জুনের মধ্যে দেশব্যাপী ই-মিউটেশন চালু: ভূমিমন্ত্রী

চলতি বছরের জুনের মধ্যে দেশব্যাপী ই-মিউটেশন কার্যক্রম পুরোদমে চালু হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
তিনি জানান, ভূমি সেবাগ্রহীতাদের সুবিধার্থে অভিযোগকেন্দ্র গঠনের জন্য হটলাইন এবং সরকারের সঙ্গে ভূমি সম্পর্কিত বিভিন্ন লেনদেনের জন্য ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করতে একটি পেমেন্ট গেটওয়ে স্থাপন করার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এগুলো মূলত পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ইন্টিগ্রেটেড অটোমেশনের আওতায় নেয়ার পর্যায়ক্রমিক ধাপ।

রোববার দুপুরে সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে খুলনা বিভাগের ৭টি জেলায় (খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, সাতক্ষীরা, নড়াইল এবং বাগেরহাট) অনুষ্ঠিতব্য চার দিন ব্যাপী ই-মিউটেশন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব কথা বলেন ভূমিমন্ত্রী। 
 
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়ার পর ৯০ দিনের প্রাথমিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রথম দেড় বছর ‘স্বল্প মেয়াদি’, পরবর্তী দেড় বছর ‘মধ্যম  মেয়াদি’ এবং শেষ দুই বছরকে ‘দীর্ঘ মেয়াদি’ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পুরো পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনার ‘ডেডলাইন’ সাজানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই সম্যক ধারণা বেশ কম। যদিও সবার জীবন ও পরিবারের সঙ্গে বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভূমি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে স্কাউট সদস্য এবং স্থানীয় তরুণদের সম্পৃক্ত করে দেশব্যাপী শিগগিরই ভূমি সপ্তাহ এবং ভূমি উন্নয়ন মেলা পালন করা হবে বলেও জানান তিনি।

এটুআই ও ভূমি সংস্কার বোর্ডের সহায়তায় ই-নামজারি কোর্স পরিচালিত করা হচ্ছে। এ কোর্সে সহকারী কমিশনার (ভূমি), কানুনগো, সার্ভেয়ার, নামজারি সহকারীসহ মাঠ পর্যায়ে ভূমি সেবা প্রদানরত সরকারি কর্মচারিদের এ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ‘ই-নামজারি’ অ্যাপ্লিকেশনটি মূলত ‘জমি’ নামক জাতীয় ভূমি-তথ্য ও সেবা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের (www.land.gov.bd) একটি অংশ।

ভিডিও কনফারেন্সে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জেলাগুলোর বিভিন্ন সমস্যার কথাও জানতে চান। তিনি বলেন, সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমাদের সবার উচিত, দায়িত্ব নিয়ে যার যার সর্বোচ্চ ঢেলে দেয়া। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে মনোযোগ দিয়ে কাজ করলে সমস্যা আর থাকবে না বলেও মন্তব্য তার। 
 
এসি ল্যান্ডদের দাফতরিক কাজের সুবিধার্থে গাড়ি প্রদান করা হয়েছে উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, নতুন জনবল নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত পাশের উপজেলায় ভাগাভাগি করে দায়িত্ব পালন করাটা আগের চেয়ে অনেক সহজ হবার কথা। বিভিন্ন পর্যায়ের জনবলের অভাব পূরণে চলমান পদক্ষেপ গুলোর কথাও তিনি জানান। 

মন্ত্রী আরো বলেন, আমি টিমে (দল) বিশ্বাসী। সবাই মিলে ভালোভাবে কাজ করলে অবশ্যই ভূমি সেক্টরের বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান করা সম্ভব। কাজের স্বার্থে তাঁর দরজা সবার জন্য খোলা।

বিভিন্ন জায়গায় এলাকাভিত্তিক বিশেষ সমস্যাও থাকতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে আমি আইডিয়া (ধারণা) নিতে ইচ্ছুক। জনস্বার্থে যেকোনো কার্যকরী আইডিয়া গুরুত্বের সঙ্গে গৃহীত করে কার্যকর করা হবে। মুজিববর্ষ শুরু হবার আগেই ভূমি মন্ত্রণালয়কে একটি পর্যায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

ভিডিও কনফারেন্সে ভূমি সচিব মো: মাকছুদুর রহমান পাটোয়ারীও বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ।
 
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। এছাড়া ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাঠ পর্যায় থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষক, সংশ্লিষ্ট কালেক্টরেটের কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীরাও অংশ নেন।