ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৮২

আইনের বেড়াজালে বন্দি স্বেচ্ছায় অঙ্গদান

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২৩  

উন্নত বিশ্বে কিডনি ও অন্যান্য বিকল অঙ্গের মানুষ মরণোত্তর অঙ্গদান ও ইমোশনাল ডোনার তথা স্বেচ্ছায় শুভাকাঙ্ক্ষী অঙ্গদান প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা নিয়ে নতুন জীবন পাচ্ছেন।

বাংলাদেশে এই প্রক্রিয়া অনুমোদন না থাকায় রোগীরা বিপাকে পড়ছেন। শুধু কিডনি সংযোজনে দাতা সংকটে বছরে মারা যাচ্ছে ৪০ হাজার কিডনি রোগী। একইভাবে হাজার হাজার মানুষ লিভার, হার্ট, ফুসফুস, অগ্ন্যাশয় ইত্যাদি রোগে মারা যাচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা যুগান্তরকে বলছেন, অবৈধ কিডনি ব্যবসা রোধ এবং স্বেচ্ছা শুভাকাঙ্ক্ষী দাতার ক্ষেত্রে ভারসাম্য নিশ্চিতে আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে। তবে আইন পাশ না হওয়ায় ইমোশনাল ডোনার অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রক্রিয়া অধরাই থেকে যাচ্ছে। এসব রোগীকে বাঁচিয়ে রাখতে মরণোত্তর অঙ্গ সংযোজন কার্যক্রমের পাশাপাশি স্বেচ্ছায় শুভাকাঙ্কী অঙ্গদান চালু করা জরুরি।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ২০১৮ সালের মানবদেহ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে মৃত ব্যক্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অন্যের শরীরে সংযোজনের (ক্যাডাভারিক অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্ট) সুযোগ রাখা হয়েছে। আইনে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বলতে কিডনি, হার্ট, ফুসফুস, অন্ত্র, লিভার, অগ্ন্যাশয়, অস্থি, অস্থিমজ্জা, চোখ, চর্ম, টিস্যুসহ মানবদেহে সংযোজনযোগ্য যে কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে বোঝানো হয়েছে।

বুধবার এই প্রক্রিয়ায় প্রথম দুজনের কিডনি ও দুজনের কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। যেটি আশা জাগালেও অঙ্গপ্রতঙ্গ বিকল মানুষের ক্ষেত্রে শুভাকাঙ্ক্ষী অঙ্গদান আইন না থাকায় রোগীরা অন্ধকারেই রয়ে যাচ্ছেন।

২০১৮ সালের আইন অনুযায়ী জীবন রক্ষায় নিকটাত্মীয়ের কিডনি নেওয়া যাবে। নিকটাত্মীয় হচ্ছেন-মা-বাবা, ছেলেমেয়ে, ভাইবোন, স্বামী-স্ত্রী ও আপন চাচা-ফুফু, মামা-খালা, নানা-নানি, দাদা-দাদি, নাতি-নাতনি এবং আপন চাচাতো-ফুফাতো, মামাতো-খালাতো ভাই বা বোন। এই তালিকাভুক্ত ২২ জনের বাইরে অন্য কারও শরীর থেকে কিডনি নিয়ে অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করার আইনি সুযোগ নেই।

তবে এ সংক্রান্ত এক রিটের ফলে আদালত ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর একটি রায় দেন। ওই রায়ে আদালত বলেছিলেন, আত্মীয় না হয়েও কেউ আবেগের বশবর্তী হয়ে কাউকে কিডনি দান করতে চাইলে তা যেন তিনি করতে পারেন। তার জন্য আইন সংশোধন করতে হবে।

আদালতের রায়ে কিডনি কেনাবেচা বন্ধে প্রত্যয়ন বোর্ড গঠন করার কথা বলা হয়েছিল। আদালত বলেছিলেন, প্রত্যয়ন বোর্ডের কাজ হবে কিডনি দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে অর্থ লেনদেন হচ্ছে কিনা, তা মূল্যায়ন করা। দাতা ও গ্রহীতার মধ্যকার সম্পর্কের ব্যাখ্যা করা। কোন পরিস্থিতিতে একজন কিডনি দিতে ইচ্ছা পোষণ করেছেন তা বলা। তাদের সম্পর্কের দালিলিক প্রমাণ পরীক্ষা করা।

দাতা ও গ্রহীতার পুরোনো ছবি পরীক্ষা করা। কিডনি দানের মধ্যে কোনো মধ্যস্থতাকারী নেই, এটা নিশ্চিত করা। দাতা ও গ্রহীতার আর্থিক অবস্থা মূল্যায়ন করা। কিডনি দাতা মাদকাসক্ত নন, এটা নিশ্চিত করা।

এমন প্রেক্ষাপটে অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওই রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে কোনো আবেদন করেনি। রায় বাস্তবায়নও করেনি। সংসদে আইন না হওয়ায় শুভাকাঙ্ক্ষী অঙ্গদান শুরু হয়নি।

এদিকে বুধবার দেশে ক্যাডাভারিক পদ্ধতিতে প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ও ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনে। অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউর রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল।

শনিবার তিনি বলেন, দেশে মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ১৯৯৯ প্রণয়নের পর ২০১৮ সালে সংশোধন করা হয়। সেই আলোকে ক্যাডাভারিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়েছে। তবে নিকটাত্মীয় ছাড়া ইমোশনাল ডোনারের কাছ থেকে অঙ্গ নেওয়ার আইন এখনো পাশ হয়নি। এজন্য কয়েক বছর আগে একজন নারী আইনজীবী রিট করেছিলেন। আদালত ভারতের মানব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন বিধি-২০১৪ অনুসারে ইমোশনাল ডোনারের ক্ষেত্রে ভারসাম্য নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। যা সংসদে তোলার কথা। সেখান থেকে পাশ হলে বাস্তবায়নে কোনো জটিলতা থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, অঙ্গদাতা সংকটে প্রতিবছর অনেক রোগী বিদেশে চিকিৎসা নিতে যান। এক্ষেত্রে অনেকে দালালের খপ্পরে পড়েন। ২০১৮ সালে আইন সংশোধনের পর কিডনি প্রতিস্থাপন বাড়ছে। দেশের আটটি হাসপাতালে সপ্তাহে গড়ে চার থেকে পাঁচটি কিডনি প্রতিস্থাপন হচ্ছে। এখন আইন করে স্বেচ্ছায় অঙ্গদান কার্যক্রম চালু করলে বিকল অঙ্গপ্রতিস্থাপন সংখ্যা বাড়বে। এজন্য সঠিক ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বাড়াতে হবে। সেটি বিবেচনায় নিয়ে আইন হওয়া উচিত।

কৃত্রিম উপায়ে বাঁচিয়ে রাখা ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষিত ব্যক্তির অঙ্গপ্রতঙ্গ প্রতিস্থাপন বিষয়ে জাতীয় কমিটির সভাপতি বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারুফুদ্দিন আহমেদ।

তিনি যুগান্তরকে বলেন, ১৯৯৯ সালে মানবদেহে অঙ্গপ্রতিস্থাপন সংক্রান্ত আইন জাতীয় সংসদে পাশ হয়। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রেন ডেথ কমিটি ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেলের সহযোগিতায় ক্যাডাভেরিক রোগীর দেহ থেকে অঙ্গদানের প্রক্রিয়া সফল করার চেষ্টা করছিলাম।

এর আগে, আমরা এ ধরনের দু-একটি রোগীর অপারেশন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, কাউকেই অঙ্গদানে রাজি করাতে পারিনি। আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার সফল হয়েছি। এখন স্বেচ্ছায় অঙ্গদান কার্যক্রম আইন হলে সব ধরনের অঙ্গ প্রতিস্থাপন বাড়বে।

ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশিদ বলেন, গত তিন বছর ধরে ডিসিস্টি (দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে নিউরোলজিক্যাল ডেথ বা কোমায় চলে যাওয়া) রোগীর অঙ্গ নিয়ে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের চেষ্টা করছিলাম। ব্রেন ডেথ ব্যক্তির অঙ্গ নিয়ে অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করাই ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট। এভাবে ৮টি সলিড অর্গান ছাড়াও অন্যান্য অঙ্গ নেওয়া যায়। বিএসএমএমইউ এবং আমরা প্রথম ক্যাডাভারিক কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেছি। রোগীরা সুস্থ আছেন।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, ইসলাম ধর্ম কিংবা বিদ্যমান আইনে মরণোত্তর অঙ্গদানে কোনো বাধা নেই। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম সংস্থা ওআইসি এবং বিশিষ্ট ইসলামিক ওলামারাও মরণোত্তর কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গদানকে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন। এখন আইনি জটিলতা দূর করে স্বেচ্ছায় শুভাকাঙ্ক্ষী অঙ্গদান চালু করতে পারলে মানুষ উপকৃত হবে। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার