ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
২১৪৫

হাকালুকি হাওর এর মুগ্ধতা

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

এশিয়ার বৃহৎ হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের একটি অন্যতম বৃহৎ মিঠা পানির জলাভূমি। পশ্চিমে ভাটেরা পাহাড় ও পূর্বে পাথারিয়া মাধব পাহাড় পবষ্টিত হাকালুকি হাওর সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার ৫ টি উপজেলায় বিস্তৃত। ছোট বড় প্রায় ২৩৮টির ও বেশী বিল ও ছোট বড় ১০টি নদী নিয়ে গঠিত হাকালুকি হাওর বর্ষাকালে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর এলাকায় পরিণত হয়।

বর্ষাকালে বিস্তৃত জলরাশি এ হাওরের রূপ ঠিক যেন ভাসমান সাগর। আদিগন্তু বিস্তৃত জলরাশি। জলের মাঝে মাঝে দুই-একটি বর্ষীয়ান হিজল, তমাল বৃক্ষ। অথচ শীতকালে বিস্তৃত এই হাওর ধু-ধু সবুজপ্রান্তর, কোথাও বা ধান ক্ষেত এবং খানাখন্দ নিচু ভূমিতে প্রায় ২৩৮টি বিলের সমষ্টি। হাকালুকি হাওর মাছের জন্য প্রসিদ্ধ। হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের সংরক্ষিত জলাভূমি। শীত মৌসুমে এশিয়ার উত্তরাংশের সাইবেরিয়া থেকে প্রায় ২৫ প্রজাতির হাঁস এবং জলচর নানা পাখি পরিযায়ী হয়ে আসে। এছাড়া স্থানীয় প্রায় ১০০ প্রজাতির পাখি সারাবছর এখানে দেখা মেলে। ধু-ধু প্রান্তরের এই চারণভূমি ও বিলগুলো মানুষের জীবন-জীবিকা এবং পরিযায়ী পাখির কলকাকলি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটককে দুর্বার আকর্ষণে রোমাঞ্চের হাতছানি দেয়। হাকালুকি হাওরে পরিযায়ী হাঁসের মধ্যে চখাচখী, রাজসরালী, গরাদমাথা রাজহাঁস, ধলাবেলে হাঁস, গাডওয়াল, ইউরেসীয় সিথীহাঁস, টিকিহাঁস, পাতিহাঁস ম্যার্গেঞ্জার প্রভৃতির দেখা মেলে। দেশি প্রজাতির মধ্যে বেগুনি কালেম, পানমুরসী, পাতিকুট, ডাহুক, ইউরেশীয় মুরগি চ্যাগা, ল্যাঞ্জা চ্যাগা, রাঙ্গাচ্যাগা, জলাপিপি, ময়ূরলেজা পিপি, পাতি জিরিয়া,  হাট্টিটি, ভূবনচিল, শঙ্খচিল, বিলুপ্ত প্রায় কুড়াল ঈগল, বড়খোঁপা ডুবুরি, ছোট পানকৌড়ি, খয়রা বক, ধূসর বক, শামুক খোল প্রভৃতি পাখি অন্যতম। হাকালুকি হাওরে অনেক প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। চিতল, আইড়, বাউশ, পাবদা, মাগুর, শিং, কৈ প্রভৃতি মাছ এখানে রয়েছে। জলজ উদ্ভিদের মধ্যে বিলুপ্ত প্রায় মাকনা হাওর অঞ্চলের পুটি, হিঙ্গাজুর, হাওয়া প্রভৃতি বিলে যথেষ্ট পরিমাণে বিদ্যমান। এছাড়া শাপলা, শালুক, পদ্ম প্রভৃতি জলজ উদ্ভিদ ও আশাব্যঞ্জকহারে এখানে রয়েছে।
হাকালুকি হাওর ভ্রমণের সেরা সময়

নভেম্বর থেকে ফেব্র“য়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় হাওর ভ্রমণের জন্য সেরা। এসময় এখানে প্রচুর সংখ্যায় অতিথি পাখির কলকাকলিতে চারদিক মুখর থাকে। জলজ উদ্ভিদ, মাছপ্রেমীদের জন্য এটা সেরা মৌসুম।


কোথায় থাকবেন

হাওর এলাকায় বিল ইজারাদারদের দোচালা কুটিরগুলোয় দু‘চারজন পর্যটক থাকার জন্য চমৎকার। তবে অবশ্যই বিলমালিকের অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। সবচেয়ে ভালো হয় বিল এলাকায় তাঁবু ফেলে রাত্রি যাপন। জোছনা রাতে তাঁবুতে যাপন, পাখি পর্যবেক্ষণ যে কোনও অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটককে বিমোহিত করবে।


কোথায় খাবেন

সঙ্গে আনা চাল-জলের রেশন হাওর এলাকার শ্রমজীবী মানুষকে সামান্য কিছু টাকা দিলে পছন্দ মতো টাটকা মাছের ঝোলের তরকারি দিয়ে তা পরিবেশন করবে অথবা ওদের সঙ্গেও সুস্বাদু খাবার শেয়ার করা যাবে অনায়াসে। এখানকার বাথানে গরু-মহিষের দুধও খুব সস্তায় পাওয়া যায়। চাইলে বাজার করে নৌকায় উঠতে পারেন, মাঝিকে দিবেন, ওরা রান্না করে দিবে। নৌকায় উঠার সময় সঙ্গে চা, নাশতা, বিস্কুট, পাউরুটি, বিশুদ্ধ পানি, কোমল পানীয় ইত্যাদি নিয়ে উঠতে হবে।


কিভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকার কমলাপুর ও ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন ৩টা ট্রেন ছাড়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে। ট্রেনের ভাড়া প্রকার ভেদে ১২০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। আর সময় লাগবে ৭-৮ ঘণ্টা। ট্রেনে গেলে রাত সাড়ে ৯টার উপবন এক্সপ্রেসে যাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। ঢাকা থেকে কুলাউড়া ট্রেনভ্রমণে খরচ শ্রেণীভেদে ১৩০ থেকে ৪৫০ টাকা।

এছাড়া বাসেও যাওয়া যাবে। বাসে যেতে চাইলে অনেক বাস আছে। এর মধ্যে শ্যামলী, রূপসী বাংলা, হানিফ, সোহাগ, এনা,ইউনিক, উল্যেখযোগ্য। এছাড়াও আরো বিভিন্ন নামের একাধিক বাস রয়েছে, যেগুলো অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ায় যাত্রী সেবা করে থাকে। ভোর থেকে শুরু করে রাত ১টা পর্যন্ত এসব বাস পাবেন। বাসে যেতে সময় লাগবে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা। ননএসি ৩০০/৩৫০ টাকা। এসি ৯০০ টাকা পর্যন্ত। এসি বাস নেপচুন (ফোন ৭১০১৯৫১, ৯১২৩০৯২), শ্যামলী পরিবহণ (ফোন ৭১০১৭২৫) ভাড়া যথাক্রমে ৩৫০ টাকা এবং ৩০০ টাকা।  কুলাউড়া থেকে অটোরিক্সায় সরাসরি হাওরে চলে যেতে পারেন। কুলাউড়া শহর থেকে অটোরিকশা ভাড়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা এবং রিকশা ভাড়া ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে।

অথবা কুলাউড়া নেমে অটোরিক্সা নিয়ে অথবা বাসে চলে যেতে পারেন বড়লেখা। বড়লেখা গেলে আরো পাবেন মাধবকুন্ড জলপ্রপাত। অটোরিক্সার ভাড়া হবে জনপ্রতি ৫০ টাকা। বড়লেখা পৌঁছার পর শহর থেকে ১১ কি.মি দূরে হাকালকি হাওর (Hakaluki Haor) এলাকা। যেখানে রয়েছে পর্যটন কেন্দ্র। রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। এই স্থান থেকে নৌকা ভাড়া নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন পুরো হাওর। আবার যদি সরাসরি ট্রেনে যেতে চান তবে কুলাউড়া স্টেশন অথবা ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও স্টেশন থেকে অটোরিক্সা করে হাকালুকি যেতে পারেন।


হাকালুকি হাওর যাবার অন্য উপায়

রাত ৯.৫০ এ সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া উপবন এক্সপ্রেস ওঠে যাওয়া। নামতে হবে মাইজগাও ষ্টেশন এ। এটি সিলেটের ঠিক আগের ষ্টেশনটি। মাইজগাও নামার পর গাছ পালা ঘেরা একটা রাস্তা ধরে প্রায় ১ কি:মি: হাটলেই পৌছে যাবেন ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার। সকালবেলা হাটতে ভালোই লাগবে। আবার একটু অপেক্ষা করলে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা পাবেন। তাতে করে ১০ মিনিটে ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার। বাজারে নেমেই আল মুমিন রেষ্টুরেন্ট এ বসে যাবেন। এর ২ এবং ৩ তলায় সুন্দর দুটি টয়লেট রয়েছে। হাতমুখ ধুয়ে নাস্তা করে সামনের নৌকাঘাটে চলে আসুন। এখান থেকে নৌকা দরদাম করে উঠে পড়ুন সারাদিনের জন্য। বড় গ্রুপ হলে (১০/১৫ জন) বড় ছই ওয়ালা ট্রলার দিন। দিনপ্রতি ভাড়া নিতে পারে ৩-৪ হাজার টাকা (অবশ্যই দামাদামি করবেন)। কিছু খাবার এবং পানি কিনে নিন কারন হাওড় ও কোন দোকানপাঠ পাবেন না। এবার নৌকায় উঠে কুশিয়ারা নদী পাড়ি দিয়ে হাওড়ে ঘুরে বেড়ান। কুশিয়ারা পারি দেত প্রায় ৪০ মিনিট লাগবে।


সঙ্গে যা নিতে হবে

শীতের সময় তাবু করার জন্যে তাবু, ভালো বড় ব্যাকপ্যাক, রেইন কোট, শীতের সময়ে গেলে জ্যাকেট, গামছা, কাদা-পানিতে চলন উপযোগী রাবারের নাগরা জুতা, পাখি পর্যবেক্ষণের জন্য বাইনোকুলার, ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যাটারি, মেমরিকার্ড, শুকনো খাবার, চা, চিনি দুই-একদিনের জন্য রেশন, প্রাথমিক ওষুধ-চিকিৎসা সরঞ্জাম ইত্যাদি।


আশেপাশের আকর্ষণ

মাধবকুন্ড প্রাকৃতিক ঝর্ণা, গগণটিলা ও পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চল, হাইল হাওর, চা ও রাবার বাগান এবং শ্রমিকদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান এবং রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, খাসিয়া ও মনিপুরী সংস্কৃতি ও জীবনধারা পানপুঞ্জি, টিলা ও প্রাকৃতিক দৃশ্য, প্রাকৃতিক বন ও বন্যপ্রাণী।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার