সিলেটসহ বিজেসির ৬৪ ভাগ জমি বেদখলে রয়েছে

সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের (বিজেসি) ৬৪ ভাগ জমি বেদখলে রয়েছে। জানা গেছে, সাবেক একজন প্রতিমন্ত্রীসহ ৮৬৩ ব্যক্তির দখলে রয়েছে এসব সম্পত্তি। কিছু অংশ রয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দিরের দখলেও।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির মোট জমির পরিমাণ ২৯৫ দশমিক ১৭৯৬৫ একর। এর মধ্যে বেদখলে রয়েছে ১৯০ দশমিক ০৪৫৭৫ একর (৬৪.৩৮%) এবং সংস্থার দখলে ১০৫ দশমিক ১৩৩৯ একর (৩৫.৬২%)।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৫৩ দশমিক ০৯৫ একর সম্পত্তির মধ্যে দখলে ২৮ দশমিক ৫০৫ একর এবং বেদখলে ২৪ দশমিক ৫৯ একর। রংপুর অঞ্চলে ১৭৫ দশমিক ৪৭৫৬ একর সম্পত্তির মধ্যে দখলে ৪৫ দশমিক ৯৫৯৮ একর ও বেদখলে ১২৯ দশমিক ৫১৫৮ একর।

খুলনা অঞ্চলের ৩১ দশমিক ০২৭৬ সম্পত্তির মধ্যে দখলে ১২ দশমিক ১১৩২ একর ও বেদখলে ১৮ দশমিক ৯১৪৪ একর এবং নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জে মোট ৩৫ দশমিক ৫৮১৪৫ একর সম্পত্তির মধ্যে দখলে ১৮ দশমিক ৫৫৫৯ একর ও বেদখলে ১৭ দশমিক ০২৫৫৫ একর।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তত ৮৬৩ ব্যক্তি বা তাদের ওয়ারিশদের দখলে রয়েছে। এ ছাড়া মজসিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, সেবাসংঘ, সরকারি কসাইখানা, বিহারি ক্যাম্প, পৌরসভা, বাজার, চেম্বার অব কমার্স, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন, ফায়ার স্টেশন, খাদ্যগুদাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভূমি অফিস, পোস্ট অফিস, টেলিফোন অফিস ও স্থানীয় ক্লাবের দখলে হয়েছে। কিছু জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বেশ কিছু জমি ‘ক’ তপশিলভুক্ত (সরকারি খাস খতিয়ান) হয়েছে।

সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী আনিসুল হকের ওয়ারিশদের তিনটি দাগে এক একর ৭০ শতাংশ জমি দখলে রয়েছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানের দখলে তিন একর ৩৯ শতাংশ।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বলাশপুর মৌজার শূন্য দশমিক ৩৮ একর সম্পত্তির একটি অংশ উত্তরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের দখলে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। তবে নাম উল্লেখ করা হয়নি।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বিজেসির অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ৭৯৭টি বাসাবাড়ি, ১ হাজার ৯২৪টি গাছপালা, ৬২টি অফিস ঘর, ১২০টি গুদামঘর, ২১টি কাচা প্রেস, ২৯টি দোকানঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৯টি, মসজিদ একটি, মন্দির একটি ও মেশিনারিজ রয়েছে দুটি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিজেসির মোট ২৯৯টি মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে ১৪টি, হাইকোর্টে ৮৬টি ও জর্জকোটে ১৮৭টি। সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির ১৫২টি অডিট আপত্তি রয়েছে। এর সঙ্গে সংশ্লেষ অর্থের পরিমাণ ৮১২ কোটি ৭০ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮৩ টাকা।