সিলেটে ঝড়-বৃষ্টি নিয়ে আশার খবর শোনাল আবহাওয়া অফিস

সিলেটে আর তেমন অস্বাভাবিক বৃষ্টি নেই। জুনের শেষের দিকে কিছুটা ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও তা বৃহস্পতি শুক্র বা শনিবারের মতো হবেনা বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

গত সপ্তাহের শেষ দিন আর এ সপ্তাহ শুরুর দুটো দিন সিলেটে প্রচণ্ড ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এমন বৃষ্টি কখনো দেখেন নি বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন ৭০/৮০ বছর বয়সীরাও। এমন বৃষ্টির ফলে মাত্র এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট এবং সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা।

পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, উদ্ধার তৎপরতা চালাতে সেনা ও নৌবাহিনীকে ডাকতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তারা গত ৩/৪দিন থেকে তারা বন্যার্তদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।

শুধু সিলেটই নয়। আমাদের প্রতিবেশি ভারতের আসাম এবং মেঘালয় রাজ্যেও বৃষ্টি ঝরেছে অস্বাভাবিকভাবে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, গত ১২২ বছরের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে এ দুই রাজ্যে। সিলেট সুনামগঞ্জে বন্যার জন্য মূলত: দায়ী এ দুই রাজ্যের অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত।

তবে আশার কথা, জুনের শেষ পর্যন্ত সিলেট বা সুনামগঞ্জের উজানে থাকা ভারতের আসাম বা মেঘালয়ের আকাশে যেরকম মেঘের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে, তাতে আর কিছুতেই অস্বাভাবিক পর্যায়ে যাবেনা। আর যেটুকু ভারি বৃষ্টিপাত হবে তাতে উত্তরবঙ্গের রংপুর নীলফামারির দিকেই সেই পানি যাবে, এতে সিলেট অঞ্চলে খুব একটা প্রভাব পড়বেনা। অন্তত আপাতত প্রকৃতির তেমন একটা বৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা।

বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, বৃহস্পতি শুক্র ও শনিবার বৃষ্টিপাত মোটামুটি অস্বাভাবিক। সিলেট অঞ্চলে এরকম বৃষ্টি ঝরতে পারে, তেমন একটা ধারণা করা যায়নি আগে। হঠাৎ প্রকৃতি বৈরি হয়ে পড়ে। আর তাই সিলেটসহ উজানের আসাম ও মেঘালয়ে স্বরণকালের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি ঝরেছে।

তিনি বলেন, তবে সেরকম অস্বাভাবিক বৃষ্টি অন্তত জুনের বাকি দিনগুলোতে দেখা যাচ্ছেনা। সিলেট এবং উজানের আসাম মেঘালয় বা মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতেও তেমন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে বৃষ্টি যে একেবারেই ঝরবেনা, তেমন কিন্তু নয়। ঝরবে তবে তা স্বাভাবিক পরিমাণেই ঝরতে পারে। তাও আবার সরাসরি সিলেটের উজানে নয়, নিলফমারির উজানের দিকে কিছুটা ভারি বৃষ্টি ঝরবে। অন্তত এই মুহূর্তে প্রকৃতি বা ঝড়বৃষ্টির গতিবিধি তাই দেখা যাচ্ছে।

এমন আশা জাগানিয়া তথ্য জানানোর পাশাপাশি সিলেটের এই অভিজ্ঞ আবহাওয়াবিদ সামান্য শঙ্কাও প্রকাশ করলেন এই বলে যে, হঠাৎ কোন কারণে আবার প্রকৃতি বৈরি না হয়ে উঠলে মোটামুটি আর বৃষ্টি নিয়ে তেমন ভাবনার কিছু অন্তত জুন মাসে নেই।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতি শুক্র ও শনিবার প্রতিদিন আসাম ও মেঘালয়ে ৭০০ মিলিমিটার থেকে প্রায় ১ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম।