ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৩৫

সিলেটে করোনাকালে রক্ত দিয়ে অসহায়ের পাশে সঞ্চালন

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১  

বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষই যখন নিজের স্বার্থের জন্য সবসময় নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে তখন পুঁজিবাদী এই সমাজে কিছু মানুষ শুধু মানুষকে ভালোবেসে পৃথিবীটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে নিরবে। সিলেটের যেখানেই রক্তের প্রয়োজন পড়ে সেখানেই চাহিদার ভিত্তিতে রক্তদাতা ব্যবস্থা করে দেয়াই তাদের অন্যতম একটি কাজ। করোনাভাইরাসের এই মহামারীতেই প্রায় ০১ হাজার মানুষ বিনা পয়সায় রক্ত পেয়েছে। আর এই তালিকায় রক্ত নিয়ে পৃথিবীতে সুন্দর শিশুর জম্ম দিতে সক্ষম হয়েছেন সিলেটের অনেক মা। বিনা স্বার্থে মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে রক্তের যোগান দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তেমনি একদল স্বপনবাজ তরুণ ও তাদের সংগঠন হচ্ছে সঞ্চালন।

রক্তের প্রবাহে গড়ি আত্মার বন্ধন এই শ্লোগানকে বুকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর থেকেই ছুটে চলে এই সংগঠন নিয়ে। মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াচ্ছে রক্ত নিয়ে। যেখানে কোনো স্বার্থ জড়িত নেই। তারা শুধুই মানুষকে ভালোবেসে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই তরুণরা স্বপ্ন দেখেন, রক্তের অভাবে আর একটা মানুষেরও অকাল মৃত্যু হবে না। সেই স্বপ্নকে লালন করে গত ১১ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত কিংবা ভোর অথবা মধ্য-দুপুর, শীত অথবা টিনের চালে খইফোঁটা ঝুম বৃষ্টি; যখনই প্রয়োজন হোক না কেন তারা অসহায় রোগীর জন্য রক্তের ব্যবস্থা করে দেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত ১৪ বছরে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি ব্যাগ রক্ত দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তারা।

রক্তের মাধ্যমে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গিকার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র আসিফ আহমেদ রাজিবের অনুপ্রেরণায় ২৭ জন স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থী এমন সংগঠনের যাত্রা শুরু করে। পরে ২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন পেয়েছিল সঞ্চালন। কিন্তু রক্তদান যাত্রা শুরু করেছিল ২০০৯ সালের ৫ নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যা¤পাসে বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচির মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সর্বদা মানব সেবায় নিয়োজিত সংগঠনটি। সঞ্চালনের আরেকটি সেবামূলক কাজ হচ্ছে অর্থাভাবে যারা চিকিৎসা করতে পারে না তাদের চিকিৎসা সহযোগিতার আয়োজন করে বিভিন্ন চ্যারিটি অনুষ্ঠান এবং সহযোগিতার বাক্স নিয়ে যায় ক্যাম্পাসের প্রতিটি শিক্ষার্থীদের কাছে। এছাড়া শীত মৌসুমে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে থাকে তারা। প্রতি বছর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীদেরও রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে থাকে সঞ্চালন। যা পরবর্তীতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্রে সংযুক্ত করা থাকে। সঞ্চালনের নির্ণয় করা রক্তের গ্রুপ থেকে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের একটা তালিকাও রাখেন। যাতে তারা পরিবর্তীতে কারো রক্তের প্রয়োজন হলে এই তালিকা থেকে আগ্রহী রক্তদাতা খুঁজে বের করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এই সংগঠনের অফিসিয়াল মোবাইল নাম্বার ০১৬১১৪০০৩৮৩ সিলেটের বড় বড় হাসপাতাল গুলোতে দেওয়া আছে। যখন কারো রক্তের প্রয়োজন হয়, তখন আমাদের কাছে ফোন দিয়ে জানালে তারা রক্ত ব্যবস্থা করে দেয়। 

সংগঠনটির বর্তমান সাংগঠিক সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আশ্রাফুল আলম একদিনের ঘটনা নিয়ে বলেন, “টিউশন থেকে ফেরার পর ঘড়িতে তখন রাত দশটা। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে যখন একটু বিশ্রাম নিতে যাব ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থীর ফোনে রক্ত আহবান। অন্তস্বত্বা নারীর জন্য ও পজেটিভ রক্ত লাগবে। তখন বাহিরে ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টির শব্দে ফোনের কথা পরিষ্কার শোনা যাচ্ছিল না। ও পজেটিভ ধারী কয়েকজনকে ফোন দেয়ার পর বৃষ্টির বাহানা দেখিয়ে কেউ রক্ত দিতে হাসপাতাল যেতে চাচ্ছিল না। ঠিক তখনি শেষ ফোন দেই পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আকাশকে। আকাশ রোগীর অবস্থা শুনে হাসপাতাল যেতে রাজি হয়। রাত তখন এগারোটা পেড়িয়ে গেছে। রাস্তায় গাড়ি না পেয়ে যাদের রক্ত লাগবে তাদের ফোন দিয়ে বলি আমাদের জন্য গাড়ি পাঠাতে। তারা রিজার্ভ সিএনজি যুগে আমাদের হাসপাতাল যেতে বলে। আমরা তাই করি। রক্তদাতা আকাশকে নিয়ে আমি সিলেট নগরীর আরোগ্য পলি ক্লিনি’ এ উপস্থিত হই। বৃষ্টি তখনো থামে নি। যখন রক্তদাতা আকাশের হাতে সুঁই বসানো হয় তখন রাত বারোটা দশ মিনিট বাজে। সেরাতে তার রক্তের বিনিময়ে একটি সুন্দর শিশু পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়। হয়তো এরচেয়ে আনন্দের সংবাদ ও এরচেয়ে সুন্দর হাসির গল্প পৃথিবীতে খুব কমই আছে।”

রক্ত দিয়ে মানুষের জন্য কাজ করার স্বপ্নটাকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিয়ে রক্তের প্রবাহে আত্মার বন্ধন গড়তে চায় এই তরুণ শিক্ষার্থীরা। যেকোনো সময় অসুস্থ মানুষদের রক্ত দিয়ে পাশে থাকতে চায় সংগঠনটির সদস্যরা। রক্তের জন্য এই সুন্দর পৃথিবীর মায়া ছেড়ে কেউ বিদায় নিবে এটা তারা চায় না।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার