করোনায় ৫২ লাখ ৭০ হাজার মৃত্যু দেখল বিশ্ব

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন চার হাজারের বেশি মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সোয়া চার লাখের নিচে নেমে এসেছে।

সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটল ব্রিটেনে। এ দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। আর প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন, তুরস্ক এবং ভিয়েতনামের নাম। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ কোটি ৬১ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫২ লাখ ৭০ হাজারে পৌঁছে গেছে।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন চার হাজার সাতজন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা দেড় হাজার কমেছে। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৫২ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন চার লাখ ২২ হাজার ২০০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখের বেশি হ্রাস পেল। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৬ কোটি ৬১ লাখ ১২ হাজার ১২০ জনে পৌঁছেছে।

এ দিকে গত এক দিনে বিশ্বে করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা দেখেছে যুক্তরাজ্য। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৯৯২ জন। আর মারা গেছেন ৫৪ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত এক কোটি চার লাখ ৬৪ হাজার ৩৮৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬০৫ জনের।

অন্য দিকে দৈনিক প্রাণ হারানোদের তালিকায় এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়ার নাম। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ২০৬ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৩২ হাজার ৬০২ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৯৮ লাখ এক হাজার ৬১৩ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৮১ হাজার ২৭৮ জনের।

গেল এক দিনে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের নতুন সংক্রমণ ও প্রাণহানি অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৬৫ জন। আর মারা গেছেন ১৫৫ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত চার কোটি ৯৯ লাখ ৬৯ হাজার ৮৫৬ জন শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন আট লাখ আট হাজার ৭৬৩ জন।

এছাড়া ইউরোপের দেশ জার্মানিতে নতুন করে মহামারি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৯৮৩ জন। আর মারা গেছেন ৭৪ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৬১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক লাখ তিন হাজার ৬০৪ জন।

এছাড়া শেষ ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪২ হাজার ২৫২ জন। আর মারা গেছেন ২৯ জন। একই সময়ে ইউক্রেনে নতুন করে মহামারি করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৬২২ জন। এর মধ্যে প্রাণ গেছে ২৭৮ জনের।

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও প্রাণ হারানোদের সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন চার হাজার ৮৪৪ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৯১ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ১৫ হাজার ৬৭৪ জনের।

এ দিকে কোভিড আক্রান্তদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে শনাক্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে তিন কোটি ৪৬ লাখ ৪১ হাজার ৪০৬ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে মারা গেছেন চার লাখ ৭৩ হাজার ৩২৬ জন।

এছাড়া করোনায় সংক্রমিত হয়ে শেষ এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ৭৬ জন, ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ১৮৫ জন, পোল্যান্ডে ৪৫ জন, ফিলিপাইনে ১৫৬ জন এবং ভিয়েতনামে ১৯৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অন্য দিকে নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫১ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে দুই লাখ ৯৫ হাজার ১৫৪ জনের।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।