ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৫৬৯

জকিগঞ্জে সুপারীর বাম্পার ফলন, গ্রামে গ্রামে উৎসবের আমেজ

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২১  

সিলেটের জকিগঞ্জের অর্থকারী ফসল সুপারী। ধাঁনের পর পরই যে ফসল জকিগঞ্জে অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলে তা হলো সুপারী। এ বছর জকিগঞ্জে সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে এবার ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। ফলে জকিগঞ্জের গ্রামে গ্রামে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

সুপারি নিয়ে স্থানীয় প্রবাদ রয়েছে “মাছ, বাঁশ, সুপারী জকিগঞ্জের বেটাগিরি। তাছাড়া “ইছামতির পুয়া (ছেলে) চাপ ঘাটের গুয়া (সুপারি)”। প্রবাদটিও শুনা যায় মুখে মুখে। জকিগঞ্জ থেকে বাঁশ কমে যেতে বসলেও মাছ ও সুপারী চাষে চলছে নিরব বিপ্লব। সুপারি বছরে অনন্ত একবার এনে দেয় এ জনপদের মানুষের হাসির ঝিলিক।

নবান্নের উৎসবের মতোই অক্টোবর নভেম্বর মাসে পুরো জকিগঞ্জে সুপারির উৎসব বসে। গাছ থেকে সুপারি পাড়া, চাতলে শুকানো, বিভিন্ন গ্রেডে ভাগ করা ও বাজারে নেয়ার কাজে নিয়োগ করা হয় শ্রমিক। জকিগঞ্জের প্রায় প্রতিটি পরিবারে এ সময়টা কাটে ব্যস্ততার মধ্যে। মানুষের চোখে-মুখে ফুটে উঠে অন্য রকম এক প্রাপ্তির উজ্জ্বল্য। উপজেলার প্রতিটি বাজারে প্রচুর সুপারি বিকিকিনি হয়।

সপ্তাহে দু’দিন জকিগঞ্জ বাজার, বাবুর বাজার, শরীফগঞ্জ বাজার, কালিগঞ্জ বাজার, শাহগলী বাজারে সুপারীর বড় হাট বসে। এছাড়া উপজেলার প্রতিটি ছোটছোট বাজার থেকে ফরিয়ারা সুপারি ক্রয় করে বড় হাটে বিক্রয় করে থাকেন। অনেক ব্যাপারী তাদের স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে বসতবাড়ির সুপারি বাগানও অগ্রিম কিনে রাখেন। স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ীও ফল পাকার আগেই নির্দিষ্ট দামে পুরো বাগান ক্রয় করে পর্যায়ক্রমে বিক্রি করেন।

একেকজন বাড়ি মালিক সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকার সুপারি বিক্রি করে থাকেন বলে জানান মাইজকান্দির কামাল উদ্দিন। সিলেটসহ পার্শ্ববর্তী জেলা সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ছাড়াও রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নীলফামারী, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ নানা জেলায় জকিগঞ্জের সুপারির রয়েছে বিপুল চাহিদা। মানের দিক থেকে জকিগঞ্জের সুপারি অন্য যেকোন জেলার চেয়ে ভাল, দামেও সস্তা। শুধু মাত্র জকিগঞ্জ বাজারেই হাটবারে কোটি টাকার সুপারী ক্রয়-বিক্রয় হয় বলে জানান পাইকারী বিক্রেতারা।

এবার “ভি” (৪৪০টি) বিক্রি হচ্ছে ৬শ থেকে ১৬ শ টাকায়। স্থানীয় ভাষায় সুপারিকে গুয়া বলা হয়ে থাকে। এর হিসাব নিকাশটাও একটু ভিন্ন। ১১টি সুপারি একত্রে এক ঘা এবং ৪০ ঘা’ তে এক “ভি”। স্থানভেদে এর এর ভিন্নতাও আছে। সুরমা-কুশিয়ারা বেষ্টিত সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জের যেদিকে তাকাবেন চোখে পড়বে সারি সারি সুপারি গাছ। জকিগঞ্জের এমন কোন বাড়ী নেই যেখানে সুপারী গাছ নেই। জকিগঞ্জে ঢুকে যেদিকে তাকাবেন চোখে পড়বে সারি সারি সুপারির গাছ। বাড়ির আঙ্গিনা, ক্ষেতের আইল, রাস্তার ধার, পুকুর পাড় সর্বত্রই দৃষ্টিনন্দন সুপারির গাছ। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার সবকটিতেই সুপারী ফলে ভালো।

সুলতানপুর ও বারঠাকুরী ইউনিয়নের চাপঘাট পরগনার নাম করণটিও সুপারিকে নিয়ে। মুখের চাপায় (গালে) সুপারি ভরে লোকজন অনবরত চিবাত বলে এ এলাকার নাম হয় চাপঘাট। এছাড়া অত্যাধিক সুপারী উৎপন্ন হয় বলে সুলতানপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম রাখা হয়েছে “গুয়াবাড়ী”। আর সুপারী গাছে প্রচুর পিল্লা (বাবুই) পাখি বাসা করতো বলে বারঠাকুরী ইউনিয়নের একটি গ্রামের নামকরণ হয়েছে “পিল্লাকান্দি। অমৌসুমে দাম বেশী পাওয়া যায় বলে ব্যক্তি উদ্যোগেও সুপারী সংরক্ষণ করা হয়।

জকিগঞ্জের কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, উচ্চ ফলনশীল জাত নির্বাচন, সঠিক পরিচর্যা আর উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করা হলে জকিগঞ্জে সুপারী ভবিষ্যৎ আরো উজ্জ্বল হবে। এ খাত থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

সুপারী চাষ করে জকিগঞ্জের অনেক মানুষ স্বাবলম্বী হয়েছেন। তবে সঠিক দিক নির্দেশনা, উৎসাহ আর পরিচর্যার অভাবে এ খাত থেকে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। বছরে কোটি কোটি টাকার সুপারী উৎপাদিত হলেও অনেক সময় প্রকৃত সুপারি মালিকরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। কৃষি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতা আর সরকারী সহযোগীতা পেলে জকিগঞ্জে সুপারী উৎপাদনে নব দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে স্থানীয় কৃষকরা মনে করেন।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার