধ নেই। মূল হাওরে এখনো পানি ঢুকেনি। আমাদের ফসল রক্ষার বাঁধ গুলোর ক্ষতি হয়নি।

অপর দিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর জানান, মদন উপজেলার হাওরে নদী ও খালের মধ্যে অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে লাগানো বোরো ধানের ক্ষেতে উজান থেকে নেমে আসা পাহারি ঢলের পানি ঢুকেছে। এ নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি কী পরিমাণ বোরো ধানের জমি ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে তা নিরুপনের কাজ চলছে। তবে বৃষ্টিপাত না হলে ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না। যে সমস্ত জমি বোরো ধান অর্ধপাকা হয়েছে তা দ্রুত কৃষকদের কেটে ফেলার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ জানান, হাওরে পানি বৃদ্ধির খবর পেয়ে আমি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। ফতেপুর ইউনিয়নের দেওসহিলা গ্রামের সামনে কয়েকটি হাওরে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করছে। এই এলাকার একটি বেড়িবাঁধে মাটি কেটে ফসলরক্ষার চেষ্টা চলছে।  বৃষ্টিপাত না হলে তেমন কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার