ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
১৫৬

যে অপরাধে বাবা ও ছেলেকে ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করা হয়েছিল 

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২২  

বিশ্বের অন্যতম একটি সেরা চিত্রকর্ম। চিত্রকর্মটি এঁকেছিলেন জাপানি চিত্রশিল্পী ‘টোয়োকুনি ইচিওসাই’। চিত্রটিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষকে ফুটন্ত গরম পানির হাঁড়িতে সিদ্ধ করা হচ্ছে, অন্যদিকে তিনি একহাতে তার ছেলেকে শূন্যে ধরে রেখেছেন। নিজে মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়েও সন্তানকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। 

১৬ শতকের দিকে জাপানে এটি হয়ে উঠেছিল আদর্শ বাবার প্রতিচ্ছবি। জাপানে এখনো এই ছবিটিকে আদর্শ পিতার প্রতীক মনে করা হয়। তবে এটি কোনো সাধারণ ছবি ছিল না। কিংবা শিল্পীর কল্পনাও নয়। বাস্তবেই ঘটেছিল এমন ঘটনা। সাজাপ্রাপ্ত একব্যক্তিকে নিয়ে এই ঘটনাটি। ঐ ব্যক্তির নাম ছিল ইশিকাওয়া গোয়েমন। তিনি ছিলেন পেশায় একজন ডাকাত। জাপানের ইতিহাসে তাকে 'রবিনহুড' হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি ধনীদের অতিরিক্ত সম্পদ লুট করে গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দিতেন।

১৬ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জাপানের ইগা প্রদেশের শক্তিশালী মিয়োশি বংশের একটি সামুরাই পরিবারে জন্ম হয় ইশিকাওয়ার। তখন জাপান ছিল ‘আশিকাগা শোগুনাতের’ শাসনাধীন। ইশিকাওয়ার বয়স যখন ১৫ বছর তখন তার বাবা ইশিকাওয়া আকাশিকে আশিকাগা শোগুনেটের লোকেরা হত্যা করে। বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইশিকাওয়া গোয়েমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। আর তাই তিনি ইগা নিনজুতসুর প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য মোমোচি নামের এক মাস্টারের দারস্থ হন। নিনজুতসুর হচ্ছে মার্শাল আর্টের মতো এক ধরনের প্রতিরক্ষা বিদ্যা।

নিনজুতসু প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় ইশিকাওয়া তার মাস্টারের স্ত্রীর সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। মাস্টার মোমোচি সান্দায়ু যখন এই ব্যাপারে জানতে পারেন তখন ইশিকাওয়া সেখান থেকে পালিয়ে যান। তবে খালি হাতে পালিয়ে যাননি! সঙ্গে করে নিয়ে যান তার মাস্টারের সবচেয়ে মূল্যবান তলোয়ারটি। ইশিকাওয়া পালিয়ে কিয়োটা শহরে চলে যান। আর সেখানেই তিনি তার চুরির পেশাগত জীবন শুরু করেন। আস্তে আস্তে তিনি একটি নিজস্ব চোরের দল তৈরি করেন। যে চোরেদের জন্য পুরো শহরের মানুষ সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকতেন।

ইশিকাওয়া তার দল নিয়ে দিনের বেলা শিকার খুঁজতো আর রাতের বেলা ডাকাতি করতো। তারা ডাকাতি করতো ধনী লোকদের বাড়িতে, আর দিনের বেলা শিকার খুঁজতো ব্যবসায়ীর রূপ ধরে। শহরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা না পড়তে তারা চুরির টাকা ও জিনিসপত্র লুকিয়ে গরিবদের বাড়ির সামনে রেখে যেত। ইশিকাওয়া গোয়েমন ও তার দলের কর্মকাণ্ডের জন্য তারা জাপানে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। দরিদ্র শ্রেণির মানুষরা তাদের দেখতো বীর হিসেবে। বলা যায় গরিবের রবিনহুডে পরিণত হয় ইশিকাওয়া ও তার দল।

বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে জাপানের সেনগোকু আমলের যুদ্ধবাজ সম্রাট টয়োটমি হিদেয়োশিয়াকে হত্যা করতে গিয়ে ব্যর্থ হন তিনি। শুধু ব্যর্থই হননি, তিনি সম্রাটের পেয়াদাদের হাতে ধরা পরে যান। সম্রাটকে হামলার চেষ্টা করায় ততক্ষনাৎ তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ ছিল একদম আলাদা ও ভয়ানক। তাকে ফুটন্ত তরলে সিদ্ধ করে মৃত্যু আদেশ দেওয়া হয়। তবে সম্রাট তার উপর এতোই ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন যে, শুধু ইশিকাওয়াকেই মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ক্ষান্ত হননি। তিনি ইশিকাওয়ার সঙ্গে তার নবজাতক ছেলেকেও সিদ্ধ করে হত্যার আদেশ দেন। 

মৃত্যুর জন্য বাবা ও ছেলে দুইজনকে বড় কড়াইয়ের তরলে বসানো হয়। এরপর কড়াইয়ের তলায় আগুন দিয়ে তাপ দেওয়া শুরু করে। ছেলেকে বাঁচাতে ইশিকাওয়া গোয়েমন হাত দিয়ে উপরে তুলে রাখেন যেন গরম তরল তার ছেলের শরীর স্পর্শ করতে না পারে। দীর্ঘক্ষণ সহ্য করার পর আর ছেলেকে তুলে ধরে রাখতে পারেননি ইশিকাওয়া গোয়েমন। বাবা ও ছেলে দুইজনেরই মৃত্যু হয় সেখানে। এটি ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম শাস্তি। 

ইংল্যান্ডে রাজা অষ্টম হেনরির সময়, বিষ প্রয়োগে মৃত্যুকে সেই সময়ে মানুষ খুবই ভয় পেতেন এবং এটিকে অপরাধের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হত। যারা এই জঘন্য অপরাধ করত তাদের শাস্তি ছিল জীবন্ত সিদ্ধ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া। রাজা অষ্টম হেনরির সময়ে রিচার্ড রুজ নামে এক রান্নার বাবুর্চি বেশ কিছু লোককে বিষযুক্ত খাবার দিয়েছিলেন, যার ফলে কিছু লোক মারা যায়। রুজকে জীবন্ত সিদ্ধ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। 

রিচার্ড রুজ করে ফুটন্ত পানিতে নিক্ষেপ করা হয়। সে বারবার সেই বড় কড়াই থেকে নেমে যেতে চাচ্ছিলো, আবার তাকে সেখানে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছিলো। এভাবে চলতে থাকে, যতক্ষণ না তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়। ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক জায়গায় এই প্রথা চালু ছিল। ফুটন্ত তেল, পানি, আলকাতরা এমনকি ওয়াইনয়ে সিদ্ধ করা হতো আসামিদের। পৃথিবীতে আরো অনেক নিষ্ঠুরতম শাস্তি আছে। যেগুলোর বেশিরভাগই ছিল ইউরোপে। তবে শুধু বিষপ্রয়োগ করে হত্যা চেষ্টার জন্যই এই শাস্তি ছিল না। 

মধ্যযুগে কেউ জাল দলিল, প্রতারণা বা মুদ্রা জাল করে ধরা পড়লে ফাঁসি দিয়ে মৃত্যু দেওয়ার পরিবর্তে সিদ্ধ করে মৃত্যু কার্যকর দেওয়া হতো। শেষ দশকেও পৃথিবী দেখেছে এমন জঘন্য ও নিষ্ঠুরতম শাস্তির ব্যবস্থা। ২০০৪ সালে মার্কিন গোয়েন্দারা উজবেকিস্তানে দুইজন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের শত্রু বলে ফুটন্ত তেলে ফেলে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছিলেন। একজন প্রাক্তন আইসিস কমান্ডার আবু আবৌদ আল রাক্কাভি, আইসিসের নৃশংস মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যেএকটি ছিল ইঞ্জিনের তেলে জীবিত বন্দিদের ফুটানো হতো। যতক্ষণ না তারা মারা যেত।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার