ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৮২

কোটিপতিদের বস্তি মোনাকো!

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১  

পৃথিবীর দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র মোনাকো। দেশটি অত্যন্ত ছোট হলেও, এটি বিশ্বের বহু নামকরা বড়লোকদের আস্তানা। এই দেশের প্রায় সবাই কোটিপতি এবং এখানকার নাগরিকদের প্রতি তিনজনে একজন মিলিয়নিয়ার। অল্প একটু জায়গার মধ্যে হাজার হাজার কোটিপতির বসতির কারণে, একে কোটিপতির বস্তিও বলা যায়।

ইউরোপের দেশ মোনাকোর তিন দিক থেকে ফ্রান্স দ্বারা আবদ্ধ এবং এর অন্যদিকে রয়েছে ভূমধ্যসাগর। মোনাকোর আয়তন মাত্র দুই দশমিক শূন্য দুই বর্গ কিলোমিটার। এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র। পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট দেশ ভ্যাটিকান সিটির পরেই মোনাকোর অবস্থান। দেশটি এতটাই ছোট যে, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও মোনাকোর চেয়ে আট গুণ বড়। 

মোনাকোর রাজধানীর নাম মোনাকো ভিলি

মোনাকোর রাজধানীর নাম মোনাকো ভিলি

ক্ষুদে এই দেশের আবার রাজধানীও আছে। মোনাকোর রাজধানীর নাম মোনাকো ভিলি। এই দেশে মোট চারটি পাড়া আছে। মোনাকো ভিলি সেগুলোর একটি। ছোট এই রাজধানীতে প্রায় এক হাজারের মতো লোক বাস করে। তবে সমগ্র মোনাকো পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩৮ হাজার ৯৬৪ জন। যাদের অধিকাংশই কোটিপতি। এদের গড় আয়ু প্রায় ৮৯ বছরের বেশি।

মোনাকোর জনগণের মাথাপিছু আয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। মিলিয়নিয়ারের ঘনত্বের বিচারে মোনাকো রয়েছে শীর্ষে। মোনাকোর নাগরিকদের প্রতি তিনজনে একজন মিলিয়নিয়ার। বলাই বাহুল্য যে, এদেশের দারিদ্রতার হার শূন্য। এখানে মাত্র দুই বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১২ হাজার ২৬১ জন মিলিয়নিয়ার বসবাস করে। এদেরকে ইউএস ডলারের হিসেবে মিলিয়নিয়ার বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশি টাকায় একজন মিলিয়নিয়ারের কমপক্ষে সাড়ে আট কোটি টাকা আছে। এছাড়া কোনো দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে সবচেয়ে বেশি বিলিয়নিয়ারও আছে মোনাকোতে। 

মোনাকোর জনগণের মাথাপিছু আয় প্রায় দেড় কোটি টাকা

মোনাকোর জনগণের মাথাপিছু আয় প্রায় দেড় কোটি টাকা

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বড়লোকদের এখানে আসার অন্যতম কারণ হলো মোনাকোয় কোনো ইনকাম ট্যাক্স নেই। এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এখানে কোনো কর্পোরেশন ট্যাক্স দিতে হয় না। এসব কারণে মোনাকো বিশ্বের অন্যতম ট্যাক্স হেভেনে পরিণত হয়েছে। ট্যাক্স হেভেন হলো যেসব দেশে পৃথিবীর শীর্ষ ধনী ব্যক্তিরা কোনো ধরনের আয়কর না দিয়ে তাদের সম্পদ লুকাতে পারে। 

সেজন্যই পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে অসংখ্য কোটিপতি এখানে এসে বস্তির মতো গাদাগাদি করে থাকে। মোনাকোতে ১২৫ দেশের মানুষ বসবাস করে। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের ট্যাক্স হেভেনের তুলনায় মোনাকোর বিশেষত্ব হল এখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা যায়।

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এখানে কোনো কর্পোরেশন ট্যাক্স দিতে হয় না

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এখানে কোনো কর্পোরেশন ট্যাক্স দিতে হয় না

কোটিপতিদের দেশ হওয়ার কারণে স্বভাবতই সব জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। এখানকার বাসা বাড়ির দাম নিউইয়র্ক এবং হংকং এর চেয়েও অনেক বেশি। মাত্র এক বেডরুমের একটি ছোট্ট ফ্ল্যাটের দাম কমপক্ষে ১২ কোটি টাকা এবং দুই তিন বেডরুমের স্বাভাবিক অ্যাপার্টমেন্টের দাম ২০ কোটি থেকে দেড়শ কোটি টাকার মধ্যে। তবে মোনাকোর বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে চাইলে খরচ করতে হবে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা। আর এই দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। ২০১৭ সাল থেকে মোনাকোর রিয়েল এস্টেটের দাম বেড়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। 

মোনাকোর ক্যাসিনোগুলো জুয়ার আসরের জন্য বিখ্যাত। সারা পৃথিবীর কোটিপতিরা এখানকার ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে আসলেও মোনাকোর নাগরিকদের জন্য ক্যাসিনোতে প্রবেশ করা আইনত নিষিদ্ধ। অর্থাৎ শুধু পর্যটক ও বিদেশি নাগরিকরাই এখানে জুয়া খেলতে পারবে।

মোনাকোর সবচেয়ে বিখ্যাত ক্যাসিনো হলো মন্টে কার্লো

মোনাকোর সবচেয়ে বিখ্যাত ক্যাসিনো হলো মন্টে কার্লো

মোনাকোর সবচেয়ে বিখ্যাত ক্যাসিনো হলো মন্টে কার্লো। এটিই জুয়াড়িদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। জেমস বন্ড থেকে শুরু করে বহু হলিউড চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে এখানে। মন্টে কার্লো ক্যাসিনোর জন্য এই পাড়ার নামই হয়ে গেছে মন্টে কার্লো। যা মোনাকোর চারটি প্রধান এলাকার মধ্যে একটি।

মোনাকোর জাতীয় পতাকা অনেকটাই ইন্দোনেশিয়ার পতাকার মতো। তবে মোনাকোর পতাকা একটু ছোট। আর লাল রঙের মাত্রায় সামান্য পার্থক্য আছে। দীর্ঘ ৭০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি রাজপরিবার মোনাকো শাসন করে আসছে। এরা হাউস অফ গ্রিমাল্ডি নামে পরিচিত। 

মোনাকোর বর্তমান শাসকের নাম রাজপুত্র দ্বিতীয় আলবার্ট

মোনাকোর বর্তমান শাসকের নাম রাজপুত্র দ্বিতীয় আলবার্ট

মোনাকোর বর্তমান শাসকের নাম রাজপুত্র দ্বিতীয় আলবার্ট। দেশ হিসেবে ছোট হলেও পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী রাজপরিবারগুলোর মধ্যে এরা অন্যতম। মোনাকোর ক্যাসিনোসহ প্রায় অধিকাংশ বিনোদন প্রতিষ্ঠান হাউস অফ গ্রিমাল্ডির মালিকানায় পরিচালিত হয়। 

মোনাকোর দাপ্তরিক ভাষা ফরাসি। তবে ইংরেজি এবং ইতালিন ভাষাও অত্যন্ত জনপ্রিয়। মোনাকোর নাগরিকদের চার ভাগের তিন ভাগই বাইরের দেশে জন্মগ্রহণ করেছে। এখানকার নাগরিকত্ব পেতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে একটানা ১০ বছর মোনাকোতে অবস্থান করতে হবে। দেশটি দ্বৈত নাগরিকত্ব সমর্থন করে না। 

মোনাকোর হারকিউলিস বন্দরে ইয়টস বা বিলাসবহুল প্রমোদতরীর সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী হয়

মোনাকোর হারকিউলিস বন্দরে ইয়টস বা বিলাসবহুল প্রমোদতরীর সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী হয়

মোনাকোর পাসপোর্ট পেতে চাইলে কোনো ব্যক্তির অবশ্যই তার নিজ দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হয়। মোনাকোয় বসবাস করার অনুমতি পাওয়ার জন্য অনেক টাকা খরচ করতে হবে। সেজন্য স্থানীয় বেসরকারি ব্যাংকে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা জমা রাখা এবং কমপক্ষে এক বছরের জন্য কোনো বাসস্থান ভাড়া করা সহ আরো বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়।

মোনাকোর হারকিউলিস বন্দরে ইয়টস বা বিলাসবহুল প্রমোদতরীর সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী হয়। চার দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে প্রায় ১২৫টি ইয়ট অংশগ্রহণ করে। সারা পৃথিবীর ধনীদের প্রমোদতরী কেনাবেচার এটি এক তীর্থস্থান। 

মোনাকো গ্র্যান্ড প্রিক্স নামের এই প্রতিযোগিতা ফর্মুলা ওয়ান মোটর রেসিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর

মোনাকো গ্র্যান্ড প্রিক্স নামের এই প্রতিযোগিতা ফর্মুলা ওয়ান মোটর রেসিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর

এছাড়া পৃথিবীর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ মোটরগাড়ির প্রতিযোগিতা হয় মোনাকোর রাস্তায়। মোনাকো গ্র্যান্ড প্রিক্স নামের এই প্রতিযোগিতা ফর্মুলা ওয়ান মোটর রেসিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর। এমনকি ফর্মুলা ওয়ান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপেরও আগে থেকে মোনাকোয় এই গাড়ির রেসিং প্রচলিত ছিল। 

মোনাকোর ঘরবাড়ির মতো রাস্তাগুলো অনেক দামি। এইসব রাস্তার প্রতি বর্গফুটের মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকারও বেশি। সেকারণে একে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি রাস্তার স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছে। এই দামি রাস্তায় কোনো সস্তা গাড়ি চলে না। এখানকার প্রায় সব গাড়ি বিলাসবহুল। 

মোনাকো অন্যতম নিরাপদ এক দেশ। দেশটির প্রতিটি কোণায় ২৪ ঘন্টা কঠোর নজরদারি করা হয়। এখানকার পুলিশ বাহিনীর সদস্য ৫১৫ জন। শুনতে কম মনে হলেও মাথাপিছু পুলিশের বিচারে এটি সবচেয়ে বড় পুলিশ বাহিনী। এখানকার প্রতি ১০০ জন নাগরিকের জন্য একজন পুলিশ আছে।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার