ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
২৩৬৯

সেই শিল্পই শ্রেষ্ঠ যা সঙ্কটের কথা বলে: ভাস্কর রাসা

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮  

কারভিংয়ের মাস্টার ভাস্কর রাসা। মূলত শিল্পকলার মানুষ হলেও তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। শিল্পকলা, গান, কবিতা, অভিনয়, মডেল, রাজপথে সামাজিক আন্দোলনের আওয়াজ, সবখানেই ঝাঁকড়া চুলের অধিকারী আত্মপ্রত্যয়ী ভরাট কণ্ঠের ভাস্কর রাসা হেঁটে চলেছেন অবিরাম।

১৯৭৫ সালে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি হন এবং প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান লাভ করেন। চিত্রকলা, মুর‌্যাল, টেরাকোটা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে কাজ করলেও রাসা আদিম রীতিতে ভাস্কর্যের প্রতিই মূলত দুর্বল।

১৯৮৩ সালে এশিয়ান চারুকলা প্রদর্শনীতে সেরা শিল্পী হিসেবে স্বর্ণপদক লাভ করেন। ভাস্কর রাসা, ৭১ এর গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্যের স্থপতি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে এই ভাস্কর্যটি স্থাপিত। শিল্পচর্চার বাইরে তিনি ভাষা শহীদ সালামকে নিয়ে নির্মাণ করেন প্রামাণ্য চিত্র ‘অস্তিত্বের শেকড়ে আলো’।

আন্তরিক আলাপচারিতায় রাসা জানালেন, এভাবেই তিনি তার সৃজনশীলতার নির্যাস ছড়িয়ে দিতে চান।

ভাস্কর রাসার ভাস্কর প্রীতি কবে থেকে?

ছোটকাল থেকেই। একেবারে বাচ্চাকাল থেকে ভাস্কর্যের প্রতি আমার অনুরাগ। স্কুলে মাটি নিয়ে যেতাম, পকেটে মাটি দেখে মাস্টার মাটিও খাইয়ে দিয়েছে আমাকে। তখন থেকেই ভাস্কর্যের প্রতি আমি দুর্বল। ভাস্কর্য আমার কাছে মনে হয়েছে এটা আসলে থ্রি  ডাইমেনশন অর্থাৎ ত্রিমাত্রিকতা। মানুষও ত্রিমাত্রিক ভাস্কর্যও ত্রিমাত্রিক। একারণে ভাস্কর্য আমাকে বেশি টেনেছে চিত্রকলার তুলনায়, যদিও আমি ছবি আঁকি তবে ভাস্কর্য  আমার প্রিয় বিষয়। তাকে নিয়েই আমার জীবন সংগ্রাম।

একাডেমিক পড়াশোনা তো চারুকলায় নিশ্চয়ই?   

না, আমি বুলবুল একাডেমি থেকে ডিপ্লোমা ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছি ফাইন আর্টস থেকে, সেটা অনেক আগে। তা আমার কাছে ধর্তব্য বিষয় নয়। আমি অনুশীলন করি এটাই আমার কাছে বড়। আমি প্রতিনিয়ত আঁকতে চাই, ভাস্কর্য করতে চাই। আর আমি শুধু ভাস্কর্য নিয়ে ব্যস্ত থাকি না। কবিতা লিখি, গল্প লিখি, অভিনয় করি, মডেল হই, রাস্তায় আন্দোলন সংগ্রাম করি। আমাকে অনেক আন্দোলন সংগ্রামে দেখে থাকবেন। সামগ্রিক বিষয়ই আমার কাছে মনে হয় জীবনের প্রয়োজনীয় একটা অংশ। যার জন্য আমি ঐ জায়গাটাকে স্পর্শ করি। সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান, দর্শন এ সবগুলো জায়গায়ই যেন একটা যোগাযোগ গড়ে ওঠে। শিল্পীরা, কবিরা, গল্পকাররা, গায়করা  সবাই যেন একত্রে গুচ্ছ পুষ্পের ন্যায় ফুটে উঠে। এখন তো একাকী হয়ে গেছে সবাই। এখন আবার একত্রিত করার একটা  প্রবণতা থেকে এই চেষ্টা। এক সময় ছিল সবাই একত্রিত ছিল, আলোচনা হতো কিন্তু এখন আলোচনার জায়গাটা সংক্ষিপ্ত হওয়ার কারণে এখন এই জায়গাগুলো ধরা হচ্ছে। যাতে একজনের সাথে আরেকজন চিন্তার বিনিময় করতে পারে সেজন্য।

আপনার উল্লেখযোগ্য আলোচিত ভাস্কর্য কোনটা?

উল্লেখযোগ্য মানে হলো আমি ১৯৮৩ সালে গোল্ড মেডেল পেয়েছি যেটায়। আমাকে কারভিংয়ের মাস্টার বলা হতো। ভাস্কর্য দুইটা। একটা পেস্টিং আরেকটা কারভিং। একটা হলো গাছ কেটে পাথর কেটে কেটে করা, আরেকটা হচ্ছে সিমেন্ট, মাটি লাগিয়ে লাগিয়ে করা। আমি কেটে কেটে করার লোক।  কেটে কেটে ভাস্কর্য করা ওটা হচ্ছে প্রাচীন ভাস্কর্যের আদিম রীতি, ওটাই আমি অবলম্বন করে আছি। দেশে-বিদেশে আমাকে সবাই কারভিংয়ের বিশেষজ্ঞ বলেই মনে করে। আমার আলোচিত কাজের মধ্যে এশিয়ানের কাজ, এরপর জাতীয় জাদুঘরের স্বাধীনতার অংশ, এশিয়ানের জীবন এক জীবন। আমি গণমানুষের জীবনকে শিল্পের উপজীব্য করতে চাই। যার জন্য আমার শিল্পকলায় সংগ্রামী মানুষের বিষয়গুলো বারবার আসে। নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের সংগ্রাম, যেমন ৫২’র ভাষা আন্দোলনের উপর আমার একটা পেইন্টিং আছে, যেটা বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে আছে। ওটাতে আমি জিন্নাহকে দেখিয়েছি যে, তিনি বাংলার গলা টিপে ধরছেন। এসব জায়গাগুলো আমি বারবার স্পর্শ করতে চাই। তবে প্রেমের জায়গাটা আমি বলি, এর চেয়ে বড় শক্তিশালী হলো গণমানুষের সংগ্রামকে টাচ করা। কারণ আমাদের দেশ নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের দেশ। এখানে এক সময় ব্যাপক মানুষ সামন্তবাদ দ্বারা আক্রান্ত ছিল, আজকে পুঁজিবাদ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। মানুষকে তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে যে ভূমিকা এটা নিয়ে আমি কাজ করতে চাই।

ভাস্কর রাসার কবি হিসেবেও পরিচিতি বেশ। কবিতা লেখা শুরু করলেন কবে থেকে?   

এটা যখন ভাস্কর্য করি, তখন থেকেই আমি শিল্পের সাথে ভিন্ন আরেক শিল্পকে সম্পৃক্ত করা। যেমন একসময় আমরা গণসঙ্গীত গাইতাম, আবার নাটকের দল ছিল সেখানেও কাজ করতাম, এখন কবিতা লিখি। কবিতা আগে থেকেই পড়তাম। কবিতা পড়াটা আমার অভ্যাস। যেমন আমি এক পৃষ্ঠা না পড়ে ঘুমাতে পারি না, বের হতে পারি না। অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। 

এতসব সৃষ্টিশীল কাজের উপযোগী সময় কোনটা?

আমি রাতে পড়তে চাই এবং রাতে পড়লে আমার আমিকে কাছে পাই। পড়া, গান শোনা, ছবি আঁকাটা আমার ভাল লাগে। আমি নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করি প্রায় ৩৫ বছর ধরে। আমি মনে করি শিল্পীকে সুস্বাস্থ্যবান হওয়া উচিত। প্রত্যেকটা মানুষেরই সুস্বাস্থ্য অনিবার্য। আমি আজকেও এক ঘণ্টা ব্যায়াম করে এসেছি।

লেখার ক্ষেত্রে কোন বিষয়টাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন? 

সমাজ সঙ্কটটাই বেশি প্রাধান্য পায়। সেই শিল্পই শ্রেষ্ঠ শিল্প যেটা সঙ্কটের কথা বলে এবং সমাধানের ইঙ্গিত বহন করে। এটা আমার কাছে বারবার মনে হয়েছে। এ কারণেই আমি সংকটগুলোকে দেখতে চাই। আমাদের শ্রেণিগত সংকট, সামাজিক সংকট, মানসিক সংকট এই জায়গাগুলো, আমরা কথা বলি না বিধায় আমরা ক্রমশই মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছি। আমাদের সন্তানেরা আরও কথা বলতে পারে না। অথচ কথা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। এই কথা যদি কথা না হয়, তাহলে কিছুই হলো না। অনুভূতিকে সজাগ রাখতে হবে।

অভিনয় করছেন, মডেল হচ্ছেন, কবিতা লিখছেন আরও অনেক কাজে আপনি সম্পৃক্ত। আপনার শিল্পকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে না? 

না না আমি কাজ করে যাচ্ছি তো। এইবার এশিয়ানে আমার বিশাল একটা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ছিল, এখনো আছে শিল্পকলায়। ওটা ৭ মার্চের ভাষণের উপর। আরেকটা কাজ ছিল ‘এখন আমি নরকে’।

কবিতা কি একবারে লিখে থাকেন নাকি সময় নিয়ে ধীরে ধীরে?

একটা লেখা অনেকদিন আমার মাথায় ঘুরতে থাকে। ঘুরতে ঘুরতে তখন আমি আর ছাড় দেই না। লিখে ফেলি। তখন নিজের কাছে কলম না থাকলেও কারো থেকে কলম চেয়ে নিয়ে লিখে ফেলি।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার