স্বপ্নের পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গর্বের প্রতীক

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু। যা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সরাসরি সংযোগ ঘটাবে। আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাওয়া দেশের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্প খুলে দেবে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।

নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নপূরণের এই পথটি সহজ ছিল না। ১৯৯৮ সালে প্রথম সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সমীক্ষা যাচাইয়ের পর ২০০১ সালে এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। তবে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের ফলে বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য দাতাগোষ্ঠী সরে দাঁড়ায় এই প্রকল্প থেকে। 

পরবর্তীতে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয়। ষড়যন্ত্রকারীদের অপমানের প্রতিশোধ নিয়ে অবশেষে নিজস্ব অর্থায়নে গর্বের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। 

নভেম্বর ২০১৪ থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয় অক্টোবর ২০১৭ থেকে। চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি দ্বারা নির্মিত এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার। পানির স্তর থেকে সেতুর উচ্চতা ৬০ ফুট। 

৪২টি পিলার ও ৪১টি স্প্যানের উপর দাঁড়ানো এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এতে মোট জনবল প্রায় ৪ হাজার জন। সেতুটি কংক্রিট এবং স্টিলের মিশ্রণে নির্মিত। চীনের সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন নদী শাসনের কাজ করে। দ্বিতল এই সেতুর উপর দিয়ে চলবে যানবাহন এবং নিচ দিয়ে যাবে ট্রেন।

পদ্মা সেতু রাজধানীর সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সরাসরি সংযোগ ঘটাবে। বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঘটবে ব্যাপক অগ্রগতি। এতে দেশের অর্থনীতি গতিশীল হবে। এই সেতু ঘিরে ঘটবে নতুন নতুন কর্ম সংস্থান। এতে বাড়বে প্রবৃদ্ধি। সরাসরি উপকৃত হবে ২৯ শতাংশ জনগোষ্ঠী। 

বিশ্বের বিস্ময়ে রূপ নেয়া এই পদ্মা সেতু, সোনার বাংলার অহংকার। আগামী ২৫ জুন খুলে যাবে এই নতুন দিগন্তের দ্বার।